Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মসজিদ-মাদরাসা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের দান আয়করমুক্ত রাখার দাবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ জুন ২০২৩ ১৬:৩৯

ঢাকা: বাংলাদেশের সমস্ত মসজিদ-মাদরাসা এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠানসমূহে দাতাদের দান সম্পূর্ণভাবে আয়করমুক্ত রাখতে আগের আইন চালু অথবা নতুন বিধি-বিধান প্রণয়ন করে তা কার্যকর করার দাবি উঠেছে। পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত দ্বীনি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, দ্বীনি শিক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব আইন ও বিধি-বিধান বাতিল বা সংশোধনের জানিয়েছে কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি উত্থাপন করেন কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী (পীর সাহেব দেওনা)।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আশেকে মুস্তফা, মাওলানা আবদুল বাসেত খান সিরাজী, মাওলানা জুবায়ের আহমদ, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মুস্তাকিম বিল্লাহি হামিদী, মুফতি দ্বীন মুহাম্মদ আশরাফ, মাওলানা আবদুল বাতেন কাসেমী, মাওলানা কাজী মুঈনুদ্দীন আহমদ, মাওলানা মেরাজুল হক মাজহারী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ, মাওলানা আব্দুল হক হক্কানী, মুফতি মুহিব্বুল্লাহ ফরহাদ, মাওলানা এনামুল হক আইয়ূবী, মুফতি নজরুল ইসলাম, মাওলানা আবু তাসনীম উমাইর, এ্যাড. মতিউর রহমান, কারী আল আমীন ও মুফতি হেদায়াতুল্লাহসহ দেশের বিভিন্ন জেলার শতাধিক কওমি মাদরাসার মুহতামিম, মসজিদের ইমাম-খতিব ও ওয়ায়েজরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পীর সাহেব দেওনা অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিশ্বের অধিকাংশ দেশে দাতব্য ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের দান-অনুদান সম্পূর্ণ আয়করমুক্ত। যেহেতু আমাদের দেশের মসজিদ-মাদরাসা এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের সাহায্য-সহযোগিতায় পরিচালিত হয়, এমতাবস্থায় দ্বীনি প্রতিষ্ঠানসমূহের দাতারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে দান-খায়রাত করতে পারেন এ জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় দান-অনুদান আয়করমুক্ত রাখার পূর্ববর্তী বিধানটি নবায়ন করে কার্যকর করা জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে কওমি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষকদের মানন্নোয়নের স্বার্থে কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের জন্য সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা, প্রশাসন, সুশীল সমাজ শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানানো হয়।

শিক্ষক পরিষদের সংবাদ সম্মেলন থেকে কওমি মাদরাসার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা, আলিয়া মাদরাসায় দ্বীনি পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার শিক্ষার্থীদের জন্য বুনিয়াদি দ্বীনি শিক্ষার ব্যবস্থা, মসজিদভিত্তিক শিশু শিক্ষা চালু, সমাজসেবায় কওমি আলেমদের ভূমিকা, সন্ত্রাস দমন ও মাদকের প্রসাররোধে ইমাম-খতিবদের অবদান এবং সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয় প্রতিকারে ওয়াজ-নসিহতের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘জীবন ব্যবস্থার সর্বক্ষেত্রে কোরআন-সুন্নাহ অনুসরণের মধ্যমপন্থা নীতি অনুসরণ এবং সাধারণ শিক্ষার ক্ষেত্রে ধর্মীয় শিক্ষা পাঠ্যক্রম এবং অনুশীলন, জ্ঞানের সকল শাখা-প্রশাখাকে ইসলামিকরণ, ঈমান-ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো চিহ্নিত করে তা বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলন থেকে সাধারণ শিক্ষার মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত দ্বীনি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, দ্বীনি শিক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব আইন ও বিধি-বিধান বাতিল বা সংশোধন করা, কওমি মাদরাসার স্বকীয়তা ও স্বতন্ত্রতা বজায় রাখা, উচ্চতর দ্বীনি শিক্ষার প্রয়োজনে ভারতে যাওয়ার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা উন্মুক্ত ও সহজতর করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, শিক্ষা কমিশন এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে এক তৃতীয়াংশ সদস্য হিসেবে আলেমদের সম্পৃক্ত করা, নৈতিক অবক্ষয়রোধে অশ্লীলতা বন্ধে প্রয়োজনীয় কার্যকরী আইন প্রণয়ন, ওয়াজ-নসিহতের সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা দূর, কোরবানির চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিধার্রণের ব্যবস্থা এবং মাওলানা মামুনুল হকসহ এ যাবৎ আলেম-উলামাদের নামে দায়েরকৃত সকল প্রকার মামলা প্রত্যাহার এবং কারাবন্দি আলেমদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করা হয়। সেইসঙ্গে বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী সৈয়দ মুফতি ফয়জুল করিমের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের গ্রেফতারেরও দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।

সারাবাংলা/জেআর/ইআ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর