ফাতেমা পিবিআইয়ের পালিত মেয়ে— জেরায় বাবুলের আইনজীবী
১২ জুন ২০২৩ ২১:২৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তাদের বাসার গৃহসহকারী মনোয়ারা বেগম বাপ্পী ওরফে ফাতেমাকে জেরা শেষ হয়েছে। বাবুলের আইনজীবী দাবি করেছেন, ফাতেমা এ মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পালিত মেয়ে হিসেবে বানোয়াট সাক্ষ্য দিয়েছেন, যা জেরার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন।
সোমবার (১২ জুন) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিনের আদালতে ফাতেমাকে জেরা করেন বাবুল আক্তারের আইনজীবী কফিল উদ্দিন।
রোববার ফাতেমা আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে জানান, ২০১৩ সালে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের বাসায় কাজে যোগ দেন তিনি। বাবুল বদলি হয়ে চট্টগ্রামে আসার পর তাকেও নিয়ে আসা হয়। কক্সবাজারে বাবুলের বাসায় তার বান্ধবী সন্তান নিয়ে মাঝে মাঝে আসতেন। বাবুলের ব্যক্তিগত কক্ষে বসে তারা কথা বলতেন, তবে ওই কক্ষে অন্য কারও ঢোকার অনুমতি ছিল না। চট্টগ্রামের বাসায় আসার পর বান্ধবীকে নিয়ে বাবুল ও মিতুর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। দু’জন আলাদা কক্ষে ঘুমাতেন।
জেরা শেষে বাবুল আক্তারের আইনজীবী কফিল উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বলেছি, ফাতেমা আদালতে যা সাক্ষ্য দিয়েছে, সব পিবিআইয়ের শেখানো। তাকে আমরা তার বাড়ির আশেপাশ সম্বন্ধে, তার এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারের নাম, বাড়ি থেকে চট্টগ্রামে আসতে বাস ভাড়া কত- এসব জিজ্ঞেস করেছি। সে কিছুই জানে না বলেছে। বাবুল আক্তারের বিদেশি বান্ধবী ও তার ছেলের ছবি কোথায় দেখেছে, এমন প্রশ্ন করলে সে পিবিআই তাকে দেখিয়েছে বলে জানায়। আমরা বলেছি যে, সে পিবিআইয়ের পালিত মেয়ে। তবে সেটা সে অস্বীকার করেছে।’
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মহানগর পিপি আব্দুর রশীদ সারাবাংলাকে জানান, ফাতেমাকে জেরা শেষ হওয়ার পর আদালত ২৬ জুন পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবি করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সাতজনকে আসামি করে আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে। ১০ অক্টোবর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। চলতি বছরের ১৩ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ৯ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম সাক্ষী হিসেবে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের সাক্ষ্য দেন।
অভিযোগপত্রে প্রধান আসামি করা হয়েছে মিতুর স্বামী বাবুল আক্তারকে। অভিযোগপত্রে আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু এবং শাহজাহান মিয়া। অভিযোগপত্রের আসামিদের মধ্যে এখন শুধু মুসা পলাতক আছেন।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম