নির্বাচনে তো বাধা হবেই, পরিণতিও ভয়াবহ হবে: মির্জা আব্বাস
১৬ জুন ২০২৩ ১৮:৫৯
ঢাকা: ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বর্তমান সংবিধানের আলোকে নির্বাচন আয়োজন করা হলে বিএনপির পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া তো হবেই, পরিণতিও হবে ভায়বাহ’— এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
শুক্রবার (১৬ জুন) বিকেলে আজিমপুর স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার সামনে আয়োজিত পদযাত্রাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশ আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি গত কয়েকদিন যাবৎ একটা কথা শুনছি। সেটা হলো— এই সরকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে, এই সরকার বিভিন্ন সরকারি পদ-পদবীকে উন্নীত করে এক প্রকার ঘুষ দিচ্ছে। এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যে যা খুশি তাই করছে। আইনশৃঙ্খলা, নিয়ম-কানুন— সব শেষ করে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা প্রশাসনে বিভিন্ন জায়গায় রদবদল করছে। রদবদলের মাধ্যমে তারা প্রশাসন সাজাচ্ছে। এই সাজানো প্রশাসন দিয়ে তারা নির্বাচন করে নেবে। এত সহজ হবে না বোধ হয়। এত সহজ হবে না। বাংলার মানুষ বারবার প্রহসনের নির্বাচন মেনে নেবে না। নির্বাচনে তো বাধা হবেই। পরিণতিও হবে ভয়াবহ।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাংলার মানুষ আজকে তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ মিছিল-মিটিংয়ের মাধ্যমে জানান দিতে চায়, শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে চায়। কিন্তু আপনারা (আওয়ামী লীগ) পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে ‘অশান্তি’ মিছিল করেন। এটা কিন্তু ভালো লক্ষণ নয়। এটা আপনাদের পতন ত্বরান্বিত করবে।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘লালবাগের মানুষ বর্তমান সরকারকে পছন্দ করে না। সারাবাংলাদেশের মানুষও আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে না। সুতরাং যত লম্বা লম্বা কথা বলেন, যত কথাই বলেন, আপনারা (আওয়ামী লীগ) আর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুর খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, মীর শরাফত আলী সপু, লালবাগের সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার মীর আশরাফ আলী আজম প্রমুখ।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে আজিমপুর থেকে বিএনপির পদযাত্রা লালবাগ, চকবাজার, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশ দিয়ে আরমানিটোলা মাঠ পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়। পদযাত্রায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
পদযাত্রার শুরুতে মির্জা আব্বাসসহ বিএনপির সিনিয়র নেতাদের দেখা গেলেও কিছুদূর যাওয়ার পর তাদের আর দেখা যায়নি। অসুস্থজনিত কারণে মির্জা আব্বাস আগেই বলে রেখেছিলেন, তিনি বেশি সময় পদযাত্রায় থাকতে পারবেন না। উদ্বোধন করে দিয়ে বাসায় ফিরবেন।
বিএনপির এই পদযাত্রা উপলক্ষ্যে আজিমপুর, লালবাগ, পলাশী, চকবাজার এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন করা অতিরিক্ত পুলিশ।
চৌরাস্তার মাথায় সমাবেশ মঞ্চ তৈরি করায় প্রায় দুই ঘণ্টার জন্য আজিমপুর, ঢাকেশ্বরী মন্দির ও বকশিবাজার সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিএনপির কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী সড়কের মাঝখানে অবস্থান নিলে জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল ব্যহত হয়।
সারাবাংলা/এজেড/এনএস