Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাসিক নির্বাচন: নবীন-প্রবীণে লড়াই জমে উঠেছে

মাহী ইলাহি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৬ জুন ২০২৩ ১৮:৩৫

প্রচারণায় ব্যস্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, ছবি: সারাবাংলা

রাজশাহী: রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন আগামী ২১ জুন। তাই প্রার্থীদের এখন নিঃশ্বাস ফেলার সময় নেই। ভোটের প্রচারণা চালাতে পারবেন আর মাত্র ৩ দিন। নির্বাচনী প্রচারণাও বেশ জমে উঠেছে। নির্বাচন শেষে কে হাসবেন তার হিসাব কষছেন ভোটাররা।

মেয়র প্রার্থী পদে চারজন ছিলেন। এর মধ্যে গত সোমবার (১২ জুন) রাতে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুরশিদ আলম ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থীও সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলে ভোট বর্জন করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তবে ভিন্ন কথা বলেছেন জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ার সুপ্ত। তিনি জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ খুব সুন্দর আছে। প্রচারণা ও গণসংযোগও খুব সুন্দরভাবে চালানো যাচ্ছে। কোনো বাধাও আসছে না।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এর আগেও দুইবার নগরপিতা নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত জাতীয় নির্বাচনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন সাইফুল ইসলাম স্বপন। এবার তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে রাসিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মেয়র পদে। এছাড়া এবারই প্রথম নির্বাচন করছেন জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ার সুপ্ত।

এই নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারে মুখর ওয়ার্ডগুলো। মেয়র প্রার্থীদের চেয়েও বেশি আলোচনা কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে। কে কোন ওয়ার্ডে জিতবেন-হারবেন এসব নিয়েই চলছে বিশ্লেষণ।

রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, রাসিকের ১ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর রজব আলীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আবদুল বাতেন বাবু।

বিজ্ঞাপন

২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের প্রতিদ্বন্দ্বী মোখলেসুর রহমান ও নোমানুল ইসলাম। এ ওয়ার্ডে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামাল হোসেনের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে নতুন প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের।

৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহুল আমিন টুনুকে শক্ত চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন আশরাফুল ইসলাম বাবু ও ফজলে কবির টুটুল।

৫ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরু। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন হামিদুল ইসলাম সুজন ও কেএম ইফতেখার হামিদ।

৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকু ও মনিরুল ইসলাম।

এদিকে, ৭ নম্বর ওয়ার্ডটি বেশ স্পর্শকাতর। এই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির সঙ্গে যুবলীগ নেতা জহিরুল ইসলাম রুবেলের তুমুল লড়াই হতে পারে। গত নির্বাচনে এই দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতা ঘটে। এবারও এটি নগরীর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডগুলোর একটি। চলমান প্রচারেও দুই প্রার্থীর সমর্থকরা কয়েকবারই মুখোমুখি হয়েছেন।

৮ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর এসএম মাহবুবুল হক পাভেল ও জানে আলম খান জনি।

৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রাসেল জামান ও সাইফুল্লাহ শান্ত। এর আগেও তারা উপনির্বাচনে মুখোমুখি হয়েছিলেন।

১০ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চার জন। প্রাথীরা হলেন মো. টনি, আমিনুল ইসলাম, রাজ্জাক আহমেদ রাজন ও আব্বাস আলী সরদার।

১২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম বাবু। তার প্রতিদ্বন্দ্বী শিহাব চৌধুরী।

১৩ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর আব্দুল মমিন। অপর প্রার্থী মাসুদ রানা।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনার, মো. টুটুল ও মুরাদ আলী।

১৫ নম্বর ওয়ার্ডে মোস্তাফিজুর রহমান পরশ ও রেজাউন নবী আল মামুনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান কাউন্সিলর আবদুস সোবহান লিটন।

১৬ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর বেলাল আহমেদ, আজিম শেখ ও সৈয়দ মুন্তাজ আহমেদ।

১৭ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর শাহাদাত আলী শাহুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আইয়ুব আলী, মনিরুজ্জামান ও শামিম রায়হান।

১৮ নম্বর ওয়ার্ডে বেশ কয়েকজন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন। বর্তমান কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম পঁচার সঙ্গে জুয়েল রানা টিটু, মো. ভুট্টু, জহুরুল ইসলাম ও মোখলেসুর রহমান মিলন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে ধারণা করছেন ভোটাররা। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন। তার শক্ত প্রতিপক্ষ আশরাফ হোসেন বাবু ও নুরুজ্জামান টিটু। ইতোমধ্যে এ ওয়ার্ডে বাবু ও সুমনের সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

২১ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর নিযাম উল আযীম ও গোলাম ফারুক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতোমধ্যে এ ওয়ার্ডে নিযাম ও ফারুকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে কয়েকটি অভিযোগও জমা দিয়েছেন ফারুক। এই ওয়ার্ডে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

২২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান কাউন্সিলর আবদুল হামিদ টেকন। নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন মির্জা পারভেজ রিপন ও সাইফুল আজিজ সাজু।

২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন চৌধুরী ও মেহেদি হাসান রনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

২৪ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর আরমান আলীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শাখাওয়াত হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম ও আতিকুর রহমান।

২৫ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর তরিকুল ইসলাম পল্টুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আলিফ মাহমুদ লুকেন।

২৬ নম্বর ওয়ার্ডে মাসুদ রানা, আখতার আহমেদ বাচ্চু, মখলেসুর রহমান খলিল ও মহিউদ্দিন বাবু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই ওয়ার্ডের নির্বাচন বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন ভোটররা।

২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর আনোয়ারুল আমিন আজবের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন নুরুল হুদা সরকার ও মনিরুজ্জামান মনি।

২৮ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর আশরাফুল হাসান বাচ্চুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, সান্নান সরদার ও একেএম জামান জুয়েল।

২৯ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর মাসুদ রানার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গিয়াস উদ্দীন, সাইদুর রহমান সাঈদ, একলাস হোসেন লাকি ও আবু জাফর বাবু।

৩০ নম্বর ওয়ার্ডে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। বর্তমান কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম পিন্টুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন আলাউদ্দিন ও আবদুস সামাদ।

এসব ওয়ার্ডে এবার নবীন ও প্রবীণ কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নবীন প্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই আছেন শক্ত অবস্থানে। তবে অনেক প্রার্থীর নামে অভিযোগ আছে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা, কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসী লালন, স্বৈরাচারী কায়দায় সেবা পরিচালনা ছাড়াও নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের। ভোটারদের মন পেতে প্রার্থীরা ঘরে ঘরে গিয়ে পুনরায় ভোট চাইছেন।

সারাবাংলা/এমই/এনএস

রাজশাহী সিটি করপোরেশন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর