চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ‘একাত্তরের পরাজিত সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার অংশ হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র ভাংচুর করেছে।’
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র ভাংচুরের প্রতিবাদে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যেগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মনোবল ভাঙ্গা বলেই বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুর করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নানা ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় বসতে না পেরে ভাঙা মনোবলের বিএনপি এখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙেছে। বিদেশী প্রভুদের ইশারায় দেশের উন্নয়নে প্রতিহিংসায় ভোগা দেশবিরোধী অপশক্তিকে বাংলাদেশের মানুষ ৭১ সালে যেভাবে পরাজিত করেছিল ২০২৪ সালেও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না।’
‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে আগুন সন্ত্রাস,মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি,সরকারীচ ও ব্যক্তিগত সম্পদ ভাংচুরের রাজনীতি এই চট্টগ্রামে করলে চট্টগ্রামে জনসাধারণ ঘৃণ্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শক্ত হাতে প্রতিহত করবে।’
চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি সুজিত দাশ, দেলোয়ার হোসেন ফরহাদ, মনোয়ার জাহান মনি, আজাদ খান অভি, আবদুর রশিদ লোকমান, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাসুদ খান, দেবাশীষ আর্চায্য ও প্রচার সম্পাদক তোসাদ্দেক নূর চৌধুরী তপু।
জড়িতদের শাস্তির দাবি চসিক কাউন্সিলরদের
চট্টগ্রামের জামাল খান মোড়ে সড়কের পাশে দেয়ালজুড়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর জীবন-ও কর্মের আলোকচিত্র নিয়ে তৈরি ম্যুরালসহ ৫০ টি চিত্রকর্ম ভাংচুরের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররা।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মেয়র ও কাউন্সিলররা এই ভাংচুরের জন্য বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠন যুবদল, ছাত্রদলকে দায়ী করেন এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিপ্লবী জীবনের ইতিহাসকে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে জামালখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ ৫০টি চিত্রকর্ম স্থাপন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশকে উন্নয়নের স্বর্ণশিখরে নিয়ে যাচ্ছেন তখন দুষ্কৃতিকারীরা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুরের মাধ্যমে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।’
‘বঙ্গবন্ধু কেবল কোন রাজনৈতিক দলের নেতা নন, তিনি আমাদের জাতির পিতা। তার সাথে দেশের স্বাধীনতার অস্তিত্ব জড়িত। মূলত যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না তারাই আমাদের স্বাধীনতার চেতনার উৎস বঙ্গবন্ধুর ম্যূরাল ভাংচুরের মতো ঘৃণ্য কাজ করেছে। জাতির পিতার প্রতি এই অবমাননামূলক ধৃষ্টতার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।’
সাংসদ নোমান আল মাহমুদের বিবৃতি
বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুরের ঘটনায় বড় অশনি সংকেত হিসেবে চিহ্নিত করে ও তীব্র নিন্দা জানিয়ে গণমাধ্যেমে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী–চান্দগাঁও) আসনের সাংসদ ও নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) বিকেলে যুব দলের একটি মিছিল থেকে জামাল খান থেকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুরকে একটি বড় অশনি সংকেত। জামাত শিবিরকে সামনে রেখেই বিএনপি মাঠে নেমেছে। এরা বাংলাদেশের অস্তিত্বকে মুছে দিতে চায়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রের ইশারায় বাংলাদেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্ত চলছে।’
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের সরাসরি অ্যাকশনে যেতেই হবে এবং সবচেয়ে বড় শক্তি আমাদের ঐক্যের শক্তি। বিএনপি জামাতের সাথে বাংলাদেশ বিরোধী কিন্তু আন্তর্জাতিক আতাঁত হচ্ছে। এটা ৭৫ সালেও হয়েছে। এবার যারাই করুক তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করেছি।’
‘তাদেরকে কোনভাবে ছাড় দেওয়া হবে না। বিএনপি জামাত আবার যদি অগ্নি সংযোগ লুন্ঠন, সন্ত্রাস ও রাহাজানী করে তাহলে তাদেরকে আর রাজপথে নামতে দেওয়া হবে না।’