ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে চলছে কাজ, দুর্ভোগ বাড়াতে পারে গরুর হাট
২০ জুন ২০২৩ ০৮:৩০
সিরাজগঞ্জ: ঈদ এলেই যানবাহনের চাপ বাড়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে। বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ২২ জেলার যানবাহন চলাচল করে সিরাজগঞ্জের মহাসড়ক দিয়ে। এতে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের দু’টি লেনে দাঁড়িয়ে থাকে হাজার হাজার গাড়ি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগ পোহাতে হয় ঘরমুখো মানুষের। এবারও একই দুর্ভোগে পড়তে হতে পারে এই মহাসড়কে যাতায়াতকারীদের। তবে এবার যানজটের মূল কারণ হয়ে দাঁড়াবে মহাসড়কের পাশের গরুর হাটগুলো। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে গরুর হাটগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাইওয়ে পুলিশ ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে।
সিরাজগঞ্জের মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কের ৪ লেনের উন্নয়নকাজ চলছে। সড়কের দু’পাশে মাটিভরাট করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হলেও সেগুলো সংস্কার করা হচ্ছে। কোনও কোনও স্থানে কাজ চলার কারণে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন অন্য লেনে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঈদ যাত্রা উপলক্ষে ইতিমধ্যে খানাখন্দগুলো সংস্কার করে দেওয়া হচ্ছে। খুলে দেওয়া হবে রাস্তার বিভিন্ন লেন ও ব্রিজ।
এই মহাসড়কের পাবনা নগরবাড়ি মহাসড়কের পাশে রয়েছে ৪টি এবং ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে রয়েছে একটি গরুর হাট। পাবনা নগরবাড়ি মহাসড়কের উল্লাপাড়ায় উপজেলার রয়েছে জেলা সবচেয়ে বড় বোয়ালিয়া গরুর হাট, মহাসড়ক থেকে একটু ভেতরেই রয়েছে গ্যাসলাইন হাট ও বড়হর হাট, শাহজাদপুর উপজেলা রয়েছে তালগাছি গরুর হাট। ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশেই রয়েছে চান্দাইকোনা গরুর হাট।
এসব গরুর হাটে এলোমেলো ভাবে গরু রাখা, গরু আনা-নেওয়ার জন্য পিকআপ-ভটভটিগুলোর দখলে থাকে এই মহাসড়ক। মহাসড়কের পাশে গরুর হাট বসানোর কারণে দীর্ঘক্ষণ ধরে যাতায়াত ও চলাচলের ক্ষেত্রে যানবাহন ও সাধারণ জনগণকে চরম জনদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উল্লাপাড়ার বোয়ালিয়া গরুর হাটের ইজারাদার সোবহান ফকির বলেন, ‘আমাদের মূল গরুর হাটটা লাগে স্কুল মাঠে, কিন্তু ঈদের আগে গরুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় জায়গা সংকটের কারণে কিছু গরু এবং গরু আনা নেওয়ার জন্য পিকআপ-ভটভটিগুলো সড়কের পাশ দিয়ে রাখা হয়।’
হাটে অতিরিক্ত হাসিল নেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হাসিল ৪০০ টাকা। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে আমার এই হাটে প্রায় ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেছেন। তাদের জন্যই অতিরিক্ত ১০০ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে।’
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম বদরুল কবির বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা স্বস্তিরদায়ক রাখতে আমরা ইতিমধ্যে গরুর হাটের ইজারাদার ও মহাসড়কের পাশে হোটেল মালিকদের সঙ্গে নিয়ে দুই দফা আলোচনা করেছি। মহাসড়কের পাশে যে গরুর হাটগুলো রয়েছে তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মহাসড়কের ওপরে পার্কিং বা গরু ওঠা নামানো করা যাবে না, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হাসিলের চেয়ে বেশি মূল্য নেওয়া যাবে না, গাড়ির ইন ও আউট পয়েন্ট আলাদা রাখতে হবে।‘
তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে জেলা পুলিশ ও সাসেকের কর্মকর্তা এবং এর সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আশ্বাস দিয়েছেন ২০ জুনের মধ্যে মহাসড়কের সংস্কারের কাজ শেষ করবেন এবং আমরা বাঁশ বেঁধে লেইন আলাদা করে দেবো। আগামী ২৫ জুন থেকে আমাদের হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।’
সারাবাংলা/এমও