Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যমুনা নদী ছোট করার পরিকল্পনা নেই, হাইকোর্টকে পাউবো

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১১ জুন ২০২৩ ২১:৩১

ফাইল ছবি

ঢাকা: দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী এবং প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস যমুনা নদীকে ছোট করার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে আদালতকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। রোববার (১১ জুন) প্রতিষ্ঠানটির আইন উপদেষ্টা অরবিন্দ কুমার রায় আদালতকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

এরপর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট এ বিষয়ে আদেশের জন্য সোমবার (১১ জুন) দিন ধার্য করে দেন।

পরে আইনজীবী অরবিন্দ কুমার রায় জানান, যমুনা নদী সংক্রান্ত যে প্রজেক্ট পরিকল্পনা করা হয়েছে তাতে যমুনা নদী ছোট করার কোনো পরিকল্পনা নেই। এই নদী নিয়ে শত বছরের একটা ডেল্টা প্ল্যান রয়েছে। সেইখানে নদীটিকে নিয়ে হয়তো কোনো পরিকল্পনা থাকতে পারে। যেখানে নদীতে ড্রেজিং এবং ক্যানেলাইজড করা। কিন্তু আমরা আদালতকে দেখিয়েছি বর্তমানে নেওয়া পরিকল্পনায় যমুনা নদীকে ছোট করার কোনো পরিকল্পনা নেই।

তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ও বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর নদী খনন ও সংস্কারের যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে তা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এখনো এই প্রকল্পের অনুমোদন হয়নি। এই প্রকল্পটি এখন প্রিম্যাচিউরড (অকালপক্ক)। আদালত আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। এ বিষয়ে আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেছেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসদে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অরবিন্দ কুমার রায়।

এর আগে গত ২৮ মে জনস্বার্থে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকল নথি তলব করেন।

আদালতের ওই নির্দেশনা অনুসারে রোববার (১১ জুন) আদালতে প্রকল্পের নথি উপস্থাপন করে পাউবো।

গত ১১ মার্চ ‘যমুনা নদী ছোট করার চিন্তা’ শিরোনাম দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন যুক্ত করে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট করা হয়।

মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন আইনজীবী।

যমুনা নদী ছোট করার প্রকল্প নেওয়ার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ -এর বিধি ২ অনুসারে অসদাচরণ করেছেন। তাই বিধি ৩ অনুসারে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে।

সেদিন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ বিদান অনুসারে এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা অসদাচরণ করেছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ এনে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়েছিলাম। এরপর গত ২১ মে হাইকোর্ট প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের তালিকা চান। সেই সঙ্গে প্রকল্পটি চূড়ান্ত করা হয়েছে কিনা এবং প্রকাশিত প্রতিবেদনটির সত্যতা কতটুকু, তা জানতে চেয়েছিলেন।

এরপর ২৮ মে শুনানি শেষে হাইকোর্ট প্রকল্পের নথি তলব করেন।

গত ১১ মার্চ ‘যমুনা নদী ছোট করার চিন্তা’ শিরোনাম দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যমুনা নদীকে ছোট করতে চায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। আপাতত দেশের দুটি স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে গ্রোয়েন বাঁধ দিয়ে নদী ছোট করা হবে।

যমুনা নদীকে ছোট করার পেছনে যুক্তি তুলে ধরে পাউবো বলছে, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে যমুনা নদী চওড়া হচ্ছে। নদী কোথাও কোথাও ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার প্রশস্ত হচ্ছে। এতে নদীভাঙন বাড়ছে।

পাউবো মনে করে, এত চওড়া নদীর প্রয়োজন নেই। এটি সংকুচিত করে সাড়ে ৬ কিলোমিটারে নামিয়ে আনা হবে। যমুনা নদী ছোট করলে দুটি সুফল পাওয়ার কথা বলছে পাউবো। একটি হলো, নদীর ভাঙন কমবে। অন্যটি বিপুল পরিমাণে ভূমি পুনরুদ্ধার করা যাবে।

নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীকে ছোট করার চিন্তা নির্বুদ্ধিতার। যাদের মাথা থেকে এসব চিন্তা আসে, তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। কোনো যুক্তিতেই যমুনাকে সংকুচিত করা যাবে না। এটি বিশ্বে এক অনন্য নদী। এ নদীকে নিয়ে যেকোনো ধরনের পরীক্ষা যেন সাবধানে করা হয়। তবে বিস্তারিত সমীক্ষা না করে গ্রোয়েন প্রযুক্তির প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এনইউ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে হামলার হুমকি!
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫

সালমান শাহ্‌ স্মরণে মিলাদ মাহফিল
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:০৩

নাফ নদীর মোহনায় ২ শিশুর মরদেহ উদ্ধার
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৯

সম্পর্কিত খবর