ঢাকা: দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২১১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। যা এ বছর একদিনে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তির রেকর্ড। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৭৪ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৩৭ জন।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ ছাড়া এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ডেঙ্গুতে দেশে মোট ২৭ জনের মৃত্যু হলো।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৭০৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৫৭৫ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১২৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
সারা দেশে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৬০১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ২ হাজার ৭৩৬ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৬৫ জন।
হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৮৭১ জন। ঢাকায় ২ হাজার ১৩৮ এবং ঢাকার বাইরে ৭৩৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
চলতি মৌসুমের ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
১০ জুন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশিদ আলম বলেন, ‘চলতি বছর এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের প্রায় প্রত্যেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিন্ড্রোমে তাদের মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে আবারও আশঙ্কাজনক হারে ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ছে। এই অবস্থায় হাসপাতালে তুলনামূলক রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও ডেঙ্গু চিকিৎসায় দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চলতি বছরে ঢাকার বাইরে তেমন রোগি ভর্তি নেই। বেশিরভাগ রোগী রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসাপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে ঢাকায় সর্বোচ্চ ১৪৭ জন ডেঙ্গু রোগী মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সারাদেশে রোগী সংখ্যা কম থাকলেও আমরা দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রেখেছি। এ বিষয়ে সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে সংশোধিত গাইডলাইন প্রত্যেক হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোর চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক, ওষুধসহ সবকিছু সরবরাহ করা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা ক্লিনিক্যালি তাদের মৃত্যুর কারণ জানান চেষ্টা করেছি। আমাদের কাছে থাকা তথ্যনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মৃতদের প্রায় প্রত্যেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিন্ড্রোমে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও অন্য কারণ থাকতে পারে। যা জানার জন্য ময়নাতদন্ত প্রয়োজন। কিন্তু তা পরিবার অনুমোদন দেবে না। আর এটি সাধারণ প্র্যাকটিসও নয়।’
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, গতবছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৮১ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বাইরে ছিলেন ২৩ হাজার ১৬২ জন।