রাত পোহালেই রাজশাহী ও সিলেট সিটিতে ভোট
২০ জুন ২০২৩ ২২:২৩
ঢাকা: রাত পোহালেই রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। গত ২৬ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী বুধবার (২১ জুন) শেষ ধাপে এই দুই সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে, ২৫ মে গাজীপুর এবং ১২ জুন বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
আর ২১ জুন সকাল ৮টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে রাজশাহী ও সিলেট সিটিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এ ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে নির্বাচনি সামগ্রী। নির্বাচনের দিন প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সরাসরি ভোট পর্যবেক্ষণ করবে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে, পাঁচ সিটিতে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশ নিলেও দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি বরাবরের মতো অংশ নিচ্ছে না। সিটি নির্বাচনগুলোতে সবদলের অংশগ্রহণ না থাকলেও গাজীপুর, বরিশাল ও খুলনায় অনেকটা শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। কিন্তু ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম ছিল। অবশ্য বরিশালে এক মেয়র প্রার্থীর উপর হামলার পর রাজশাহী-সিলেটের ভোট বর্জন করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
রাজশাহী সিটি নির্বাচন
রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫৫টি, ভোটকক্ষ রয়েছে ১ হাজার ১৫৩টি। এর মধ্যে ১৪৮ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এক হাজার ১৫৩টি কক্ষে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। রাজশাহী সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন। আর নারী এক লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ছয় জন। রাজশাহী সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড ৩০টি এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের জন্য ওয়ার্ডের সংখ্যা ১০টি।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), জাতীয় পার্টির মো. সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. মুরশিদ আলম (হাতপাখা), জাকের পার্টির মো. লতিফ আনোয়ার (গোলাপ ফুল)। ১০টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৪৬ জন এবং ৩০টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে, নিরাপত্তার জন্য রাজশাহীর প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন এবং প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবেন। এছাড়াও পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল ফোর্স ৩০টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ১০টি, রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স ৬টি, র্যাবের ১৬টি টিম এবং ৭ প্লাটুন বিজিবি মাঠে থাকবে। নির্বাচনে ৪৩ জন নির্বাহী হাকিম ও ১০ জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করবেন। রাসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।
সিলেট সিটি নির্বাচন
সিলেট সিটি নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্রেরে সংখ্যা ১৯০টি, ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩৬৭টি। মোট ভোটর ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩টি। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬০ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৭ জন। এ ছাড়াও ছয় জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন। নির্বাচনে মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা ৪২টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৪।
এদিকে, সিলেট সিটিতে মোট ১৯০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টিই ঝুঁকিপূর্ণ। নগরের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের ১৮টির সবক’টি ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেজন্য সব ভোটকেন্দ্র ও কক্ষে সিসি ক্যামেরা থাকছে। এবারের নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আট জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা), জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু (ঘোড়া), স্বতন্ত্র মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট), মো. শাহ জাহান মিয়া (বাস), মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ)।
এদিকে, নিরাপত্তার জন্য সিলেটের প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন এবং প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবেন। এছাড়াও পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল ফোর্স ৪২টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ১৪টি, রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স ৬টি, র্যাবের ২২টি টিম এবং ১০ প্লাটুন বিজিবি মাঠে থাকবে। নির্বাচনে ৫৯ জন নির্বাহী হাকিম ও ১৪ জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করবেন। সিসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম
