আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট বসাতে বাধা নেই

ফাইল ছবি

ঢাকা: রাজধানীর আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর বিষয়ে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট বসাতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

বুধবার (১৪ জুন) বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

আদালতে সিটি করপোরেশনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ।

এর আগে রাজধানীর আফতাবনগর কোরবানির পশুর হাট না বসাতে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

এরপর চেম্বার আদালত হয়ে বিষয়টি আজ আপিল বিভাগে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে।

গত ২২ মে বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আফতাব নগরে কোরবানির পশুর হাট না বসাতে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ এ আদেশ দেন।

রুলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আফতাব নগরে কোরবানির পশুর হাট বসানোর জন্য ইজারা/বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা, তা জানতে চাওয়া হয়।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান ভূমি কর্মকর্তা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন হাউজিং ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

এর আগে গত ১৮ মে জনস্বার্থে স্থানীয় বাসিন্দা শেখ মাহমুদ উজ্জ্বলের পক্ষে রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ।

রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান ভূমি কর্মকর্তা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন হাউজিং ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে বিবাদী করা হয়।

এর আগে গত ২ মে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (স্থানীয় সরকার বিভাগ) পক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহে আলমের সই করা সম্পত্তি বিভাগ ইজারা/বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র ঘোষণা করে।

দরপত্রে ঈদুল আজহার দিনসহ পাঁচ দিন গরুর হাটের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে প্রথম পর্যায়ে দরপত্র বিক্রি ১৫ মে, আর ১৬ মে সাড়ে ১২টা থেকে বেলা আড়াইটা পযর্ন্ত। এভাবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পযার্য়ে দরপত্র বিক্রির পর ১৯ জুন পযর্ন্ত দরপত্রের বাক্স ও খাম খোলার পর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সর্বোচ্চ দর দাতাকে সিডিউল দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এরপর উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবর আফতাব নগরের আবাসিক এলাকায় কোরবানি ঈদে গরু-ছাগলের হাট না বসাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে শেখ মাহমুদ উজ্জ্বল আবেদন করেন।

সেই আবেদনে বলা হয়, জহিরুল ইসলাম সিটিতে (আফতাব নগর) বসবাসরত লোকজন ঈদুল আজহার আগে ও পরে প্রায় এক মাস অস্থায়ী হাট বসানোর কারণে ব্যাপকভাবে মানবেতর জীবন যাপন করেন। যেহেতু ওই এলাকায় চলাচলের প্রধান এই সড়কের ওপর অস্থায়ী গরু-ছাগলের হাট বসে বলে (আফতাব নগর) সেখানে বসবাসরত নাগরিকদের যাতায়াতে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ সময় কোনো লোক অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করা সম্ভব হইয়া উঠে না। কেউ মারা গেলেও তার মরদেহ বহন করা দূরুহ হয়ে পড়ে।

এ ছাড়াও গরু-ছাগলের হাট বসানোর কারণে আবাসিক এলাকাটির বসবাসের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। গরু-ছাগলের নানাবিধ বর্জ্যে এলাকাটির পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষিত হয়।

এ ছাড়া প্রধান সড়কটিও জহিরুল ইসলাম সিটি (আফতাব নগর) ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে সারা বছরেই প্রধান সড়কটিতে খানাখন্দ থাকায় জহিরুল ইসলাম সিটির (আফতাব নগর) বসবাসরত সব নাগরিকদের যাতায়াতে বেশ অসুবিধা হয়।

পরে গত ১১ মে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার সচিব, উত্তর সিটি কর্পোরেশন মেয়র, রাজউকের চেয়ারম্যানসহ ছয় জনকে আইনি নোটিশ পাঠানো।

নোটিশের পর কোনো সাড়া না পেয়ে গত ১৮ মে ঈদুল আজহায় আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এনইউ