যমুনায় বাড়ছে পানি, ২০টি বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে বিলীন
২১ জুন ২০২৩ ১৮:১২
সিরাজগঞ্জ: বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। একইসঙ্গে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে। ফলে বন্যার আশঙ্কা করছেন চরাঞ্চলের মানুষেরা।
দ্রুতগতিতে পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার সদর, চৌহালীর এনায়েতপুর ও শাহজাদপুর উপজেলায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুই দিনে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের পাঁচিল গ্রামে অন্তত ২০টি বাড়ি-ঘর ও অর্ধশত গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এসব বাড়ি-ঘরের অসহায় মানুষজন অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ভাঙণের হাত থেকে রক্ষায় দ্রুত ঘর-বাড়ি ও আসবাপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে বিলিন হওয়ায় সচ্ছল কৃষকেরা সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়েছেন। যমুনার তীব্র ভাঙনে আশ্রয় হারানোর শঙ্কায় দিন কাটছে হাজারও মানুষের।
বুধবার (২১ জুন) দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ৩০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কাজিপুরের মেঘাই ঘাট ২৯ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৩৪ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ করতোয়া নদীর পানি উল্লাপাড়া পয়েন্টে ৪০ সেন্টিমিটার এবং বড়াল নদীর পানি শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ি পয়েন্টে বেড়েছে ৬৯ সেন্টিমিটার।
পাঁচিল গ্রামের মির্জা সরকার, চতুর আলী ও আব্দুল আলীম জানান, দুই দিন আগেও তাদের বাড়িঘর সব ছিল। আজ নদীতে সব হারিয়ে পথে বসেছেন তারা। নদী গর্ভে ঘর-বাড়ি বিলীন হওয়ায় কোথাও যাওয়ার মতো অবস্থা নেই তাদের। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে তারা এখন ভাসমান মানুষে পরিণত হয়েছে।
পাঁচিল গ্রামের হযরত আলী, শিপলু সরকার ও জয়মালা খাতুন জানান, ভাঙন এলাকার পাশেই কয়েক মাস আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদাররা হাজার হাজার বালুর বস্তা প্রস্তুত করে ফেলে রেখেছে। কিন্তু ভাঙন শুরু হলেও তা ফেলার ব্যবস্থা না করায় চোখের সামনে তাদের বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়। দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না তাদের। অবিলম্বে এ ভাঙণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন বলেন, সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার বলেন, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টির কারণে কয়েকদিন ধরেই যমুনার পানি বাড়ছে। এতে চরাঞ্চলের নিম্নভূমি প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে। পানি আরও ২/৩ দিন বাড়তে পারে। ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার প্রস্তুতি চলছে।
সারাবাংলা/আরএ/এনএস