Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স আসছে বেশি, সন্দেহজনক বলছে সিপিডি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ মে ২০২৩ ১৫:৩৬

ঢাকা: গত বছরের চেয়ে এ বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ বেড়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহের এই ধারাকে সন্দেহের চোখে দেখছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। বিষয়টিকে ‘অস্বাভাবিক’ বলে ব্যাখ্যা করে পাচারের অর্থ রেমিট্যান্স হয়ে দেশে ফিরছে কি না, এ প্রশ্ন তুলেছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৭ মে) ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘স্টট অফ দ্য বাংলাদেশ ইকনোমি’ শীর্ষক সভায় রেমিট্যান্স প্রবাহের চিত্র তুলে ধরে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। সেখানেই সন্দেহের বিষয়টি উঠে আসে।

বিজ্ঞাপন

এতদিন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এলেও বর্তমানে সে জায়গা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দখলে। ২০২১-২২ অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) সৌদি থেকে ৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এলেও চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে এসেছে ৩ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-এপ্রিল) আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার চলতি বছরের একই সময়ে তা বেড়ে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর রেমিট্যান্স দশমিক ১৮ শতাংশ বেড়েছে। হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধিকে সন্দেহের চোখে দেখছে সিপিডি।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এটি একেবারেই আনইউজাল, কখনোই হয় না। কারণ, আমরা জানি আমাদের বেশিরভাগ রেমিট্যান্স কোথা থেকে আসে। গত ১০ মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ৯ দশমিক ২২ লাখ মানুষ গেছে। সেখান থেকে প্রত্যাশামতো রেমিট্যান্স আসছে না। লোক যাওয়া ও রেমিট্যান্সের মধ্যে মিসম্যাচ হচ্ছে। এতদিন সৌদি আরব থেকে বেশি রেমিট্যান্স এলেও যুক্তরাষ্ট্র এখন সে জায়গা দখল করেছে।’

বিজ্ঞাপন

ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে যারা যায় তাদের বেশিভাগই হোয়াইট কালার জব করে। অনেকেই ঘরবাড়ি ও জমিজমা বিক্রি করে দেশ থেকে টাকা নিয়ে চলে যায়। অনেক শিক্ষার্থীও সেদেশে আছে। তারা তো আর টাকা পাঠাতে পারে না। তাহলে বিপুল এ রেমিট্যান্স আসছে কোথা থেকে!’

তিনি বলেন, ‘এর একটা সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হতে পারে এমন- যেখান থেকে টাকাটা পাচার হয়েছে সেটি আবার রেমিট্যান্স হয়ে দেশে ফেরত আসছে। রেমিট্যান্সের ওপর যে আড়াই শতাংশ ইনসেন্টিভ বা সাবসিডি দেওয়া হচ্ছে সেটির সুযোগ নেওয়া হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে আরও গভীরে গিয়ে বিষয়টির অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষ ব্যবহার করে এমন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক সাময়িকভাবে কমানো হলে তারা স্বস্তি পাবে। সেক্ষেত্রে বাজার মনিটরিং প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম নিম্নমুখী হলেও দেশের বাজারে এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। দরিদ্রদের প্রত্যক্ষ সহায়তার আওতা বাড়ানো দরকার। সঠিক ব্যক্তিরা পাচ্ছে কিনা সেটাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, ‘রফতানি বৃদ্ধির হার ইতিবাচক নয়, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হচ্ছে। মে ও জুনে রফতানি ৪১ শতাংশ বাড়াতে হবে, যা খুবই কষ্ট সাধ্য।’

সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স আসা কমেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাড়ছে। এ বিষয়ে খুব ভালোভাবে গবেষণা ও অনুসন্ধান হওয়া দরকার। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে এর কারণ অনুসন্ধান করতে অনুরোধ করব।’

সারাবাংলা/জেজে/ইএইচটি/একে

রেমিট্যান্স সিপিডি সৌাদি আরব

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর