আফতাবনগরে পশুর হাটে ইজারা কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ বাড়ল
২৮ মে ২০২৩ ১৫:১০
ফাইল ছবি
ঢাকা: রাজধানীর আফতাবনগর কোরবানির পশুর হাট না বসানোর বিষয়ে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়া আদেশের মেয়াদ আরও দুই মাস বাড়িয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার (২৮ মে) এ সংক্রান্ত রিটের রুল শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সেলিম আজাদ।
এর আগে, গত ১৫ মে আসন্ন ঈদুল আজহায় রাজধানীর আফতাবনগরে পশুর হাট বসানোর জন্য ইজারা কার্যক্রম এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন আদালত।
রুলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আফতাব নগরে কোরবানির পশুর হাট বসানোর জন্য ইজারা/বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা, তা জানতে চাওয়া হয়।
চার সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান ভূমি কর্মকর্তা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন হাউজিং ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এর আগে, গত ১৮ মে জনস্বার্থে স্থানীয় বাসিন্দা শেখ মাহমুদ উজ্জ্বলের পক্ষে রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ।
রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান ভূমি কর্মকর্তা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন হাউজিং ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে বিবাদী করা হয়।
এর আগে গত ২ মে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (স্থানীয় সরকার বিভাগ) পক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহে আলমের সই করা সম্পত্তি বিভাগ ইজারা/বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র ঘোষণা করে।
দরপত্রে ঈদুল আজহার দিনসহ পাঁচ দিন গরুর হাটের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে প্রথম পর্যায়ে দরপত্র বিক্রি ১৫ মে, আর ১৬ মে সাড়ে ১২টা থেকে বেলা আড়াইটা পযর্ন্ত। এভাবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পযার্য়ে দরপত্র বিক্রির পর ১৯ জুন পযর্ন্ত দরপত্রের বাক্স ও খাম খোলার পর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সর্বোচ্চ দর দাতাকে শিডিউল দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এরপর উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবর আফতাব নগরের আবাসিক এলাকায় কোরবানি ঈদে গরু-ছাগলের হাট না বসাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে শেখ মাহমুদ উজ্জ্বল আবেদন করেন।
সেই আবেদনে বলা হয়, জহিরুল ইসলাম সিটিতে (আফতাব নগর) বসবাসরত লোকজন ঈদুল আজহার আগে ও পরে প্রায় এক মাস অস্থায়ী হাট বসানোর কারণে ব্যাপকভাবে মানবেতর জীবনযাপন করেন। ওই এলাকায় চলাচলের প্রধান এই সড়কের ওপর অস্থায়ী গরু-ছাগলের হাট বসে বলে (আফতাব নগর) সেখানকার বাসিন্দাদের যাতায়াতে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ সময় কোনো লোক অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কেউ মারা গেলেও তার মরদেহ বহন করা দুরূহ হয়ে পড়ে।
এ ছাড়াও গরু-ছাগলের হাট বসানোর কারণে আবাসিক এলাকাটির বসবাসের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। গরু-ছাগলের নানাবিধ বর্জ্যে এলাকাটির পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষিত হয়।
এ ছাড়া প্রধান সড়কটিও জহিরুল ইসলাম সিটি (আফতাব নগর) ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে সারা বছরেই প্রধান সড়কটিতে খানাখন্দক থাকায় জহিরুল ইসলাম সিটির (আফতাব নগর) বসবাসরত সব নাগরিকদের যাতায়াতে ব্যাপক অসুবিধা পোহাতে হয়।
পরে গত ১১ মে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার সচিব, উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র, রাজউকের চেয়ারম্যানসহ ছয় জনকে আইনি নোটিশ পাঠানো।
নোটিশের পর কোনো সাড়া না পেয়ে গত ১৮ মে ঈদুল আজহায় আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে
