আমরা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি: আতিউর রহমান
১৬ জুন ২০২৩ ২১:১৮
ঢাকা: বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, জাতি হিসেবে এ রকম চ্যালেঞ্জিং সময় আমাদের সামনে ১৯৭১ সালে একবার এসেছিল। এবার অর্থনৈতিকভাবে সেরকম একটি সময়ের মধ্যে আমরা আছি। আমরা এখন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।’
শুক্রবার (১৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ইআরডিএফবি) আয়োজনে ‘সমৃদ্ধ ও সুষম বাংলাদেশ নির্মাণ: বাজেট ২০২৩-২০২৪’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ও ইআরডিএফবির সভাপতি অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা ধীরে ধীরে জ্ঞানভিত্তিক একটি সমাজের দিকে এগোচ্ছি। আমাদের অর্থনীতিও জ্ঞানভিত্তিক হবে। শুধু ডিজিটাল না, ধীরে ধীরে এই অর্থনীতি অনেক বেশি স্মার্ট এবং জ্ঞানভিত্তিক হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা সকলেই জানেন একটি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি। জাতি হিসেবে এ রকম চ্যালেঞ্জিং সময় আমাদের সামনে ১৯৭১ সালে েএকবার এসেছিল। এবার অর্থনৈতিকভাবে সেরকম একটি সময়ের মধ্যে আমরা আছি। এটি সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। এবারের চ্যালেঞ্জের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন ভূ-তাত্ত্বিক বাস্তবতা এবং সারা পৃথিবীর টালমাটাল জিও-পলিটিক্যাল টেনশন। এই জায়গাটাতে আমাদের নিজস্ব অবস্থান, নিজেদের শক্তি, আমরা যে ধীরে ধীরে একটি শক্ত পাটাতনের ওপর বাংলাদেশের অর্থনীতিকে দাঁড় করিয়েছি- এই সত্যি কথাটি জনগণকে বলতে হবে। শুধু ভালো কাজ করলেই যথেষ্ট নয়, জনগণ যেন মনে করে, আমরা ভালো কাজ করছি। সুতরাং এই বিষয়গুলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমার মনে হয়, এ ধরনের উদ্যোগ খুবই প্রাসঙ্গিক। এ কারণে আমি উদ্যোক্তাদের বিশেষ ধন্যবাদ জানাই।’
ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘এবারের বাজেট আপৎকালীন বাস্তবতার নিরীখে তৈরি হয়েছে। এটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার একটি বাজেট। আমাদের শুধু ভূ-তাত্ত্বিক চ্যালেঞ্জ নয়, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট ও চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। সেই সংকট মোকাবেলার জন্য আমরা কী রকম বাজেট হয়েছে। সেই বিষয়ে আমাদের জানা উচিত।’
‘অস্বীকার করবার উপায় নেই, বাংলাদেশে আমরা কতটা সাফল্য অর্জন করেছি; এর জন্য তিনটি খাত বা শক্তি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এগুলো হলো কৃষি, রফতানি ও রেমিটেন্স। এই তিন খাত আমাদের শক্তির উৎস এবং আমাদের অর্থনীতিকে শক্ত পাটাতনের ওপর দাঁড় করানোর জন্য; এই তিনটি শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। গত দেড় দশকে আমরা যে অর্জন করেছি, এই অর্জনের পেছনে এই তিনটি খাতের ভূমিকা এককথায় অনন্য।’
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও ইআরডিএফবির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, স্বাগত বক্তব্যে দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপ-উপাচার্য ও ইআরডিএফবি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান, বিশেষ অতিথির হিসেবে বক্তব্যে দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান এবং রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আক্তার।
আলোচনাসভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়া প্যাসেফিক ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
২০২২ সালের ১ অক্টোবর এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি) প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন নিয়ে সংগঠনটি কাজ করছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি এখন পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে পাঁচটি সেমিনার সফলভাবে আয়োজন করেছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে
