পিটার হাসকে দেশ ও দলের পরিস্থিতি জানালেন জিএম কাদের
৫ জুন ২০২৩ ১১:৩৫
ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় পার্টি (জাপা) কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যে কোনো পদক্ষেপ নেবে দলটি। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য নির্বাচন পরিচালন যন্ত্রের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা চেয়ে আসছে জাপা। এক্ষেত্রে সরকারকে অব্যাহত চাপে রাখতে কোনো ছাড় দেবে একাদশ সংসদের প্রধান বিরোধীদলটি। এজন্য দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের কূটনৈতিক তৎপরতাও বাড়িয়েছেন।
গতকাল রোববার (৪ জুন) ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জিএম কাদের। প্রায় সোয়া ঘণ্টা ধরে জিএম কাদের ও পিটার হাস বৈঠকে কথা বলেন। এসময় মার্কিন দূতাবাসের তিনজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। জিএম কাদেরের সঙ্গে ছিলেন তার বিশেষ উপদেষ্টা মাসরুর মাওলা। বৈঠকে জাপার অভ্যন্তরীণ এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন জিএম কাদের।
এ প্রসঙ্গে দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘পিটার হাস জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে তার বাসায় চায়ের দাওয়াত দিয়েছিলেন। তাই জিএম কাদের পিটার হাসের গুলশান বাসভবনে যান। পিটার হাস ও জিএম কাদের প্রায় সোয়া ঘণ্টা ধরে কথা বলেন। নির্বাচন প্রসঙ্গে পিটার হাসের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচনী জোট করার ব্যাপারে জাপা এই মুহূর্তে ভাবছে না বলে জানিয়েছেন জিএম কাদের। জাপা নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে বলে জানান তিনি। জাপার ৩০০ আসনে প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে বলেও জানান জিএম কাদের।’
বৈঠকে উপস্থিত জিএম কাদেরের বিশেষ উপদেষ্টা মাসরুর মাওলার কাছে বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বৈঠকে পিটার হাস জাপার নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। জবাবে জিএম কাদের বলেছেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনমুখী দল। আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি আছে জাতীয় পার্টির। নির্বাচনী জোট করার বিষয় নিয়ে জিএম কাদের কিছুই বলেননি। পিটার হাসও তা জানতে চাননি।’
মার্কিন নতুন ভিসা নীতি নিয়ে পিটার হাসকে জিএম কাদের কিছু বলেছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মাসরুর মাওলা প্রথমে বলেন, ‘পিটার হাস জানতে চেয়েছিলেন।’ পরে তিনি বলেন, ‘না এ বিষয় কোনো কথাই ওঠেনি।’
বৈঠকে পিটার হাসের বডি ল্যাংগুয়েজে আপনার কী মনে হয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে মসরুর মাওলা বলেন, ‘পিটার হাসকে চিন্তিত মনে হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশে বিদেশি কূটনৈতিকদের মিশন বা অ্যাম্বেসি ৬৫টির বেশি। যে যার স্বার্থ নিয়েইতো এখনে কাজ করছে’।
মসরুর মাওলা জানান, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস জিএম কাদেরের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, সরকারের তরফ থেকে জাপার উপর কোনো চাপ আছে কি না? জবাবে জিএম কাদের বলেছেন, সরকারের তরফ থেকে কোনো চাপ নেই।
অপর একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, ‘জিএম কাদের আলোচনায় রওশন এরশাদের বিষয়টি টেনে আনেন।’ এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাসরুর মাওলা বলেন, ‘বৈঠকে বসলে নানান বিষয় কথা উঠে এবং আলোচনা হয়।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে জাপার অপর এক প্রেসিডিয়াম সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ে। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সময় কূটনৈতিক তৎপরতা বেশি ছিল। দলটির মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে কূটনৈতিকদের কাছে জাপার তেমন একটা গুরুত্ব নেই। তারপরও বর্তমান দেশি ও বিদেশি রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে পিটার হাস জিএম কাদেরকে চা পানের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। জাতীয় পার্টির জন্য এটাই বড় পাওনা।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/আইই