গ্যাং কালচারে শিশু-কিশোররা হানাহানিতে লিপ্ত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
১৩ জুন ২০২৩ ২১:০৭
ঢাকা: বিভিন্ন বাহারি নামে অনলাইন ও অফলাইনভিত্তিক গ্যাং গঠন করে বিপথগামী শিশু-কিশোররা মারামারি ও হানাহানিতে লিপ্ত হচ্ছে বলে সংসদে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি জানান, বর্তমান এক শ্রেণির বিপথগামী শিশু-কিশোরের মধ্যে গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। ওই সব শিশু-কিশোরদের গ্যাং কালচারের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত করে সুস্থ ও সুন্দর জীবন ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এ সংক্রান্ত লিখিত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সরকারি দলের সদস্য আবুল কালাম আজাদ।
জবাবে মন্ত্রী জানান, গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়া অপরাধপ্রবণ ও বিপথগামী শিশু-কিশোরদের চিহ্নিত করে পিতা-মাতা ও অভিভাবকদের তত্ত্বাবধানে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম চলছে। সুনির্দ্দিষ্ট কোনো অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এ জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল দিচ্ছে।
একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, স্থানীয়ভাবে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও অনলাইনভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করে সক্রিয় কিশোর গ্যাংগুলোর তথ্য সংগ্রহ করে তাদের নিবৃত্ত করার কার্যক্রম চলছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা শিশু-কিশোরদের মধ্যে অপরাধের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য সভা-সমাবেশের আয়োজন করে থাকে।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দেশের তরুণ ও যুব সমাজকে ইয়াবা ও অন্যান্য মাদক থেকে রক্ষার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। এই ঘোষণা বাস্তবায়নে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ অন্যান্য সংস্থা ২০২২ সালে এক লক্ষ ৩১১টি মামলা দায়ের ও এক লাখ ২৪ হাজার ৭৭৫ জনকে অবৈধভাবে মাদক কারবারিকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯০-কে যুগোপযোগী করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) প্রণয়ন করা হয়। এ আইনে মাদক অপরাধের সর্বোচ্চ শান্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তাছাড়া মাদক ব্যবসার মূল হোতা ও গডফাদারদের যথাযথ শাস্তি বিধান করে এ আইনে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের বিধানটি সংযুক্ত করা হয়। শুধু মাদক কারবারীই নয় এ আইনে মাদক অপরাধের পৃষ্ঠপোষক, প্ররোচনাদানকারী ও সহযোগীদের বিরুদ্ধেও কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনের যথাযথ প্রয়োগে সর্বমহল সোচ্চার হলে সমাজে মাদক অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব হবে।
ভবিষ্যতেও বাস্তবতার নিরিখে আইনটি সংশোধন করার সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জাবাবে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান জানান, বিশ্বের প্রায় ১১৫টি দেশের ২০ হাজার ৯৮৮ জন নাগরিক ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রজেক্ট, শিল্পকারখানা, এনজিও, আইএনজিও এবং বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত রয়েছে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৬ হাজার ৭৫ জন চাইনিজ নাগরিক ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৮৭৬ জন ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে