‘ভয়াবহ পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে সরকার’
৩১ মে ২০২৩ ১৪:১৮
ঢাকা: বিএনপির আন্দোলন বন্ধ করতে ১২শ’ মামলাসহ সরকার ভয়াবহ পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৩১ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানের সাজা বহাল রাখার ঘটনায় আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আরমগীর বলেছেন, ‘বিএনপির আন্দোলন বন্ধ করতে ভয়াবহ পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে সরকার। তারা বিরোধী দলের সাড়ে ১৩শ’ মামলা নিয়ে মাঠে নেমেছে। আগামী নির্বাচনের আগে কীভাবে এই মামলাগুলো দ্রুত শেষ করে বিএনপি নেতাদের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠনো যায়, সেই অপচেষ্টা শুরু করেছে তারা। তাদের লক্ষ্য নির্বাচনে প্রতিপক্ষ ছাড়া খালি মাঠে গোল দেওয়া। কিন্তু এবার তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হবে না।’
তিনি বলেন, ‘সরকার রাষ্ট্রের সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছে। অত্যন্ত ক্ষোভ ও বেদনার সঙ্গে লক্ষ্য করছি, যে মামলা হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে পুনরায় শুনানি করে সে মামলায় রাজনৈতিক নেতাদের সাজা দেওয়া হলো। পতন ঘনিয়ে আসার আগে যখন কোনো আশা থাকে না, তখন কোনো কিছু আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা। সরকার হামলা মামলা দিয়ে সে চেষ্টাই করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একইভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী জেবায়দা রহমানের ২০০৭ সালের মামলাগুলো অতিদ্রুত চালু করা হয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিদিন সাক্ষী হাজির করা হচ্ছে। এ নিয়ে কোর্টে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা কথা বলতে চাইলে তাদের ওপর সরকারি দলের আইনজীবীরা হামলা করে এবং পুলিশ দিয়ে নির্যাতন চালায়। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সরকার নোংরা ষড়যন্ত্র অব্যাবহত রেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়াকে খালাস দেওয়া হয়েছে। অথচ ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও তার স্ত্রীকে সাজা দেওয়া হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল জানান, সম্প্রতি সারাদেশে এ পর্যন্ত সাত শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে। গত ১২ দিনে নতুন মামলা হয়েছে ১৫২টি, সাড়ে পাঁচ হাজার আসামি করা হয়েছে।
‘ভয় ত্রাস সৃষ্টি করে এক কায়দায় নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে চায় তারা। কিন্তু মানুষ এবার তা সফল হতে দেবে না’— বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) আমাদের কর্মসূচিতে আগ বাড়িয়ে সমস্যা সৃষ্টি করে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। কেরানীগঞ্জ আমাদের নিপুণ রায়কে মেরে আহত করা হয়েছে। আবার তাকেই মামলার এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। এতে কোনো লাভ হবে না। দানব সরকারকে সরানোর জন্য যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তা হামলা-মামলা দিয়ে দমানো যাবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এনএস