Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘লুটপাটের বাজেট’ বলা বিএনপির শোভা পায় না: ওবায়দুল কাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৩ জুন ২০২৩ ১৫:৫৩

ফাইল ছবি

ঢাকা: বিএনপির বাজেট সমালোচনা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি বড় বড় কথা বলে, তারা লুটপাটের বাজেট বলে। যাদের অর্থনীতি ছিল লুটপাটের অর্থনীতি এবং এই লুটপাটে তারা ছিল বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন। দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন; এই দলের মুখে লুটপাট আর দুর্নীতি বক্তব্য শোভা পায় না।

শনিবার (৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা প্রথম দিনেই বলেছিলাম এই বাজেট হচ্ছে সংকটে ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট। এখন আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। ২০২৬-এ উন্নয়নশীল দেশের আমরা প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাব। সেই লক্ষ্যে কিছু উপাদান আমাদের যুক্ত করতে হবে কর্মপরিকল্পনার মধ্যে।’

বাংলাদেশ এরইমধ্যে ম্যাজিক্যাল ট্রান্সফরমেশন করেছে মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এটি শেখ হাসিনার ম্যাজিক্যাল লিডারশিপের কারণে সম্ভব হয়েছে। সংকটে এখনো তিনি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য যেখানে বাস্তবভিত্তিক যা করণীয়, করতে তিনি পিছপা হচ্ছেন না।’

মুদ্রাস্ফীতি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘আজকে মুদ্রাস্ফীতি একটি উদ্বেগের বিষয়, যেটি সারা বিশ্বময় সংকটের অন্যতম কারণ। ৮ দশমিক ৪, এ পর্যায়ে আমরা আছি। আমাদের টার্গেট, এই বাজেটে আমরা ৬ শতাংশে নামিয়ে নিয়ে আসব।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে নানা কথা বলা হচ্ছিল কিন্তু আমাদের তো হিসাব-নিকাশ আছে। আজকে বিএনপি বড় বড় কথা বলে, তারা লুটপাটের বাজেট বলে। এ কথা তাদের মুখে শোভা পায় না। যাদের অর্থনীতি ছিল লুটপাটের অর্থনীতি এবং এই লুটপাটে তারা ছিল বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন। দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন; এই দলের মুখে লুটপাট আর দুর্নীতি বক্তব্য শোভা পায় না।’

বিজ্ঞাপন

‘আর তাদের চেয়ে ১০ গুণ বড় বাজেট আমরা দিতে পেরেছি। ২০০৫-০৬ সালে বাজেট ছিল ৬৬ হাজার কোটি টাকা। আজকে সেই বাজেট কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে? আজকে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা জাতীয় বাজেট সংসদে উত্থাপিত হয়েছিল। স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশের জিডিপি ১০০ বিলিয়ন ডলার হতে সময় লেগেছিল ৩৯ বছর। আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে ধারাবাহিক অগ্রগতির ফলে জিডিপি গত ১৪ বছরে সাড়ে ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৬০ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে’ বলে মনে করেন তিনি।

রিজার্ভ নিয়ে অস্বস্তির কারণ নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয়েছিল, তখন বলতে হবে শূন্য রিজার্ভ নিয়ে আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে যাত্রা শুরু করতে হয়েছিল। সেই রিজার্ভ বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। চলমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে এবং বাংলাদেশের খুব বেশি টাকা দিয়ে…আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়াতে সেই রিজার্ভের টাকা আমাদের এখন ৩১ প্লাস পয়েন্টে এসেছে। এটি নিয়ে আমাদের অস্বস্তির কারণ নেই। পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ এখন তলানিতে। পৃথিবীর অনেক দেশের অবস্থা খারাপ।’

দেশে দেশে সংকট, ক্লাইমেট চেঞ্জের প্রভাবের প্রসঙ্গ তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেন যেন মনে হয় যেভাবে পানির সংকট তীব্রতা পাচ্ছে তাতে পানি নিয়ে এখানে বিশ্বযুদ্ধের একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।’

অনেক চিন্তা-ভাবনা করে এই বাজেট প্রণীত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে কৃষিকে বাঁচাতে হবে। খাদ্য উৎপাদন আমাদের ঠিক রাখতে হবে। কৃষিটা আছে বলে, খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে বলে বাংলাদেশ এখনও তেমন সংকটে পড়েনি। আজকে বিএনপি নেতাদের কথা শুনলে মনে হয়, দেশে বোধ হয় দুর্ভিক্ষ হয়েছে। দেশ বোধহয় দুর্ভিক্ষের কবলে পতিত। যে সময় তারা ‘দেশ দুর্ভিক্ষের কবলে পতিত’ এমন সব উদ্ভট কথা-বার্তা বলে যাচ্ছে ঠিক সে সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাপান সফর, ওয়াশিংটনের বিশ্বব্যাংকের হেড কোয়ার্টার, যুক্তরাজ্য ঘুরে এসে এর পরে তিনি ২ দিনের জন্য কাতার গিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা দেশের জন্য গেছেন। দেশের মানুষের জন্য গেছেন। দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে গেছেন। তার যা প্রাপ্তি কাতারে জ্বালানিতে আমরা কল্পনাও করতে পারব না। চুক্তির বাইরেও অবিশ্বাস্য সংযোজন হয়েছে জ্বালানিতে। যেটি আমাদের জ্বালানির ব্যাপারে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে সাহায্য করেছে।’

বিএনপি শত্রুতা করছে অভিযোগ করে কাদের বলেন, ‘আপনার সঙ্গে রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকতে পারে। আপনি তার প্রতিপক্ষ হতে পারেন কিন্তু শেখ হাসিনার সঙ্গে আপনারা প্রকাশ্যে শত্রুতা করছেন। প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। প্রকাশ্যে তার অর্জনকে অস্বীকার করছেন।’

বিরোধী দল শুধু সমালোচনা করে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আজকে করোনা, বিশ্ব পরিস্থিতিতে কোনো সাজেশন দেওয়ার কেউ নেই। বিরোধীদল শুধু সমালোচনা করে বিরোধিতার খাতিরে। বাজেটের ব্যাপারেও একই। শত্রুতা করছে, প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখছে না। অপজিশন হবে প্রতিপক্ষ। অপজিশনের কাছে সরকার হবে প্রতিপক্ষ। আমরা প্রতিপক্ষ ভাবলেও তারা ভাবে শত্রু। এই শত্রুতার পরিবেশে বিরোধী দলের কাছে বাজেটের প্রশংসা, ভালো দিক একটাও খুঁজে পাওয়া যায় না। তাদের নেতাদের বক্তব্য শুনলাম। প্রশংসার বিষয়গুলো তারা প্রশংসা করতে ব্যর্থ হয়েছে।’

আর সিপিডি (সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ) তো আছেই, তারা বলেই যাচ্ছে। বলুক, কথা হচ্ছে যে, বলার মধ্যেও একটা বিষয়, বাস্তবসম্মত বিষয়গুলো স্বীকার করা উচিত। কোন পরিস্থিতিতে কোন পদক্ষেপটা নিতে হবে সেসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর যে দূরদর্শিতার পরিচয় দিচ্ছেন সেটি অবশ্যই সবার স্বীকার করা উচিত বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, উপ দফতর সম্পাদক সায়েম খানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/একে

আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪ বাজেট আলোচনা বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর