সরকার সাপের মুখে চুমু খাচ্ছে: গণতন্ত্র মঞ্চ
১২ জুন ২০২৩ ২২:৪৬
ঢাকা: গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেও সরকারি দল আতঙ্কিত হয়ে উঠছে। গণতান্ত্রিক ধারার দল থেকে আওয়ামী লীগ নিপীড়নকারী দলে পরিণত হচ্ছে। সরকার দ্বিচারী ভূমিকা গ্রহণ করেছে; তারা সাপের মুখে চুমু খাচ্ছে, আবার ব্যাঙয়ের মুখেও চুমু দিচ্ছে।
সোমবার (১২ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ সমাবেশ নেতারা এ কথা বলেন।
নেতারা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আতঙ্কে ভুগছে। দিন দিন তারা বেসামাল হয়ে পড়ছে। গণতান্ত্রিক ধারার রাজনৈতিক দল থেকে তারা এখন নিপীড়নমূলক দলে পরিণত হচ্ছে। গণতন্ত্র মঞ্চের ঢাকা-দিনাজপুর রোডমার্চে বিভিন্ন জেলায় তারা যেভাবে হামলা চালিয়েছে, শান্তি সমাবেশের নামে উসকানি সৃষ্টি করেছে তা তাদের স্বৈরতান্ত্রিক গণবিরোধী চরিত্ররেই বহিঃপ্রকাশ।‘
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্য এর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – জেএসডি’র সহ সভাপতি সিরাজ মিয়া ও গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া প্রমুখ।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্য এর সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার , জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামালউদ্দিন পাটোয়ারী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন।
সমাবেশে সভার সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘প্রশাসনের সহায়তায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা গণতন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চের বহরে হামলা চালিয়েছে। নেতা-কর্মীদের আহত করেছে। শুরু থেকেই সরকারি দল বিভিন্ন জেলায় তথাকথিত শান্তি সমাবেশ ডেকে তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের পরিচয় দিয়েছে। তারপর রোডমার্চ মানুষের মন জয় করেছে।’
তিনি ভয়াবহ লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ সংকটের সমাধানের দাবিতে আগামী ১৯ জুন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় অভিমুখে মঞ্চের বিক্ষোভ সফল করার আহ্বান জানান।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সরকারি দল ও প্রশাসনের হামলা, আক্রমণ, পথে পথে বাধা ও মাস্তানির পরও গণতন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চকে তারা বন্ধ করতে পারেনি। রোডমার্চ আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে মানুষকে জাগিয়ে তুলছে।’
তিনি বলেন, ‘এ সরকারের দিন শেষ। আমরা এই সরকারকে বিদায় দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র-সরকার প্রতিষ্ঠা করব।’
সাইফুল হক বলেন, ‘নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়ে সরকারি দল সাপের মুখে চুমু খাচ্ছে আবার ব্যাঙয়ের মুখেও চুমু দিচ্ছে। জামায়াত নিয়ে সরকার দ্বিচারিতা শুরু করেছে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে আন্দোলনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা।’
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারার রাজনৈতিক দল হিসাবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটেছে। কিন্তু দমন নিপীড়ন চালিয়ে ও নানা রাজনৈতিক খেলায় সরকার এবার আর শেষ রক্ষা করতে পারবে না।’
হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘এবারকার আন্দোলন সরকার ও শাসনব্যবস্থ পরিবর্তনের। এ সংগ্রামের এবার এদেশের জনগণ বিজয়ী হবে এবং সংস্কারের মধ্যে দিয়ে জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠা করবে।’
সিরাজ মিয়া বিদ্যমান গণ আন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানের পথে নিয়ে যাওয়ার ডাক দেন।
বাচ্চু ভূইয়া গণতন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চে হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচার করার দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে