শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করতে চান মেধাবী দীপ্ত
২৭ মে ২০২৩ ১৯:৫২
ঢাকা: ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বাণিজ্য বিভাগের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে শনিবার (২৭ মে)। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা দিয়েছেন এক শিক্ষার্থী। তার নাম দীপ্ত বিশ্বাস। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এই মেধাবী শিক্ষার্থী জয় করেছেন সব প্রতিবন্ধকতাকে। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শেষে করে কাজ করতে চান দেশের জন্য।
শনিবার (২৭ মে) সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে বিশেষ ব্যাবস্থায় শ্রুতি লেখকের সাহায্যে পরীক্ষা দেন দীপ্ত বিশ্বাস। ভর্তি পরীক্ষা শেষে কথা বলেন দীপ্ত বিশ্বাস ও তার মা দীপিকা সরকার।
মা দীপিকা সরকার জানান, দীপ্তর বয়স যখন চার বছর তখন তার ব্রেটিলাতে স্পট ধরা পরে। তখন থেকেই সে দূরের লেখাকে স্পষ্ট দেখতে পারে না। ব্ল্যাকবোর্ডের লেখা দেখতেও সমস্যায় হয় তার। তখন থেকেই চিকিৎসা করালেও কোনো লাভ হয়নি। বরং দিনে দিনে দৃষ্টি শক্তি কমেছে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে তিনি জানান, এটি দীপ্ত বিশ্বাসের জিনগত সমস্যা। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন কোনো প্রকার চিকিৎসায় লাভ হবে না।
দীপ্ত বিশ্বাসের বাড়ি পুরান ঢাকার নারিন্দায়। সে কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। বাণিজ্য বিভাগের সি ইউনিটের পরীক্ষায় শ্রুতি লেখকের সাহায্যে পরীক্ষা দিয়েছে দীপ্ত। শ্রুতি লেখকের নাম মো. সাব্বির ইসলাম।
ছোটবেলা থেকেই শ্রুতি লেখকের সাহায্য নিয়ে সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এসেছেন বলে জানান দীপ্ত বিশ্বাস। ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশের সেবায় কাজ করতে চান তিনি।
দীপ্ত বিশ্বাস বলেন, ‘পরীক্ষা অনেক ভালো হয়েছে। শর্ট সিলেবাসের বাইরে থেকেও কিছু প্রশ্ন এসেছে। শ্রুতিলেখক থাকায় পরীক্ষা দিতে কোনো সমস্যা হয়নি। আশাকরি ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবো। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে দেশের উন্নতির জন্য কাজ করতে চাই।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের উপ-প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মিতা শবনম বলেন, ‘আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ ব্যস্থায় দীপ্ত বিশ্বাসের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের অসুবিধা না হওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল।’
সারাবাংলা/একে