Wednesday 02 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ক্যানসার প্রতিরোধ ও নিরাময়ে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ বাড়ানোর আশা

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
৩ জুন ২০২৩ ২৩:২৬ | আপডেট: ৬ জুন ২০২৩ ১১:৫৫

ঢাকা: জীবন আসলে কতটা অনিশ্চিত হতে পারে, তা ক্যানসার আক্রান্ত রোগীরা বলতে পারেন। ক্যান্সার রোগের প্রতিরোধ ও চিকিৎসা দুটোই সম্ভব। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্বের বিষয় আছে। ক্যানসার প্রতিরোধ ও নিরাময়ে রাষ্ট্রের উদ্যোগ বাড়ানো উচিত।

শনিবার (৩ জুন) বিকেলে ক্যানসার সার্ভাইবার দিবস উপলক্ষে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ক্যানসার কমিউনিটি, বাংলাদেশ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সর্বমোট ১০জন ক্যানসার সার্ভাইবারকে সম্মাননা দেওয়া হয়। সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন—উদ্যোক্তা ও প্রশিক্ষিক ড. রুবিনা হোসেন, আইনজীবী ও ক্যানসার সংগঠক দেবাহুতি চক্রবর্তী, গৃহিনী ও ক্যানসার সংগঠক তাহমিনা গাফফার, চিকিৎসক মো. সালেহ উদ্দিন মাহমুদ তুষার, ব্যবসায়ী খুজিস্তা নূর ই নাহারিন মুন্নি, অনুবাদক ও লেখক অদিতি ফাল্গুনী, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শিক্ষক রফিকুল আনোয়ার রাসেল, শিক্ষক ড. জেসমিন পারভিন সীমা, সরকারি চাকুরিজীবী ও ক্যানসার সংগঠক নূর-এ-শাফী আহনাফ এবং ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান অ্যান্ড নিউট্রিশনিস্ট আনিকা তাহিসীন।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘যারা ক্যানসার রোগ থেকে সার্ভাইব করেছেন, তারা যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। আপনাদের কষ্ট অন্যদের বোঝানো যাবে না। আগে একসময় এই রোগে মৃত্যু অবধারিত ভাবা হতো। সেটা এখন কমেছে। তবে এখনও ব্যয়বহুল রয়ে গেছে। ৩২ বছর আগে আমার স্ত্রী এই রোগে মৃত্যুবরণ করছেন। তবে ক্যানসার রোগের চিকিৎসা এতদিনে অনেক উন্নতি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী’র সময় চিকিৎসাব্যবস্থা অনেক পিছিয়ে ছিল। ক্যানসার শনাক্ত হওয়ার পরদিনই পিজি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু চার সপ্তাহ পর অপারেশনের সিরিয়াল পেয়েছিলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্যানসারের ক্ষেত্রে যেমন কেয়ার দরকার; ঠিক তেমনই কমিউনিটিটাও দরকার। কেবল পরিবার নয়; পুরো সমাজ যেন এই বিষয়টি জানে, সে দিকটি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করব, ক্যানসার প্রতিরোধ ও নিরাময়ের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগটা বাড়বে।’

বাংলাদেশে ক্যানসার চিকিৎসায় প্যালিয়েটিভ কেয়ারের পথিকৃত অধ্যাপক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ জীবন যাপন করি। উপভোগ করতে পারি না। ক্যানসার কেয়ার কমিউনিটির মতো যারা এভাবে কাজ করে জীবনকে উদযাপন করছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা কেউই তো বিশাল কিছু করতে পারি না। ছোটো কাজগুলো মন দিয়ে, প্যাশন দিয়ে করতে পারছি কি না— সেটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

তিনি বলেন, ‘ক্যানসার হলো শ’দুয়েক রোগের সমাহার। সবগুলোকে মিলিয়ে নাম দেওয়া হয়েছে ক্যানসার। এর মধ্যে কিছু আছে অল্প চিকিৎসা পেলেই ভালো হয়ে যায়, কিছু আছে পাঁচ বছরে, কিছু আছে প্রথাগত চিকিৎসায় ভালো হয় না। আমরা অদ্ভুত এক অন্ধকার জায়গায় বসবাস করি। আমরা আরোগ্য লাভের কথা বলি। কিন্তু আরোগ্য হয় না, সে ব্যাপারে বলি না। আমার মতো অধ্যাপকরাও এখনও অসত্য-অশ্লীল বাক্য উচ্চারণ করি— আর কিছু করার নেই, বাড়ি নিয়ে যান। এটি করার কোনো নৈতিক, ধর্মীয়, আইনগত কোনো অধিকার নেই।’ এসময় তিনি মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের এ ধরনের কথা না বলার আহ্বান জানান। মেডিক্যাল সায়েন্সকে সোশাল সায়েন্সের সঙ্গে মিলিয়ে মানবিকতাকে রক্ষা করতে বলেন অধ্যাপক নিজাম।

ক্যানসার কেয়ার কমিউনিটি বাংলাদেশের উপদেষ্টা অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, ‘জীবন আসলে কতটা অনিশ্চিত হতে পারে, তার প্রমাণ এখানে উপস্থিত যোদ্ধারা। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমি আমার অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। এখনও মানুষ আক্রান্ত হবে, চিকিৎসা নিতে আসবে— এই পর্যায়ে আছি! কিন্তু পৃথিবী অনেকদূর চলে গেছে। ক্যানসার থেকে সুরক্ষা পাওয়ার সেবা থেকে শুরু হয়েছে।

সারাবাংলা/আরআইআর/পিটিএম

ক্যানসার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর