নাম নিয়ে জাতীয় পার্টির ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে হট্টগোল

রাজশাহী: রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপনের ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় পদবি না বলায় হট্টগোলের ঘোষণা ঘটেছে। এ ঘটনায় একে অপরে নিজেদের মধ্যে বাকবিতাণ্ডায় জড়িয়ে যান। পরিস্থিতি সামাল দিতে এক পর্যায়ে তড়িঘড়ি করে ইশতেহার প্রকাশস্থল ত্যাগ করেন মেয়র প্রার্থী স্বপন।

শনিবার (১০ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজশাহী মহানগর জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন ইশতেহার ঘোষণার দিন ছিল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন- নগর জাতীয় পার্টির (জাপা) যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন মিন্টু। এসময় তিনি নেতাদের নাম ঘোষণা করেন। তবে নাম ঘোষণার সময়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উপদেষ্টা আবুল হোসেনের কেন্দ্রীয় পদ বলেননি সঞ্চালক মিন্টু। এনিয়ে নিজেদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়।

আবুল হোসেন দাবি করেন, ‘তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা। তার নাম বলেননি সালাউদ্দিন মিন্টু।’ সালাউদ্দিন মিন্টু বলেন, ‘আবুল হোসেন নিজেকে উপদেষ্টা দাবি করলেও তিনি কোনো পদে নেই। ইশতেহারে তার নাম ও পদবি কোনোটায় ছিল না। তাই বলিনি।’

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য শামসুদ্দিন রিন্টু বলেন, ‘আবুল হোসেনের কেন্দ্রীয় যে পদ, সেটি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উপদেষ্টা। এই পদটি বলেননি সঞ্চালক সালাউদ্দিন মিন্টু। এনিয়ে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমাদের সব সমাধান হয়েছে। আমরা সবাই একসঙ্গে বসে আছি।’

জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন এই ঘোষণা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘মিন্টু না হয় ভুল করেছে। এজন্য সে ক্ষমাও চেয়েছে। কিন্তু আবুল হোসেন ইশতেহার ঘোষণার সময় রাগ দেখিয়েছেন। এজন্য তিনি সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে পার্টি কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান।’

ইশতেহার ঘোষণার সময় লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে রাজশাহী সিটিকে বাংলাদেশের একটি মডেল সিটি হিসাবে গড়ে তোলাই আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। ইতিমধ্যে জাতীয় পার্টির নয় বছরের শাসনামলে আপনারা রাজশাহীর ব্যাপক উন্নয়ন দেখেছেন, আবারও নতুন সব স্বপ্ন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আপনাদের দোয়া, সহযোগিতা ও মূল্যবান ভোট প্রার্থনা করছি।’

ইশতেহারে তিনি উল্লেখ করেন, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের লক্ষে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের শিল্প কারখানা স্থাপন করা, সকল হোল্ডিং ট্যাক্স কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে এনে নগরবাসীর কষ্ট লাঘব, পাড়া মহল্লায় পরিকল্পিতভাবে উন্নতমানের রাস্তা এবং ড্রেন নির্মাণ, নাগরিকদের নিরাপত্তায় প্রত্যেক পাড়া-মহল্লার রাস্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে কেন্দ্রীয় সেলের মাধ্যমে সকল প্রকার অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে অপরাধ মুক্ত নগরী গড়ে তুলা হবে।

প্রত্যেক মসজিদের ইমাম-মুয়াজিনকে সম্মানজনক ভাতা প্রদান, প্রত্যেক মসজিদে সহিশুদ্ধ কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, প্রত্যেক মুসলিম ছেলে-মেয়েকে মসজিদে ফ্রি কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, প্রয়োজন অনুপাতে সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ, মন্দির, গির্জা সংস্কার, সিটি করপোরেশনের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে নিজস্ব অর্থায়নে একটি করে আধুনিক স্কুল ও কলেজ স্থাপন।

সিটি করপোরেশনের স্থায়ী গরীব-অসহায় গর্ভবতী নারী নাগরিকদের গর্ভকালীন সময় থেকে সন্তান প্রসব পর্যন্ত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে সিটি করপোরেশন থেকে ভাতা প্রদান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্টেশনসহ অন্যান্য সকল সেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে দালালমুক্ত করা হবে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপনের ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির রাজশাহী মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এম

টপ নিউজ