Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কারিগরি প্রশিক্ষণের নানা খাতে অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রস্তাব

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট 
১১ জুন ২০২৩ ১০:০৯

ঢাকা: উপজেলা পর্যায়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি প্রকল্পে নানা খাতে অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আপত্তি দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ‘উপজেলা পর্যায়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের সংশোধনীতে এমন প্রস্তাব দেয় কমিশন। সংশোধনী প্রস্তাবটি নিয়ে গত ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) আব্দুল বাকী।

বিজ্ঞাপন

কমিশন বলছে, প্রকল্পের যন্ত্রপাতি খাতে ৮৭৬ কোটি টাকা, আসবাবপত্রের জন্য ১০৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং শিক্ষা উপকরণ ১২ কোটি টাকা বাড়তি চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে অফিস সরঞ্জামে ২৩ কোটি ২০ লাখ টাকা, প্রশিক্ষণ ও কাঁচামালে ৩ কোটি টাকা, লাইন ও তার সাড়ে ৭ কোটি টাকা এবং টেলিযোগাযোগ অঙ্গে সাড়ে ৯ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব ব্যয় অত্যাধিক বলে মনে করেছে কমিশন।

পিইসি সভা সূত্র জানায়, পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের প্রধান ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান সভায় প্রকল্প বিষয়ে তুলে ধরেন। এসময় তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত প্রকল্পটির উপর শিল্প ও শক্তি বিভাগে ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পুনর্গঠিত ডিপিপিতে সম্পূর্ণ সরকারি অনুদানে গত বছরের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে।’

প্রকল্পের আওতায় ৭ হাজার ৩৯৯ কোটি ৬৪ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে ১০০টি উপজেলায় ১০০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবিত ১০০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র একইসঙ্গে নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এমটিবিএফএ বরাদ্দের নিশ্চয়তা না থাকায় পরবর্তীতে এই প্রকল্পের উপর শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্যের (সচিব) সভাপতিত্বে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর একটি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পর্যালোচনা সভায় প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম পর্যায়ে ৫০টি টিটিসির সংস্থান রেখে ১০০টি টিটিসির পরিবর্তে ৫০টি টিটিসি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পটি সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য পর্যালোচনা সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১০০টি টিটিসির পরিবর্তে ৫০টি টিটিসি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে টিটিসির সংখ্যা এবং বিভিন্ন অঙ্গের ব্যয় হ্রাস করে ৭ হাজার ৩৯৯ কোটি ৬৪ লাখ ২১ হাজার টাকার পরিবর্তে ৩ হাজার ৭১৮ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

সভায় জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক বলেন, ‘জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অন্যতম প্রধান ম্যান্ডেট হলো বিদেশের চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশি কর্মীদের বৈদেশিক কর্মসংস্থানে নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা ও তদারকি করা। এছাড়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দেশের সকল উপজেলায় টিটিসি নির্মাণের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ জন্য উপজেলা পর্যায়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘বৈদেশিক শ্রম বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি প্রকল্পটির অন্যতম লক্ষ্য। প্রকল্পটি ২০২২-২৩ অর্থ বছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তভুক্ত রয়েছে।’

সভায় জানানো হয়, বৈদেশিক শ্রম বাজারের চাহিদা অনুযায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রকল্পটির প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কারিকুলামের সঙ্গে লিংক করা প্রয়োজন। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও পটভূমিতে এ বিষয়ে উল্লেখ করা উচিত।

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) যুগ্ম সচিব আলিফ রুদাবা বলেন, ‘প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল তৈরির কার্যক্রম এনএসডিএ এর আওতার মধ্যে। প্রস্তাবিত ডিপিপির টিচিং অ্যান্ড লার্নিং ম্যাটিরিয়ালসের জন্য প্রস্তাবিত ২৪ কোটি টাকা থেকে কারিকুলাম প্রস্তুত বাবদ অর্থের সংস্থান ডিপিপি থেকে বাদ দেওয়া সমীচীন। সারা দেশের জন্য দক্ষতার একক স্ট্যান্ডর্ড সিলেবাস তৈরির উপর গুরুত্ব দিয়ে এনএসডিএ কাজ করছে। এরমধ্যে এনএসডিএ থেকে ১৯১টি  কমপিটিটেনন্সি স্ট্যান্ডার্ড (সিএস) তৈরি করা হয়েছে।’

সভায় আরও বলা হয়, প্রকল্পটির পরিকল্পনায় একাধিক ক্রয় পদ্ধতি রাখা হয়েছে। বিষয়টি সভায় অবহিত করা হয়েছে। ডিপিপিতে ক্রয় পদ্ধতি হিসাবে ডিপিএম (সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি) রাখা যাবে না বলে সভায় মতামত দেওয়া হয়। একাধিক ক্রয় পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্টভাবে একটি ক্রয় পদ্ধতি উল্লেখ করার পক্ষেও মত দেওয়া হয়। এছাড়া যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র কিনতে ‘ওটিএম’ উল্লেখ করতে হবে বলেও মত দেওয়া হয়েছে।

সভায় আরও বলা হয়, সিংগেল সোর্স সিলেকশনের ক্ষেত্রে দু’জন পরামর্শক প্রস্তাব করা হয়েছে। এ পরামর্শকরা প্রকল্পে কী কাজে সহযোগিতা করবে তা জানতে চাওয়া হয়। জনমাস উল্লেখ করাসহ কিউসিবিএস পদ্ধতিতে সেবা কেনার বিষয়টি ঠিক হবে বলে সভায় মত দেওয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/জেজে/এমও

অতিরিক্ত ব্যয় কারিগরি প্রশিক্ষণ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর