Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পিতা হত্যায় পুত্র ও তার প্রেমিকার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩০ মে ২০২৩ ১৮:৪৭

ঢাকা: ২০১৮ সালে রাজধানীর মাদারটেকে আদম ব্যবসায়ী মো. শাহ আলম ভুইয়া খুনের মামলায় ছেলে সৈকত হোসেন ভূঁইয়া রাজ এবং তার প্রেমিকা লাবনী হোসেন ইমুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ওই ব্যক্তির লাশ গুমের অভিযোগে দুই জনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ মে) বিকেলে ঢাকার ৭ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখারের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাদের আরও ৫ মাস বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণের সক্ষম হয়েছে। আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু আসামিদের বয়স কম। সবিকছু বিবেচনায় মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলো।’

২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল মধ্যরাতে শাহ আলমের লাশ উদ্ধারের পর রাজধানীর সবুজবাগ থানায় সাব-ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামান বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করে। থানা পুলিশের পর মামলার তদন্তভার পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়। আসামিদের গ্রেফতারের পর তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, লাবনীর মোবাইল নষ্ট হয়ে গেলে সেটি করতে খিলগাঁও মার্কেটে সৈকতের দোকানে যান। সেখান থেকে তাদের পরিচয় ও প্রেম গড়ে ওঠে। তারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরি করেন। তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্কও হয়। পরে একদিন সৈকতের বাসায় গিয়ে লাবনী জানতে পারেন তার স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। রাগে-ক্ষোভে বাসা থেকে চলে আসেন লাবনী। সৈকত জানায়, স্ত্রীকে তালাক দিয়ে লাবনীকে বিয়ে করবে সে। তাদের সম্পর্ক ফের স্বাভাবিক হয়।

বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সময়ে লাবনীর দিকে কুদৃষ্টি পরে সৈকতের বাবা শাহ আলম ভুইয়ার। লাবনী বিষয়টি সৈকতকে জানালে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়। একদিন শাহ আলম রাস্তায় লাবণীকে উত্ত্যক্ত করে। বিষয়টি লাবনী সৈকতকে জানায়। এর পর ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল লাবনী শাহ আলমকে উত্তর গোড়ানে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। পরে লাবনী ঘুমের ওষুধ মেশানো পানীয় তাকে পান করান। আগে থেকেই সেখানে লুকিয়ে ছিলেন সৈকত।

ওষুধ মেশানো পানি খেয়ে শাহ আলম ঘুমিয়ে পড়লে তার ছেলে সৈকত ও লাবনী রশি দিয়ে গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে। পরে সৈকতের পরামর্শে একটি কালো লাগেজে লাশ ভরে নির্জন স্থানে ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে মাদারটেকের মোড় থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত ৫০০ টাকায় সিএনজি ভাড়া করে লাবনী। কিন্তু পথে পানি আনার কথা বলে সিএনজিতে লাগেজ রেখে নেমে পড়েন তিনি। পরে অনেকক্ষণ হয়ে গেলেও লাবনী ফিরে না আসায় লাগেজ খোলেন সিএনজিচালক। এবং সেটি খুলেই তিনি লাশ দেখতে পান।

মামলাটি তদন্ত করে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আরিফুর রহমান আদালতে দুই জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। এর পর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলার বিচার চলাকালে আদালত সাত জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

সারাবাংলা/এআই/পিটিএম

পিতা-হত্যা পুত্র প্রেমিকা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর