Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারের সুর নিচের দিকে নেমে এসেছে: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৯ মে ২০২৩ ২৩:১৯

ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি ঘোষণার পর সরকারের সুর নিচের দিকে নেমে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা আয়োজন করে বিএনপি।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত নতুন ভিসা নীতির দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ম্যান প্রোপোজেস গড ডিসপোসেস। মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক। কত লাফালাফি কয়েকদিন আগেও, তাই না? কী লাফালাফি! এখন লাফালাফি কমে এসছে। সুর নিচের দিকে নেমে এসেছে। এখন বলা হচ্ছে, সংঘাত চাই না, আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে করতে হবে। আমরা তো বাধা দিচ্ছি না।’

‘এই সেদিনও জেলাগুলোতে আমাদের দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। সেদিনও আমাদের অনেকগুলো জেলায় সভা করতে দেওয়া হয় নাই, সেদিনও পার্বত্য চট্টগ্রামে আমাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ভাই’র গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে, সেদিনও কেরানীগঞ্জে নিপুণকে (নিপুণ রায় চৌধুরী) আহত করা হয়েছে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘নরসিংদীতে আমাদের খায়রুল কবির খোকন ও শিরিন সুলতানার নামে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিজেরা ষড়যন্ত্র করে, হত্যা করে এখন আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। গায়েবি মামলা এটা তাদের নতুন ক্রিয়েশন। কোনো কিছুই ঘটবে না এটা মামলা হয়ে গেল। সেই মামলায় ৪০ জনের নাম, বাকি দেড় হাজার অজ্ঞাত আসামি। যখন যাকে খুশি ধরে নিয়ে আস মামলা দিয়ে দাও।’

বিজ্ঞাপন

ফখরুল বলেন, ‘আমরা লড়াই করছি, আমরা সংগ্রাম করছি। আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে এই লড়াই করছি। এই লড়াই এখন চূড়ান্ত পর্যায় এসেছে। আমরা পরিষ্কার দাবি জানিয়েছি। আমাদের দাবি হচ্ছে- প্রথম তোমাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং তোমাকে সামনে রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এটা এদেশের মানুষ মনে করে না। এটাই বাস্তবতা।’

তিনি বলেন, ‘এই সংসদে তুমিই সংবিধান পরিবর্তন করেছ, সংবিধানে বিভিন্ন কাটা ছেঁড়া করে এই সংসদ রেখেছ, সেই সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। ২০১৪ সালে দেখেছি, ২০১৮ সালে দেখেছি। আর নতুন করে দেখার কিছু নেই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার পরিবর্তন চাই। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জনগণ যেন ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থাই আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই। আমরা আবারও চাই যে, জনগণ যেন একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় তার ভোট নিজে দিয়ে নিজেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে।’

আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স বেড়ে যাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে বলছে যে, আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে। এটা বিস্ময় ব্যাপার। আমেরিকা যখন যায় তখন বাড়িঘর সব বিক্রি করে যায়, তাই না? আমাদের সাধারণ মানুষরা বিদেশে যায়। যেমন- সৌদি আরব যায়, কাতার যায়, কুয়েতে যায়। এরা সেখান থেকে রেমিট্যান্স পাঠায় অথবা নিয়ে আসে, তাই না? এখন কী একটা জাদু তৈরি হলো যে, আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স আসছে। মানুষ বলছে কি? এই চোরেরা চুরি করে যত টাকা পাচার করেছে, এখন তা আবার ফেরত আনছে। কারণ কী জানেন? আড়াই পারসেন্ট পাবে, সেই কারণে। সবদিক থেকে চুরি, চুরি চুরি চুরি।’

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের ভোট চোরদের রুখতে আমেরিকানরা ভিসানীতি করেছে। আপনাদেরকেও এখন থেকে সজাগ থাকতে হবে। কারা ভোট চোর তাদের তালিকা করতে হবে। ওদের (ভোট চোর) অপকর্মের ছবি তুলে ফেইসবুকের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে হবে এবং বিএনপির অফিসে তা পাঠিয়ে দিতে হবে। বাকি কাজ আর চিন্তা করতে হবে না। আমরা বলে দিতে চাই, আগামীতে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে এবং জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আগামীতে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।’

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুব দলের সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, ছাত্র দলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

মির্জা ফখরুল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর