Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জাবিতে র‌্যাগিং কালচার, ফলাফলে প্রভাব পড়ছে ছাত্রদের

জাবি করেসপন্ডেন্ট
৩১ মে ২০২৩ ১৫:২২

জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একাডেমিক ফলাফলে প্রথম বর্ষ থেকেই ছাত্রদের তুলনায় এগিয়ে থাকছেন ছাত্রীরা। ফলে শিক্ষাজীবন শেষেও একই ধারা অব্যাহত থাকতে দেখা যাচ্ছে। ছাত্রদের এই ফলাফলের পেছনে আবাসন সমস্যা, র‌্যাগিং, সিনিয়রদের চাপ ও রাজনৈতিক পরিবেশের প্রভাব রয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪টি শিক্ষাবর্ষের মধ্যে প্রথমবর্ষের ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীর ফলাফলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ৩৬টি বিভাগের মধ্যে ৩০টিতে ছাত্রীরা এগিয়ে, আর পাঁচটিতে এগিয়ে ছাত্ররা এবং একটিতে ফলাফলের ভিত্তিতে ছাত্র-ছাত্রী সমান। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষেও প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে, যেখানে ৩৭টি বিভাগের মধ্যে ৩৩টি বিভাগেই ছাত্রীরা এগিয়ে, তিনটিতে ছাত্ররা এবং একটিতে ছাত্র-ছাত্রী সমান। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ৩৭টি বিভাগের ৩০টিতে ছাত্রী, ৬টিতে ছাত্র এবং একটি বিভাগে ছাত্র-ছাত্রীর ফলাফল সমান।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ফলাফলে দেখা যায়, ৩৫টি বিভাগের ফলাফলে মেধাক্রম অনুসারে ৫৪ দশমিক ৮০ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৫ দশমিক ২০ ভাগ ছাত্র। তবে, ২০১৮ সালের স্নাতক সম্মান চূড়ান্ত পর্ব পরীক্ষার সময় ব্যবধানটি কমে দাঁড়ায় ৫১ দশমিক ৮৯ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৮ দশমিক ১১ ভাগ ছাত্র।

অনুষদ অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে কলা ও মানবিক অনুষদের প্রথমবর্ষের পরীক্ষায় ছিল ৫৫ দশমিক ৩৮ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৪ দশমিক ৬২ ভাগ ছাত্র। পরে স্নাতক সম্মান চূড়ান্ত পর্ব পরীক্ষায় ৫৩ দশমিক ৯১ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৬ দশমিক শূন্য ৯ ভাগ ছাত্র ছিল।

গাণিতিক এবং পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ক্ষেত্রে, প্রথম বর্ষে ৫১ দশমিক ৮০ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৮ দশমিক ২০ ভাগ ছাত্র ছিল। পরবর্তীতে, স্নাতক সম্মান চূড়ান্ত পর্ব পরীক্ষায় সেটি হয় ৫১ দশমিক ৯৮ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৮ দশমিক শূন্য ২ ভাগ ছাত্র। যা প্রায় সমানই থাকে।

বিজ্ঞাপন

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ক্ষেত্রে, প্রথম বর্ষে ৫৭ দশমিক শূন্য ৬ ভাগ ছাত্রী এবং ৪২ দশমিক ৯৩ ভাগ ছাত্র ছিল। পরে স্নাতক সম্মান চূড়ান্ত পর্ব পরীক্ষায় ছাত্ররা এগিয়ে যায়। এর মধ্যে ৪৮ দশমিক ৬০ ভাগ ছাত্রী এবং ৫১ দশমিক ৪০ ভাগ ছাত্র।

জীববিজ্ঞান অনুষদের ক্ষেত্রে, প্রথম বর্ষে ৫৫ দশমিক ১৩ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৪ দশমিক ৮৭ ভাগ ছাত্র ছিল। এখানেও পরবর্তীতে স্নাতক সম্মান চূড়ান্ত পর্ব পরীক্ষায় ছাত্ররা এগিয়ে যায়। এর মধ্যে ৪৮ দশমিক ৬৭ ভাগ ছাত্রী এবং ৫১ দশমিক ৩৩ ভাগ ছাত্র।

বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ক্ষেত্রে, প্রথম বর্ষে ৫৬ দশমিক ১৫ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৩ দশমিক ৮৫ ভাগ ছাত্রী ছিল। পরবর্তীতে স্নাতক সম্মান চূড়ান্ত পর্ব পরীক্ষায় সেটি ৫৩ দশমিক ৭১ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৬ দশমিক ২৯ ভাগ ছাত্র হয়।

আইন অনুষদের ক্ষেত্রে, প্রথম বর্ষে ৫২ দশমিক ৯৪ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৭ দশমিক শূন্য ৬ ভাগ ছাত্র ছিল। তবে স্নাতক সম্মান চূড়ান্ত পর্ব পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪৬ দশমিক ৮৭ ভাগ ছাত্রী এবং ৫৩ দশমিক ১৩ ভাগ ছাত্র।

তবে আইবিএ এবং আইআইটি ইনস্টিটিউটগুলোর ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রথম বর্ষে ছাত্ররা এগিয়ে রয়েছেন। এর মধ্যে ৪৮ দশমিক ২৬ ভাগ ছাত্রী এবং ৫১ দশমিক ৭২ ভাগ ছাত্র ছিল। তবে স্নাতক সম্মান চূড়ান্ত পর্ব পরীক্ষায় ছাত্ররা অনেক পিছিয়ে পড়েন। এর মধ্যে ৬০ ভাগ ছাত্রী এবং ৪০ ভাগ ছাত্র।

এদিকে ৬টি অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের ২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ফলাফল পর্যালোচনা করলে একই চিত্র দেখা যায়।

কলা ও মানবিক অনুষদের দর্শন বিভাগের ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ফলাফলে প্রথম ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৬০ ভাগই ছাত্রী এবং মাত্র ৪০ ভাগ ছাত্র। ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষেও একই চিত্র। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে প্রায় ৬২ দশমিক শূন্য ৭ ভাগ ছাত্রী এবং ৩৭ দশমিক ৯৩ ভাগ ছাত্র। এছাড়া ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে ৭৪ দশমিক শূন্য ৭ ভাগ ছাত্রী এবং ২৫ দশমিক ৯৩ ভাগ ছাত্র।

গাণিতিক এবং পদার্থ অনুষদেও একই চিত্র দেখা গেছে। পরিসংখ্যান বিভাগে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ফলাফলের প্রথম ৫০ শতাংশে ৫৮ দশমিক ৩৩ ভাগ ছাত্রী এবং ৪১ দশমিক ৬৬ ভাগ ছাত্র। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে সেটি ৫৭ দশমিক ১৪ ভাগ ছাত্রী এবং ৪২ দশমিক ৮৬ ভাগ ছাত্র। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে সেটি ৬৬ দশমিক ৬৭ ভাগ ছাত্রী এবং ৩৩ দশমিক ৩৩ ভাগ ছাত্র।

সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে ফলাফলের প্রথম ৫০ শতাংশে ৬১ দশমিক ১১ ভাগ ছাত্রী এবং ৩৮ দশমিক ৮৮ ভাগ ছাত্র। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে সেটি ৬৬ দশমিক ৬৭ ভাগ ছাত্রী এবং ৩৩ দশমিক ৩৩ ভাগ ছাত্র। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে সেটি ৫৮ দশমিক ৯৭ ভাগ ছাত্রী এবং ৪১ দশমিক শূন্য ২ ভাগ ছাত্র।

জীববিজ্ঞান অনুষদের প্রাণরসায়ন এবং অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে ফলাফলের প্রথম ৫০ শতাংশে ৬২ দশমিক ২ ভাগ ছাত্রী এবং ৩৭ দশমিক ৫ ভাগ ছাত্র। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে সেটি ৬৮ দশমিক ৭৫ ভাগ ছাত্রী এবং ৩১ দশমিক ২৫ ভাগ ছাত্র। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে সেটি ৫৭ দশমিক ১৪ ভাগ ছাত্রী এবং ৪২ দশমিক ৮৬ ভাগ ছাত্র।

বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের মার্কেটিং বিভাগের, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে ফলাফলের প্রথম ৫০ শতাংশে ৫৯ দশমিক ২৬ ভাগ ছাত্রী এবং ৪০ দশমিক ৭৪ ভাগ ছাত্র। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে সেটি ৫৩ দশমিক ৮৪ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৬ দশমিক ১৫ ভাগ ছাত্র। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে সেটি ৫৫ দশমিক ৫৬ ভাগ ছাত্রী ৪৪ দশমিক ৪৪ ভাগ ছাত্রী।

আইন অনুষদের আইন ও বিচার বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে ফলাফলের প্রথম ৫০ শতাংশে ৫৮ দশমিক ৩৩ ভাগ ছাত্রী এবং ৪১ দশমিক ৬৬ ভাগ ছাত্র। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে সেটি ৫৫ দশমিক ৫৬ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৪ দশমিক ৪৪ ভাগ ছাত্র। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে সেটি ৫৫ দশমিক ২৬ ভাগ ছাত্রী এবং ৪৪ দশমিক ৭৪ ভাগ ছাত্র।

ফলাফলের এই তারতম্যের প্রভাব পড়ছে পরবর্তী সময়গুলোতে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) প্রতিটি অনুষদে ২০১৯ সালের সর্বোচ্চ একাডেমিক ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মনোনীত করে। সেখানে ৬টি অনুষদের সবগুলোতেই ছাত্রীরা শীর্ষস্থানে রয়েছেন। এছাড়া চলতি বছরেই অনুষ্ঠিত পঞ্চম সমাবর্তনেও স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে সর্বোচ্চ নম্বরের জন্যে স্বর্ণপদক বিজয়ী ১৬ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ১১ জনই ছিলেন ছাত্রী।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হলের পরিবেশ, প্রথম বর্ষে র‌্যাগিং, গণরুম সংস্কৃতি, আবাসন সমস্যা, সিনিয়রদের চাপ, জোর করে মিছিল মিটিং করানো, ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের চাপসহ নানাবিধ কারণে ছাত্ররা পিছিয়ে পড়ছে। যে সমস্যাগুলো মেয়েদের হলে তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তবে প্রথম বর্ষের তুলনায় স্নাতক চূড়ান্ত পর্ব পরীক্ষায় ছাত্রদের এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে। এই সময় ছাত্রদের ওপর এসব চাপ অনেক কমে যায়।

ছাত্রদের পিছিয়ে পড়া ও ছাত্রীদের ভালো করার বিষয়ে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নন্দিতা সরকার বলেন,‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের এগিয়ে থাকার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম হলো- ছাত্রী হলে একটি নির্দিষ্ট রুমে থাকা, নিজের মতো করে পড়াশোনার জায়গা তৈরি করা বেশ সহজ। যা হলের আবাসিক ছাত্রদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। গণরুম থেকে নিজেদের রুম পেতেই তারা স্নাতকের প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে যায়। এছাড়া পরিবার ও নানা চাপ ও সমস্যার কারণেও অনেক ছাত্র পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই চাইলে এ সমস্যাগুলো দূর করতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদের হলের রুমগুলো বছরের পর বছর সাবেক শিক্ষার্থীদের দখলে থাকে, তারা চাইলে সাবেকদের সরিয়ে বর্তমান শিক্ষার্থীদের সুন্দর পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারেন। আবার অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে অনুপস্থিত বা বেশিরভাগ সময় অমনোযোগী থাকে। এক্ষেত্রে প্রশাসন তাদের আচরণ নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নিতে পারে। এতে ছাত্রদের পড়াশোনা ও ফলাফলে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি আসবে বলে মনে করি।’

ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা শারমিন জুই বলেন, ‘ছেলেদের হলে গেস্টরুম হয়। রাতে ঘুম হয় না ঠিকমতো। এভাবে অনেকদিন একই সমস্যা চলতে চলতে তারা পড়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। মেয়েদের হলে এমন হয় না।’

এ বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায় বলেন, ‘ছেলেদের গণরুমে রাতভর ফাঁপর (র‌্যাগিং) চলে। একটা ছেলে রাতে ফাঁপর খাওয়ার পর সে ক্লাসে গিয়ে ঘুমায়। ক্লাসনোট, জামাকাপড়, নিজের সেবাযত্ন ও খাবারের খেয়াল থাকে না। ফলে পড়াশুনার জন্য একটা প্ল্যানমাফিক চলাফেরার প্রয়োজন, তা নষ্ট হয়ে যায়। আর আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে, ৭-৮ দিন টানা ফাঁপর চলতে থাকলে সেগুলো আর মেনে নেওয়া যায় না। তখন অনেকেই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। নানান ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে যখন কেউ যায়, তখন আসলে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের যে পড়াশোনা তা আর হয়ে উঠে না।’

জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘যেহেতু পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। তাই আশা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরই একটা বেড থাকবে, একটা পড়ার টেবিল থাকবে, একটা চেয়ার থাকবে, আলাদা একটা লকার থাকবে। এটুকু সবাই আশা করেই আসে, আমিও এসেছিলাম। কিন্তু আসার পর দেখলাম জাহাঙ্গীরনগরে একটা গণরুম কালচার আছে। এটা মেয়েদের হলে যতটা না প্রকট, তার চেয়ে ছেলেদের হলে অনেক বেশি। সেই জায়গা থেকে মেয়েদের চাইতে ছেলেরা পড়াশোনা করার সুযোগ কম পাচ্ছে। প্রথমের দিকেই আসার পরে এই যে সুযোগের অভাবের কারণে পড়াশোনা থেকে সরে আসতে হচ্ছে। ফলে ছাত্রদের মধ্যে আগ্রহ কমে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বারবার অনুরোধ করেছি গণরুম কালচার যেন না থাকে। শুধু মুখে অনুরোধ না। আমরা স্মারকলিপিও দিয়েছি, যেন গণরুম কালচারটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে মুছে দেওয়া হয়।’

এই বিষয়ে শহীদ সালাম-বরকত হলের প্রভোস্ট ড. সুকল্যাণ কুমার কুণ্ডু বলেন, ‘বিষয়টি আসলে আমিও খেয়াল করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর ছেলেদের হলে থাকা নিয়ে একটা সমস্যা হয়। হলে একটা গণরুম কালচার রয়েছে, যেখানে পড়াশুনাটা আসলে খুবই অসুবিধার। গণরুম কালচারটা উঠে গেলে হয়তো ছেলেরা একটু পড়াশুনার পরিবেশটা পাবে। গণরুম র‌্যাগিং না বলে অত্যাচার বলি। এটি (গণরুম র‌্যাগিং) হয়তো মেয়েদের হলে কম আছে।’

এই পরিস্থিতির প্রতিকারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কি না?- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মেয়েদের ৩টা বড় হল, ছেলেদের ৩টা বড় হল হয়েছে। যেগুলোর সিটের সুষ্ঠু বণ্টন হলে গণরুম আর থাকবে না। তারপর থেকে পরিস্থিতিরও একটু উন্নতি হবে।’

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ বিষয়ে কিছু জানাতে অস্বীকৃতি জানান। এছাড়া উপউপাচার্য অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনিও এ ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হননি।

প্রতিবেদক: শাহরীন জাহওয়া রিফাত, আহমেদ বিন কাদের অনি, হোসনেয়ারা আক্তার ও ফারহান আহমেদ; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের শিক্ষার্থী।

সারাবাংলা/এনএস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর