‘নির্বাচন আ.লীগের বাড়ির দাওয়াত নয় যে ডেকে খাওয়াব’
৭ জুন ২০২৩ ১৯:৪৫
ঢাকা: আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কাউকে আহ্বান করার সুযোগ নাই, কাউকে আহ্বান করা হয় নাই। এটা আওয়ামী লীগের বাড়ির দাওয়াত নয় যে, ডেকে এনে খাওয়াব। আলোচনার জন্য কাউকে বলা হয় নাই, কাউকে দাওয়াত দেওয়া হয় নাই।
বুধবার (৭ জুন) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ছয় ৬ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
এদিকে, মঙ্গলবার (৬ জুন) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত জনসভায় তিনি বলেছিলেন, ‘বিগত সময় যেমন জাতিসংঘ তারানকো সাহেবকে পাঠিয়েছিলেন। আমাদের দুই দলকে নিয়ে বসে একসঙ্গে মিটিং করেছেন। আজও প্রয়োজনে এই ধরনের জোরাজুরি না করে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি আসুক। আমরা বিএনপির সঙ্গে মুখোমুখি বসে আলোচনা করে দেখতে চাই- অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করার বাধা কোথায়? কীভাবে সেটা নিরসন করা যায়। এটা আলোচনার মধ্য দিয়েই সুরাহা হতে পারে। অন্য কোনো পথে নয়।’- এর একদিন পরেই আমু বললেন, ‘কাউকে দাওয়াত দেওয়া হয় নাই।’
৬ দফা দিবস আন্দোলনের সময়ও নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছিল বলে বুধবারের আলোচনা সভায় স্মরণ করিয়ে দেন বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, ‘আজও যেসব ষড়যন্ত্র তখনও তা হয়েছিল। নির্বাচনের বিরুদ্ধে বক্তব্য এসেছিল। ইয়াহিয়া খানের বিরুদ্ধে কোনো নির্বাচন করা যাবে না। কেউ বলেছিল, ভোটের বাক্সে লাথি মারো, ভোটের আগে ভাত চাই। কেউ বলেছিল, এলওফোর আন্ডারে নির্বাচন করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু পরিষ্কার বলেছিলেন, আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। আমি প্রমাণ করতে চাই, বাংলার মানুষের পক্ষে কথা বলার অধিকার কার আছে? বাংলার মানুষ কী চায়? ৬ দফাকে রেফারেন্ড হিসেবে ঘোষণা করে তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতা পান। আর এর মধ্য দিয়েই প্রমাণ হয়, বাংলার মানুষের প্রাণের দাবি একমাত্র ৬ দফা। এবং ৬ দফার ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে আসে স্বাধীনতা।’
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আজও সেই ষড়যন্ত্র নির্বাচন নিয়ে। এটা শুরু ২০১৩ সাল থেকে। সেই নির্বাচনে তখন জাতিসংঘ থেকে তারানকোকে আনা হয়েছিল। আমাদের সঙ্গে বৈঠকে আমরা প্রমাণ করেছিলাম, যদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হয় সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে। একটি দেশের জন্য সাংবিধানিক শূন্যতা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে নাই। তাই সেদিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। এবং ধারাবাহিকভাবে সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়েই জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করে বাংলাদেশেকে একটি জায়গায় আনতে সক্ষম হয়েছেন।’
বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ৩৫তম অর্থনীতির দেশ এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আজ আবার সেই নতুন বুলি। আজ আবার সেই ষড়যন্ত্র নির্বাচন নিয়ে। কাউকে আহ্বান করার সুযোগ নাই। কাউকে আহ্বান করা হয় নাই। এটা আওয়ামী লীগের বাড়ির দাওয়াত না যে, ডেকে এনে খাওয়াব। আলোচনার জন্য কাউকে বলা হয় নাই, কাউকে দাওয়াত দেওয়া হয় নাই।’
তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালের রেফারেন্স দিয়েই বলা হয়েছিল, সেই দিনও জাতিসংঘের সামনে আলোচনার ভিত্তিতে তোমরা আালোচনায় পরাজিত হয়েছিলে। তার মাধ্যমেই আমাদের নির্বাচন সুষ্ঠভাবে হয়েছিল। আজও সেই নির্বাচন হবে, সংবিধানের ভিত্তিতে। দেশের সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হতে দেওয়া যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ১৪ দলের পক্ষ থেকে মিটিং করে রেজুলেশন নিয়েছি। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন যে, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এবং সেটা তিনি করবেন। এই সংবিধানের ভিত্তিতেই সেটা হবে এবং সবাইকে সেই নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আগামীতে দেশের মানুষ তাদের ক্ষমতা কার কাছে দেবে সেটা নির্ধারণ করবে। সেই পরীক্ষায় অবর্তীণ হওয়ার জন্য বলা যায়, কিন্তু আলোচনার জন্য নয়।’
দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, সিমিন হোসেন রিমি, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি ও হুমায়ুন কবির। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম