সচেতনতাই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করতে পারে: তাজুল ইসলাম
১০ জুন ২০২৩ ২০:১২
ঢাকা: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ ভূমিকম্পসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ। এর মধ্যে ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কোনো পূর্ব সর্তকতা জারির প্রযুক্তি এখনও আমাদের হাতে নেই। ফলে সচেতনতা ও সঠিক পরিকল্পনাই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করার মূল উপায়।
শনিবার (১০ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সিনেট হলে ‘১৮৯৭ সালের ১২ জুন ভারতীয় উপমহাদেশের মহাভূমিকম্প স্মরণে ভূমিকম্প ঝুঁকি নিরসনে প্রস্তুতি এবং সতর্কতা’ বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান এবং এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর ড. এ. এস. এম মাকসুদ কামাল।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ভূমিকম্প সহনীয় পরিকল্পিত নগরায়ন করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘শহরে আমাদের উন্মুক্ত ও সবুজ স্থান লাগবে, জলাধর ও স্কুল-কলেজ লাগবে।’
এ সময় তিনি ২০২২ সালের ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী সাত দশমিক পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় স্থাপনা তৈরির বাধ্যবাধকতা রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধে আমাদেরকে এ নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।’
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা ও কমিউনিটি ক্লিনিকসহ গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়নে অবিরাম কাজ করে চলেছেন উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এর ফলে শহরের ওপর চাপ কমবে এবং মানুষ নিজের এলাকায় থাকতে উৎসাহিত হবেন।’
সাম্প্রতিক লোডশেডিং বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন এবং শিল্পায়নের ফলে বাসা বাড়ি থেকে কলকারখানায় বিদ্যুতের চাহিদা যেমন বেড়েছে তেমনি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানির আকাশছোঁয়া মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আমাদেরকে সাময়িক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। অতীতের অনেক সমস্যার মত এবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বিদ্যুৎ সমস্যা কাটিয়ে ওঠার আশা রাখি।’
দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘২০১৬ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে ঢাকা শহরে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ৭২ হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হবে এবং দেড় লক্ষের ওপর মানুষ নিহত হবে। তাই ভূমিকম্প বিষয়ে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি ভূমিকম্পের সময় করণীয় বিষয়ে সবাইকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।’
ড. মো. এনামুর রহমান আরও বলেন, ‘২০৭১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ভূমিকম্প সহনীয় দেশ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার রয়েছে সরকারের। এ সময় তিনি যেসব স্থাপনা ভূমিকম্প সহনীয় করে গড়ে তোলা হয়নি সেগুলো সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নির্ধারিত মানদণ্ড অনুসরণ করে নতুনভাবে তৈরি করতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এ. এস. এম মাকসুদ কামাল ২৬ শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সালে তুরস্ক-সিরিয়াতে অনুষ্ঠিত বড় ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ উপস্থাপন করে বলেন, ‘ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশও ভূমিকম্পপ্রবণ ভৌগোলিক সীমারেখায় অবস্থিত তবে এই অঞ্চলে বড় ভূমিকম্প দীর্ঘ বিরতি নিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’
সেমিনারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি এবং ক্লাইমেট ও ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্স ক্লাবের উদ্যোগে “ছোট ছোট ভূমিকম্পের ঘটনা বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বাড়ায়” শীর্ষক বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করে আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এর ছাত্র ছাত্রীরা।
সারাবাংলা/আরএফ/একে