Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আয় বেড়েছে লিটনের তিনগুণ, স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন স্বপন

মাহী ইলাহি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৭ মে ২০২৩ ১৭:০৭

রাজশাহী: রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হলফনামা প্রকাশ করেছে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস। তফসিল অনুযায়ী রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন আগামী ২১ জুন। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১ জুন। বৃহস্পতিবার ( ২৫ মে) প্রার্থী যাচাই বাছাই শেষে হয়েছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের চার মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন অফিস। এছাড়াও ১১৭জন সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ৪৬ জনের মনোনয়নও বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার (২৭ মে) মেয়র প্রার্থীদের হলফনামাও প্রকাশ করেছে রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস।

বৈধ চার মেয়রপ্রার্থী হলেন— বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী মহানগর আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম স্বপন, জাকের পার্টির ছাত্রফন্টের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফ আনোয়ার ও ইসলামী আন্দোলনের রাজশাহী মহানগর সহ-সভাপতি মুরশিদ আলম।

রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস থেকে পাওয়া তথ্যমতে, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থীরা নিজেদের হলফনামায় ব্যক্তিগত যাবতীয় তথ্য সন্নিবেশিত করার পাশাপাশি তাদের বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের হিসাবও জমা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। অনুষ্ঠেয় রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের আয় বেড়েছে তিনগুণের বেশি। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে লিটনের বাৎসরিক আয় ছিল ৭৮ লাখ ৩২ হাজার ২০৮ টাকা। এবার তা বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে তিনি কৃষিখাত থেকে আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে ৩৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা, মৎসচাষ থেকে বছরে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা, শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংকে আমানত আছে ৪০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। তিনি মেয়র হিসেবে বাৎসরিক সম্মানী পেতেন ১৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। স্ত্রীর ব্যবসায় বাৎসরিক আয় ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ও মৎস্য চাষ থেকে ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

২০১৮ সালে নির্বাচনী হলফনামায় এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের আয় ছিল ৭৮ লাখ ৩২ হাজার ২০৮ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে এক লাখ ৬০ হাজার, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে পাঁচ লাখ ৫২ হাজার ৫০০, ব্যবসা থেকে ৩২ লাখ, শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংকে আমানত ২০ লাখ ১০ হাজার এবং অন্যান্য খাত থেকে বছরে তার আয় হয় ১৯ লাখ ৯ হাজার ৭০৮ টাকা।

খায়রুজ্জামান লিটনের অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে নগদ ৭ লাখ ২ হাজার ২৩৭ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২ কোটি ৮৪ লাখ ৯১ হাজার ৮০০ টাকা জমা, ৪৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি ও উপহার হিসেবে পাওয়া ১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার। তার ব্যাংক ঋণ আছে ২০ লাখ ৭৯ হাজার ৩৭ টাকা।

আওয়ামী লীগের এ নেতার স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৪ দশমিক ৬৩ একর কৃষি জমি, তিনতলা বাড়ি এবং ঢাকার বনানীতে ৫ কাঠার বিনিময়ে আড়াইটা অ্যাপার্টমেন্ট। হলফনামা অনুযায়ী, বিএ অনার্স (এলএলবি) করেছেন খায়রুজ্জামান লিটন। পেশায় তিনি আইনজীবী ও রাজশাহী বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। মেয়র প্রার্থী লিটনের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ পাস। তার পেশা আইন ব্যবসা।

হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৬ সালে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় লিটনের বিরুদ্ধে একই দিন দুটি মামলা হয়। রাজশাহীর সিএমএম আদালত মামলাটি আমলে নেয়। ওই বছরের ১৬ জানুয়ারি ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩২৩, ৩২৬, ৩০৯, ৩৪ ধারায় একটি এবং অন্যটি ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৪৪৮, ৪২৭, ৩২৩, ৩২৬, ৩০৭, ৩৭৯ ও ৩৪ ধারায় দায়ের করা হয়। পরবর্তী সময়ে লিটনের বিরুদ্ধে করা এই দুটি মামলা প্রত্যাহার করে নেয় রাষ্ট্র।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী মহানগরের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম স্বপনের হলফনামার তথ্য দেখা গেছে, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তার ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় করেন তিনি ৩ লাখ টাকা। কিন্তু কিসের ব্যবসা করেন তা উল্লেখ করেননি তিনি। ব্যাংকে নগদ টাকা ৩ লাখ টাকা আছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৫০ হাজার। এছাড়াও ১০ ভরি সোনা রয়েছে। কৃষি জমি ৪ দশমিক ৫০ বিঘা ও অকৃষি জমি ১২ শতক আছে।

জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার পেশায় আইনজীবি। হলফনামায় তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখিয়েছেন হয়েছে এলএলএম। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তার নগদ টাকার পরিমাণ ১ লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থ আছে ২ হাজার টাকা।

আরেক প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের মুরশিদ আলমের স্থায়ী ঠিকানা দেওয়া আছে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারি উপজেলার চন্দনপাট গ্রামে। তিনি বর্তমানে রাজশাহী মহানগরীর দাশপুকুর এলাকার বাসিন্দা। হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা কামিল (মাস্টার্স সমমান)। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তার বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তবে তিনি কোন পেশা থেকে টাকা আয় করেন তা দেখাননি। সম্পদের বিবরণে বলা হয়েছে, তার ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে ও একটি মোটরসাইকেল আছে।

তবে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী মনোনীত প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বাদে বাকি প্রার্থীরা এবার মেয়র পদে নতুন। আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১ জুন। ২ জুন থেকে প্রার্থীরা প্রচারণায় নামবে।

সারাবাংলা/এনএস

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন টপ নিউজ রসিক নির্বাচন রাজশাহী সিটি করপোরেশন সাইফুল ইসলাম স্বপন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে হামলার হুমকি!
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫

সম্পর্কিত খবর