‘চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নিরিবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করছি’
১৩ জুন ২০২৩ ২৩:৫৯
ঢাকা: আগামীতে দেশে মানসম্মত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে উল্লেখ করে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রত্যেকটি দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে যেমন দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, তেমনি জ্বালানির দামও বেড়েছে। স্বাভাবিক জীবযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এরপরও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নিরিবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ রেখেছি।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ সব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে সাধারণ আলোচনায় আরও অংশ নেন সরকারি দল আওয়ামী লীগের মো. আব্দুস শহীদ, ওমর ফারুক চৌধুরী, আব্দুস সালাম মূর্শেদী, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, দীপংকর তালুকদার, নূরুন্নবী চৌধুরী, এনামূল হক, আনোয়ারুল আবেদীন খান, জাফর আলম ও মো. সাহিদুজ্জামান এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু।
জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটকে স্মাট বাংলদেশ গঠনের দিকে অগ্রসর হওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ পদক্ষেপ বলে দাবি করেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাজেটে একদিকে যেমন সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বাড়ানো হয়েছে, তেমনি টেকসই উন্নয়নের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে সামনে রেখে বাজেট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-জ্বালানি সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।’
জ্বালানি খাতে তিনটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে সরকার অগ্রসর হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সেগুলো হলো রিল্যাইবেলিটি, এফোর্ডেবিলিটি এবং নিরবচ্ছিন্ন পাওয়ার এনার্জি পাওয়া। এ জন্য কেবল অর্থসংস্থান হলে হবে না; টেকনোলজি গুরুত্বপূর্ণ। সারা বিশ্বের প্রতিটি দেশের জ্বালানি ব্যবস্থা কেমন হবে, তা নতুনভাবে চিন্তা করছে। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যাচ্ছে। কারণ তাদের প্রচুর জায়গা আছে।’
তিনি আরো বলেন,‘ বাংলাদেশের মতো দেশে এটা করা কঠিন। স্টোরেজ ব্যাটারি করতে গেলে খরচ আরও বেড়ে যাবে। তবে সরকার চেষ্টা করছে অন্তত বিদ্যুৎ উৎপাদনে ১০ শতাংশ যেন নবায়নযোগ্য জ্বালানি করা যায়। সেটা মাথায় রেখে নেপাল থেকে ৭০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চুক্তির জন্য সবকিছু তৈরি করা হয়েছে। সঞ্চালন লাইন করে আরেকটি দেশের ভেতর দিয়ে এভাবে বিদ্যুৎ আনতে পাঁচ থেকে আট বছর সময় লাগে। কিন্তু এখানে জ্বালানি খরচ ২০ বছর একই থাকবে, এ কারণে আনা হচ্ছে।’
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, ‘সরকারের নানা পদক্ষেপের পরও বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে আছে, নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পেলেও অনেককে ভৌতিক বিল দিতে হচ্ছে। গ্যাস-পানির ক্ষেত্রেও একই অবস্থা, ভৌতিক বিল আসছে। ওইসব অফিসগুলোতে গেলে মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হয়। এটা দেখার কেউ নেই।’
সাবেক চিফ হুইপ মো. আব্দুস শহীদ বলেন, ‘সংসদীয় কমিটিতে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি যথাসময়ে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সমাপ্ত করতে পারলে সুবিধা আগে থেকেই পেতাম এবং ব্যয়ও বাড়তো না। কিন্তু অধিকাংশ প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় ও বাজেট বাড়াতে হয়। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে মন্ত্রণালয়গুলোকে প্রকল্প বাস্তবায়নে সময়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের দেশ স্মার্ট, অর্থনীতিও স্মার্ট। তাহলে কেন প্রকল্পগুলো স্মার্ট হবে না?’
সংসদ সদস্য দীপঙ্কর তালুকদার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য এলাকাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যে কারণে উন্নয়ন হয়েছে। পাহাড়ে কুকি-চীন জঙ্গিরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। সেনাবাহিনী তাদের অপতৎপরতা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। উন্নয়নের প্রধান বাধা হলো অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি। এটা বন্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম