‘সিগন্যাল ত্রুটির কারণেই বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনা’
৪ জুন ২০২৩ ১৩:২৬
ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ জানা গেছে। সিগন্যালে ত্রুটির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। পুরোপুরি তদন্ত শেষ হলে দুর্ঘটনার কারণ আরও পরিস্কার হবে বলে জানিয়েছে দেশটির রেল কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার (২ জুন) বালেশ্বরে তিন ট্রেনের সংর্ঘষে নিহতের সংখ্যা ২৮৮ ছাড়িয়েছে। আর আহত হয়েছেন অন্তত ৯০০ জন। খবর ইন্ডিয়া টুডে ও আনন্দবাজার।
এক যৌথ প্রতিদেবনে বলা হয়, ‘আপ মেন লাইনে সবুজ সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ট্রেনটি সেই লাইনে ঢোকেইনি। ট্রেন ঢুকেছিল লুপ লাইনে। সেখানে আগে থেকে একটি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। তার সঙ্গে সংঘর্ষে করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। এর মধ্যে ডাউন লাইন দিয়ে বালেশ্বরের দিকে যাচ্ছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনেরও দু’টি বগি লাইনচ্যুত হয়।’ তবে মেন লাইনে সবুজ সিগন্যাল পাওয়া সত্ত্বেও করমণ্ডল এক্সপ্রেস কীভাবে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ল, তা এখনো পরিষ্কার নয়। এক্ষেত্রে সিগন্যাল দেওয়ায় কোনো ত্রুটি হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার পর রোববার (৪ জুন) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ‘দুর্ঘটনার মূল কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্ত শেষ হয়েছে এবং রেল নিরাপত্তা কমিশনার দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘রেলের নিরাপত্তা কমিশনার দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করছেন। পুরো তদন্ত প্রতিবেদন আসতে দিন। তবে আমরা ঘটনার কারণ এবং এজন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেছি, ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং পরিবর্তনের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই মুহূর্তে আমার উদ্ধার অভিযানকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।’
এর আগে, গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে চেন্নাইগামী যাত্রীবাহী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পাশের ট্র্যাকে পড়েছিল। হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ওপাশ থেকে আসা লাইনচ্যুত করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কোচগুলোকে ধাক্কা দেয়। এসময় আরও একটি মালবাহী ট্রেন সেখানে ছিল। ওই ট্রেনের সঙ্গেও করমণ্ডলের বগির ধাক্কা লাগে। এতে বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী বগি দুমড়েমুচড়ে যায়।
উল্লেখ্য, হাওড়া থেকে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে প্রতিদিন ভ্রমণ করেন বহু বাংলাদেশি। এ ট্রেন দুর্ঘটনায় অবশ্য এখনও হতাহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। এ কারণে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন একটি হটলাইন চালু করেছে। হোয়াটসঅ্যাপ হটলাইন নম্বরটি হলো +৯১৯০৩৮৩৫৩৫৩৩। দূর্ঘটনা কবলিত ট্রেনটিতে কোনো বাংলাদেশি থাকলে এই হটলাইনে জানানোর জন্য বলা হয়েছে। কলকাতায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারবর্গকে ১০ লাখ রুপি, গুরুতর আহতদের ২ লাখ এবং অল্প আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
সারাবাংলা/এনএস