Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘তারেকের মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে ঐক্যফ্রন্ট নিষ্ক্রিয় হয়’


২৮ মে ২০২৩ ১৯:০৮

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ওই সময় সংবিধান রচয়িতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে সেই উত্তাপ নিরসনের উদ্যোগ নেন। তার উদ্যোগের ফলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারি দল আওয়ামী লীগের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপের পর সবদলের অংশগ্রহণে একাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করে।

বিজ্ঞাপন

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানের জন্য ড. কামাল এবারও রাজনৈতিক সমঝোতার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন। এই সমঝোতার জন্য তিনি একটি প্রস্তাবও তৈরি করেছেন। তবে সেই প্রস্তাবটি কবে নাগাদ জনসম্মুখে আসবে সেই দিনক্ষণ এখনও ঠিক করা হয়নি। এ সব বিষয় নিয়ে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন সারাবাংলার স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট আজমল হক হেলাল। সেই  কথোপকথনের কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা: আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন একটি রাজনৈতিক সমঝোতার প্রস্তাব দেবেন বলে কথা উঠেছে। কবে নাগাদ এই সমঝোতা প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হবে?

ডা. মিজানুর রহমান: রাজনৈতিক সমঝোতার প্রস্তাবটি তৈরি করা হয়েছে। কীভাবে একটি অবাদ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা যায় তা সেখানে তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি, শিগগিরই আমরা একটি জাতীয় কনভেনশন করে বা সংবাদ সম্মেলন ডেকে দেশ ও জাতির কাছে তুলে ধরব।

সারাবাংলা: এই সমঝোতা প্রস্তাবের বিষয়ে কি আওয়ামী লীগ ও রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আপনাদের আলোচনা হয়েছে?

ডা. মিজানুর রহমান: আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মুখপাত্রদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। তবে অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সময় হলে বড় দুই দলের মুখপাত্রদের সঙ্গেও আলোচনায় বসব।

সারাবাংলা: এর আগেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে রাজনৈতিক সংকট সমাধানে বিএনপিসহ সব দলকে নিয়ে নির্বাচনে যান ড. কামাল হোসেন। কিন্তু সেই নির্বাচন অবাদ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে অভিযোগ সমমনা রাজনৈতিক দলসহ বিরোধীদের। সেজন্য ড. কামালকে কোনো দলের শীর্ষ নেতা বিশ্বাস করছেন না- রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন কথাও উঠেছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

ডা. মিজানুর রহমান: প্রথমত সরকারি দল আওয়ামী লীগ কথা রাখেনি। তারা দিনের ভোট রাতে কেটে নিয়েছে। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে মনোনয়নের ক্ষেত্রে কথা ছিল, ফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা বসে মনোনয়ন দেবেন। কিন্তু তা হয়নি। বিএনপির হাই কমান্ড অর্থাৎ তারেক রহমান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের ক্ষমতা হাইজ্যাক করে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছিলেন। সে কারণেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিষ্ক্রিয় হয়। এ কথাতো বিএনপির তৃণমুল নেতা-কর্মীদের সকলের জানা। ওই সময় প্রত্যেকটি আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। এখানে ড. কামাল হোসেনের দোষ কোথায়? তাকে অবিশ্বাস করার কি আছে? ড. কামাল হোসেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর কোনো সরকারের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা নেয়নি। বরং তাকে জাতীয় সংসদে ও সংসদের বাইরে কটাক্ষ করে কথা বলা হয়েছে, হচ্ছে।

সারাবাংলা: আপনারা কি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন?

ড. মিজানুর রহমান: গণফোরাম নির্বাচনমুখী দল। আমরা নির্বাচেনর জন্য প্রস্তুতির পাশাপাশি সুষ্ঠু, অবাদ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে অটল রয়েছি। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আন্দোলন-সংগ্রামেও প্রস্তুত।

সারাবাংলা: সারাদেশে আপনাদের সাংগঠনিক অবস্থাতো শক্তিশালী নয়। এই অবস্থাতেই কি মাঠে নামবেন?

ডা. মিজানুর রহমান: ৫০টি জেলায় গণফোরামের কমিটি রয়েছে। তারা তৎপর। ইতোমধ্যে আমরা প্রত্যেক জেলায় নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন দিতে প্রার্থিতা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছি। এ জন্য ফরম পাঠানো হয়েছে। গণফোরাম নেতারা সাংগঠনিক সফরে রয়েছেন। আমি নিজে বরিশাল সফর করে ঢাকায় ফিরেছি। নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। অবাদ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি না হলে গণফোরাম নির্বাচনে যাবে না। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে তখন নির্বাচনি জোটে যাবে গণফোরাম। তবে কোন জোটে যাবে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। ওই দিন গণফোরাম সভাপতি ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনকে আহ্বায়ক করে নতুন এই জোটের ঘোষণা আসে। সেইসঙ্গে ৭ দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্যও তুলে ধরা হয়।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

গণফোরাম জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ডা. মিজানুর রহমান তারেক মনোনয়ন বাণিজ্য সাধারণ সম্পাদক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর