Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মসলার বাজার তদারকি করবে ভোক্তা অধিদফতর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৮ মে ২০২৩ ২২:১২

ঢাকা: কোরবানি ঈদ সামনে রেখে মসলার বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর।

রোববার (২৮ মে) দুপুরে কারওয়ান বাজারে গরম মসলার মূল্য ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ সব তথ্য জানান অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, আগামীকাল সোমবার থেকে সারা বাংলাদেশে মসলার বাজার, বিশেষ করে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাই এবং পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার, শ্যামবাজারের মসলার বাজার নজরদারিতে রাখছি। এখানে আন্ডার ইনভয়েসিং হলে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করব। এক সপ্তাহ আমি এটি অবজার্ভ করব। তারপর ডিটেইলস রিপোর্ট সরকারের কাছে দেব। ক্যাব থেকে বলা হয়েছে, সব আদা চাইনিজ আদা নামে বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রামে আমাদের ভালো মানের আদা হয়, সেটা হার্ভেস্টিং এর আগেই কাঁচা বিক্রি করে অতি মুনাফা করবে, এটি প্রতারণা।

হঠাৎ আদার দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গরম মসলা এবং আদার ক্ষেত্রে বাজারে একটা অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। দাম বেড়ে যাচ্ছে। কোরবানিকে টার্গেট করে এটি করা হচ্ছে বলে আমাদের ধারণা। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টও তাই বলছে।’

অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুর শাহরিয়ার বলেন, ‘সারাবছর মসলার বাজার স্থিতিশীল ছিল, এখন যখন ঈদ ঘনিয়ে এলো। ব্যবসায়ীরা মোচড় দিয়ে উঠেছে। ঈদের আগে কেউ কেউ বাজারে কারসাজি করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত আছে।’

এ সময় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার মণ্ডল মসলার বাজারে অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘মৌলভীবাজারের মসলা ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করেন। সেখানে কোনো মূল্য তালিকা দেখা যায় না। কোথা থেকে কত দামে এনেছেন তা-ও জানাতে চান না। এখানে আমাদের কাজ করার জায়গা আছে।’

অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থেকে খাতুনগঞ্জের মসলার বাজার সম্পর্কে সভাকে অবহিত করেন। তিনি জানান সেখানে চায়না আদা মার্কেটে তেমন নেই আর বার্মিজ ও ইন্ডিয়ান আদা ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে যা খুচরা বাজারে ২২০-২৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আজহার জন্য পর্যাপ্ত মসলার মজুদ রয়েছে।

বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের উপপ্রধান জানান, আদা-জিরাসহ আমদানিকৃত মসলার আমদানি মূল্যের সাথে বিক্রয় মূল্যে বেশ অসঙ্গতি রয়েছে যা অধিকতর পর্যালোচনার প্রয়োজন।

নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি, শ্যামবাজার, কারওয়ান বাজার, শাহ আলী মার্কেটসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, পাড়া-মহল্লার দোকানে মসলার বাজারে পর্যাপ্ত শৃঙ্খলা নেই যা সামগ্রিকভাবে মসলার বাজারে প্রভাব ফেলছে। তাদের মতে পোর্টে মসলা খালাসের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় লাগে যা মসলার মূল্য বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলছে। এ ছাড়াও তারা বলেন, পাইকারি ব্যবসায়ীরা খুচরা ব্যবসায়ীদের ক্রয় রশিদ প্রদান করছেন না। এক্ষেত্রে খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজার কঠোরভাবে তদারকির অনুরোধ জানান।

সভায় ক্যাবের প্রতিনিধি বলেন, মসলার খুচরা ও পাইকারী বাজারে মূল্যের অসঙ্গতি রয়েছে। এছাড়াও সুপার শপ গুলোতে দেখা যায়, তাঁরা পাইকারি বাজার থেকে মসলা সংগ্রহ না করে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে সংগ্রহ করছে। এতে একাধিক হাত বদলের মাধ্যমে মসলার মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও পার্বত্য অঞ্চলের আদা, চায়না আদা নামে বিক্রির মাধ্যমে ভোক্তাদের প্রতারণা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে অধিদফতরকে তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালকগণ, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি, এনএসআইয়ের প্রতিনিধি, ক্যাবের প্রতিনিধি, স্বপ্ন মীনাবাজারসহ বিভিন্ন সুপারশপ প্রতিনিধি, নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা।

সারাবাংলা/ইএইচটি/একে

জাতীয় ভোক্তা অধিদফতর টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর