দারুল ইহসানের সনদধারী শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করতে হাইকোর্টের রুল
২৮ মে ২০২৩ ২০:৪০
ঢাকা: বেসরকারি দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদধারী শিক্ষক/কর্মচারীদের গ্রহণযোগ্যতা ও এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত স্থগিতের আদেশ কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রিটকারী তিন শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করতে কেন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না, রুলে তাও জানতে জানতে চেয়েছেন আদালত।
চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি)সহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
তিন শিক্ষকের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (২৮ মে) বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন ও শাম্মী আক্তার। তাদেরকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী সুমিত্রা দাস ও মো. বাহাউদ্দিন আল ইমরান।
আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন।
এর আগে বিভিন্ন সময়ে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত সনদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক ওঠে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টির সনদধারীর চাকুরিসহ বিভিন্ন পেশায় অন্তর্ভুক্তিতে জটিলতা তৈরি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পৃথক পৃথক কয়েকটি রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে রায় প্রদান করেন হাইকোর্ট।
ওই রায়ে আরও বলা হয়, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদপ্রাপ্তদের বিষয়ে তাদের স্ব স্ব কর্মস্থলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের (ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি) ওপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল না করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট একটি অফিস আদেশ জারি করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্জিত সনদের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি/ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে এবং উক্ত সনদের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক/কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর গ্রহণ করবে। কিন্তু পরদিন অর্থাৎ ২০১৮ সালের ২৯ আগস্ট উক্ত অফিস আদেশের কার্যক্রম স্থগিত করে পুনরায় আরেকটি অফিস আদেশ জারি করা হয়। এর ফলে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্জিত সনদধারীদের এমপিওভুক্ত সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। অথচ সনদ স্থগিত সত্ত্বেও বিভিন্ন সময়ে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদপ্রাপ্ত একাধিকজনকে এমপিওভুক্তির সুবিধা প্রদান করা হয়। এসব বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে নিউজ প্রকাশিত হয়।
পরে সেসব প্রতিবেদন সংযুক্ত করে গত ৩০ এপ্রিল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত পটুয়াখালীর মো. মনিরুল ইসলাম, টাঙ্গাইলের মো. বশির উদ্দিন ভূঁইয়া এবং রাজশাহীর মো. শাহ আলম হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আবেদনকারী তিন শিক্ষক বেসরকারি দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিবন্ধন সনদ পায়। সেই সনদ দিয়ে আবেদন করে এমপিওভুক্ত স্কুলে চাকরির জন্য নির্বাচিত হন। এখন তারা এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করলে মন্ত্রণালয় তাদের এমপিওভুক্ত করতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর তারা প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন।’
আজ শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন। চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিব, ডিজিসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে