নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এই ভিসা নীতি : ঢাবি উপাচার্য
২ জুন ২০২৩ ২০:৫৮
ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি বিশ্লেষণ করে দেশের রাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, আমদের মতো উদীয়মান দেশগুলোর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে। আমাদের দেখতে হবে, এই নীতি আমদের কোনো অংশে আঘাত হানে। সেই হিসাবে রাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করতে হবে।
শুক্রবার (২ জুন) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরামের (ইআরডিএফবি) আয়োজনে ‘মার্কিন নতুন ভিসা নীতি: বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য ড. আখতারুজ্জামান এ সব কথা বলেন।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘ভিসা নীতি নিয়ে দুটি বক্তব্য উঠে এসেছে। ভিসা নীতি অসঙ্গতিপূর্ণ এবং অস্পষ্টতা ও বাস্তবায়ননীতির গ্রহণযোগ্যতা নেই। মূলত যুক্তরাষ্ট্র নতুন নীতি অবলম্বন করছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। ইউক্রেন- রাশিয়া যুদ্ধেও সরকারের পরিবর্তে কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিষেধাজ্ঞা আমরা লক্ষ্য করেছি।’
ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমার ধারণা দুটি কারণেই এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আমরা ৩৫ তম শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ।’
২০৪০ সালের মধ্যে ২০ তম শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ হওয়ার পরিকল্পনা আছে। এই পরিকল্পনাকে নস্যাৎ করা ও আসন্ন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এই ভিসা নীতি দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার হোসেন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম। ইআরডিএফবি সভাপতি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেনসহ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান ও ঢাবি অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চক্রবর্তী।
ড. মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ- যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫১ বছরের যে সম্পর্ক তাতে এই ভিসা নীতি কতটুকু গ্রহণযোগ্য তা দেখার বিষয় আছে। এতে তাদের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতিতেও সমস্যা তৈরি হবে। আমরা স্বল্প মূল্যে রফতানি করি, অন্য দেশ থেকে আমদানিতে তাদের খরচ বেশি হবে। ফলে আমারা যে রফতানি করি, তাতে তারাও বেশ লাভবান হচ্ছে। পৃথিবীতে বিশ্ব সরকার বলতে কিছু নেই যে, তারা এসে বলবে আপনারা এভাবে নির্বাচন করবেন।’
অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘রাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘর্ষিক সব বিষয় আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। ১৯৭১ সালে আমরা তা করে দেখিয়েছি।’
অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভিসানীতি করা যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। ভিসা নীতিতে অনেক দিক তুলে ধরা হয়নি, যাতে জনসাধারণ দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েছেন।’
ড. গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, ‘নতুন ভিসা নীতি নিয়ে রাজনৈতিকরা তাদের নিজেদের মত করে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। তাই নীতি নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা প্রয়োজন। সাধারণ বিষয়কে এখানে খুব বড়ভাবে দেখা হচ্ছে। আমাদের আয়ের বড় উৎস গার্মেন্টস পণ্য রফতানি। যার অধিকাংশ আয় আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। অন্যান্য দেশ থেকে এই পণ্য আমদানিতে তাদের ব্যয় অনেক বুদ্ধি পাবে। ফলে আমাদের রফতানি তারাই বেশি লাভবান হচ্ছে।’
সারাবাংলা/একে