ঢাকা: রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ক্যান্সারসহ সব দীর্ঘমেয়াদী ও জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য একটি জাতীয় তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়ে দেশে ক্যান্সার রোগীদের নিয়ে কাজ করা ৮টি সংগঠন। একইসঙ্গে দেশে বিদ্যমান বিশেষায়িত ও ক্যান্সার হাসপাতালগুলোকে আরও আধুনিক এবং রোগীবান্ধব করার দাবি জানানো হয়।
বুধবার (২১ জুন) বিকেলে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো ৮টি সংগঠনের এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। সংগঠনগুলো হলো— ক্যান্সার কেয়ার কমিউনিটি- বাংলাদেশ, কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্ট, অপরাজিতা সোসাইটি এগেনস্ট ক্যান্সার, লিউকেমিয়া এন্ড লিম্ফোমা সোসাইটি অব বাংলাদেশ, প্রশান্তি নারী উন্নয়ন সংস্থা, ক্যান্সার সোসাইটি রাজবাড়ি, কুষ্টিয়া ক্যান্সার সোসাইটি ও হেল্থ এন্ড নিউট্রিশন অর্গানাইজেশন।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার অর্থায়নে ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রোটোকল অনুযায়ী পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ক্যান্সারসহ নানা ধরনের অসংক্রামক রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব রোগে দেশের ৭০ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৮ থেকে ৬৯ বয়সীদের মধ্যে ২৪ শতাংশ মানুষ উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন। ১০ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিকসে আক্রান্ত। এছাড়া ২০ শতাংশ ধুমপান করেন এবং ২৫ শতাংশ জর্দা ব্যবহার করেন। এ সবগুলোই বিভিন্ন ক্যান্সারের সঙ্গে সম্পর্কিত।
গবেষণার ফলাফলে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এভাবে অসংক্রামক রোগের বিস্তার দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর চাপ ফেলবে। একইসঙ্গে জনস্বাস্থ্যকে আরও হুমকির মুখে ঠেলে দেবে। তাই ইতোমধ্যে আক্রান্তরা যেন সুলভে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা পায়, সেজন্য দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও সুসংহত করা দরকার বলে আমরা মনে করি।
অসংক্রামক রোগ তথা ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য অনেক উপায় আছে। দেশের বিশেষায়িত ও ক্যান্সার হাসপাতালগুলোকে আরও আধুনিক এবং রোগীবান্ধব করে গড়ে তোলা প্রয়োজন। এছাড়া অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধের জন্য জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে এবং চিহ্নিত করার ব্যবস্থা মানুষের দোর গোড়ায় নিয়ে যেতে হবে। একইসঙ্গে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ক্যান্সারসহ সব দীর্ঘমেয়াদী ও জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য একটি জাতীয় তহবিল গঠনের আহ্বান জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।
সংগঠনগুলোর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের মানুষের শাক সবজি ও ফলমূল খ্ওায়ার অভ্যাস হ্রাস পেয়েছে। যা এসব রোগ বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখছে। তাই দেশীয় শাকসবজি ও ফলমূল খেতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মানুষ যেন নিরাপদ ও স্বাস্থ্য সম্মত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে পারে সেজন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে ব্যাপক কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এর আগে, গত সোমবার (১৯ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের করা গবেষাণা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অসংক্রামক রোগ বৃদ্ধির বিষয়ে খবর প্রকাশ করে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষ ক্যান্সারসহ নানা ধরনের অসংক্রমিত রোগে আক্রান্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় ও অধিদফতরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদেনের ফলাফল গত রোববার (১৮) প্রকাশ করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে এই দাবি জানায় ক্যান্সার বিরোধী ৮টি সংগঠন।