ঢাকা: দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে শুক্রবার (১৬ জুন) সকাল ৮টা থেকে শনিবার (১৭ জুন) সকাল ৮টা পর্যন্ত ৪৭৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। যা এ বছর একদিনে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তির রেকর্ড। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪০২ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৭৫ জন।
এছাড়া এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ডেঙ্গুতে দেশে চলতি বছর এখন পর্যন্ত মোট ৩৩ জনের মৃত্যু হলো।
শনিবার (১৭ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট এক হাজার ১৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৯১১ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ২২৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
সারা দেশে এখন পর্যন্ত চার হাজার ৬০৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় তিন হাজার ৫৭৫ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন এক হাজার ২৮ জন।
হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিন হাজার ৪৩২ জন। ঢাকায় দুই হাজার ৬৩৭ এবং ঢাকার বাইরে ৭৯৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এর আগে, চলতি মৌসুমের ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর।
১০ জুন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশিদ আলম বলেন, ‘চলতি বছর এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের প্রায় প্রত্যেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিন্ড্রোমে তাদের মৃত্যু হয়েছে। দেশে আবারও আশঙ্কাজনক হারে ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ছে। এই অবস্থায় হাসপাতালে তুলনামূলক রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও ডেঙ্গু চিকিৎসায় দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।‘
তিনি আরও বলেন, ‘চলতি বছরে ঢাকার বাইরে তেমন রোগী ভর্তি নেই। বেশিরভাগ রোগী রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগী সংখ্যা কম থাকলেও আমরা দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রেখেছি। এ বিষয়ে সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে সংশোধিত গাইডলাইন প্রত্যেক হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোর চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক, ওষুধসহ সবকিছু সরবরাহ করা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা ক্লিনিক্যালি তাদের মৃত্যুর কারণ জানান চেষ্টা করেছি। আমাদের কাছে থাকা তথ্যনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মৃতদের প্রায় প্রত্যেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিন্ড্রোমে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও অন্য কারণ থাকতে পারে। যা জানার জন্য ময়নাতদন্ত প্রয়োজন। কিন্তু তা পরিবার অনুমোদন দেবে না। আর এটি সাধারণ প্র্যাকটিসও নয়।’
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী গতবছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৮১ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বাইরে ছিলেন ২৩ হাজার ১৬২ জন।