‘দেশবিরোধী-খুনি-মৌলবাদী চক্র যেন ক্ষমতায় না আসতে পারে’

ঢাকা: উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং আওয়ামী লীগকে ফের ক্ষমতায় আনতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ বাদে অন্য কেউ ক্ষমতা এলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। দেশবিরোধী, খুনি, মৌলবাদী চক্র, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি যেন ক্ষমতায় না আসতে পারে। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

সোমবার (১২ জুন) দুপুরে গণভবনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এক সভায় এসব কথা বলেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়, জনগণের জীবনমান উন্নত হয়, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশে এগিয়ে যাচ্ছে, বিদেশে বাংলাদেশের সম্মান-মর্যাদা অনেক বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যে পরিবর্তনটা দৃশ্যমান, তা আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় আছে বলেই সম্ভব হয়েছে। আমরা মানুষের মন জয় করেই ক্ষমতায় এসেছি। আর ক্ষমতায় এসে ধারাবাহিক উন্নয়ন করে যাচ্ছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর ৭৫ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত যে অন্যায়-অত্যাচার হয়েছে আমরা তার প্রতিশোধ নিইনি। আমরা অন্যায়ের জবাব দিচ্ছি উন্নয়ন করে। আমাদের সরকার প্রতিটি জেলায় পরিকল্পিত উন্নয়ন করেছে। ফলে আজ গ্রামে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা একেবারে নাই বললেই চলে। সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে না পারলে গত সাড়ে ১৪ বছরে যে উন্নয়ন তার সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে।’

আওয়ামী লীগ সরকার যে উন্নয়ন করেছে সেগুলো বেশি করে প্রচার করতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন যেন অব্যাহত থাকে এবং আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনা দরকার- সেটাও মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। উন্নয়নের কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি মানুষের আস্থা বিশ্বাস ও অর্জন করতে হবে।’

সামনের জাতীয় নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত দলকে আরও শক্তিশালী, সু-সংগঠিত করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। এ প্রসঙ্গে তিনি দলে দুঃসময়ের নেতাকর্মীরা যেন অবহেলিত না হয় সে বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিতে নেতাদেরও নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দুঃসময়ের নেতাকর্মীরাই দলের দুঃসময়ে এবং যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার একমাত্র শক্তি সংগঠন। সাংগঠনিক শক্তি না থাকলে বড় কোনো অর্জন সম্ভব হয় না। তাই দলকে সুসংগঠিত করতে হবে তৃণমূল থেকে।’

বাংলাদেশকে নিয়ে নানা চক্রান্ত শুরু হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই চায় না আমাদের দেশটি এগিয়ে যাক।’ এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক চক্রান্তের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যাদের উসকানিতে বিএনপি আজ লাফাচ্ছে তারা কিন্তু তাদের ক্ষমতায় বসাবে না। তারা শুধু তাদের ব্যবহার করবে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে বারবার ধ্বংস করার অনেক চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সে চেষ্টা কখনোই সফল হয়নি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজ মানুষের মন জয় করে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত হয়েছে।’

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরাফাতকে আপনাদের হাতে তুলে দিলাম। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে সকলে মিলে কাজ করবেন।’

বিএনপির নির্বাচন মানে ১০ হোন্ডা ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা- এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনো ভোটারবিহীন নির্বাচন করেনি। ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি।’

এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান সাধারণ সম্পাদক শেখ ফজলে শামস পরশ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা-১৭ আসনের নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাতসহ ঢাকা-১৭ আসনের অন্তর্গত বিভিন্ন থানা ওয়ার্ড ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

আওয়ামী লীগ টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা