মে মাসে সড়কে ৪৬৮ প্রাণহানি, বেশি দুর্ঘটনা মোটরসাইকেলে
১৪ জুন ২০২৩ ১৮:৩২
ঢাকা: গত মে মাসে সড়ক, রেল ও নৌপথে ৫৬৪টি দুর্ঘটনায় ৫২৭ জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৭৭৯ জন। এর মধ্যে ৪৯৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৮ জন নিহত ও ৭৬৯ জন আহত। এছাড়া ১৮৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৮১ জন নিহত ও ১১৪ জন আহত হয়েছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ পর্যবেক্ষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। বুধবার (১৪ জুন) সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মে মাসে ৪৯৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৮ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছেন ৭৬৯ জন। একই সময় রেলপথে ৫০টি দুর্ঘটনায় ৪৩ জন নিহত ও ৭ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, ৮ জন আহত ও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৫৬৪টি দুর্ঘটনায় ৫২৭ জন নিহত এবং ৭৭৯ জন আহত হয়েছেন। এ সময়ে ১৮৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৮১ জন নিহত ও ১১৪ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৭ দশমিক ২৯ শতাংশ, নিহতের ৩৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ ও আহতের ১৪ দশমিক ৮২ শতাংশ। ওই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ঢাকা বিভাগে, ১২১টি দুর্ঘটনায় ১১০ জন নিহত ও ১৫১ জন আহত হয়েছেন। আর সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে সিলেট বিভাগে, ২৪টি দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত ও ৬২ জন আহত হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তির মধ্যে ১২ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ১৮২ জন চালক, ৯১ জন পথচারী, ৫৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭৫ জন শিক্ষার্থী, ১৩ জন শিক্ষক, ৭৮ জন নারী, ৬৩ জন শিশু, ৪ জন সাংবাদিক, ৫ জন চিকিৎসক, ২ জন মুক্তিযোদ্ধা এবং ৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। আর নিহতদের মধ্যে ৫ জন সেনাবাহিনীর সদস্য, ১৩৭ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৮৩ জন পথচারী, ৫৩ জন নারী, ৪৫ জন শিশু, ৩৯ জন শিক্ষার্থী, ৩০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭ জন শিক্ষক, ৪ জন চিকিৎসক, ২ জন সাংবাদিক, ২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
একই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৬৮৭টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৮ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৪ দশমিক ১৬ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ বাস, ১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৩ দশমিক ২০ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬ দশমিক ১১ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
এসব দুর্ঘটনার ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৫ দশমিক ৩২ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ বিবিধ কারণে, শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ গাড়ির চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং ১ দশমিক ৪১ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ২৬ দশমিক ৮১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ৪১ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১ দশমিক ৪১ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এনএস