Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ লেখা নিয়ে মহাকাশে যাবে বঙ্গবন্ধু-১

সন্দীপন বসু
১০ মে ২০১৮ ১৭:৫১

।। সন্দীপন বসু ।।

মাহেন্দ্রক্ষণের বাকি আর কয়েক ঘণ্টা। এর পরেই মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দেবে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্তিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু-১’। এর আগে নিজের ফেসবুক পেজে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানালেন, বাংলাদেশের একমাত্র মানুষ হিসেবে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১’ গায়ে কিছু লেখার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। প্রথম সুযোগেই তিনি স্যাটেলাইটের গায়ে লিখে দিয়েছিলেন ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার অরলান্ডোতে কেপ ক্যানাভেরালে উৎক্ষেপণকারী প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের লঞ্চ প্যাড থেকে আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ২টা ১২ মিনিট থেকে ৪টা ২২ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হতে পারে। এই মহাক্ষণটি প্রত্যক্ষ করতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে একটি দল গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেই দলের নেতৃত্বে তারানা হালিম। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর থেকেই নিজের ফেসবুক পেইজে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপনের প্রতিটি খুঁটিনাটি জানাচ্ছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রতিমন্ত্রি জানান, গত বছরের মাঝামাঝি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে তিনি (তারানা হালিম) ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১’-এর অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে ফ্রান্সের স্যাটেলাইট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান থ্যালেস এলেনিয়ার ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করেন। সেখানে এটি নির্মাণের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের সময় এই স্যাটেলাইট ঘিরে প্রতিমন্ত্রীর ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও আগ্রহ দেখে থ্যালেস কর্তৃপক্ষ তারানাকে দেশের প্রথম স্যাটেলাইটের বুকে স্বাক্ষর করার প্রস্তাব দেন।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তারানা হালিম সারাবাংলা ডটনেটকে বলেন, ‘থ্যালেসের পক্ষ থেকে স্যাটেলাইটের গায়ে আমাকে লেখার অনুমতি দেওয়া হয়।তখন আমি বলেছিলাম বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বুকে স্বাক্ষর করার একমাত্র অধিকার রাখেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি এতে স্বাক্ষর করতে পারব না। তবে আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে যেহেতু বিশ্বাস করি, মেনে চলি, তাই আমি জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু লিখতে পারি।

তারানা হালিম আরো বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ তখন জানিয়েছিল এর আগে তারা আর কাউকে এই সুযোগ দেয়নি। স্যাটেলাইটের গায়ে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ লিখতে পেরে আমি ধন্য। দেশবাসীর পক্ষ থেকে ইতিহাসের এই মাহেন্দ্রক্ষণ দেখার অপেক্ষায় আছি আমরা।’

দেশের প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ আজ রাতে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঢাকা থেকে ফ্লোরিডা পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমসহ ৩০ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে গেলে নিজস্ব স্যাটেলাইটের অধিকারী বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। এই স্যাটেলাইট স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের যেমন অন্য দেশের ওপর নির্ভরতা কমবে, তেমনি দেশের অভ্যন্তরীণ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায়ও আমূল পরিবর্তন আসবে।

বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ সরাসরি দেখতে দর্শকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার। ওই স্পেস সেন্টারের দর্শক সারি থেকে দেখা যাবে উৎক্ষেপণ।

স্পেস এক্স-এর উৎক্ষেপণযান বা রকেট ফ্যালকন-৯ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে মহাকাশে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত অরবিট প্লটে স্থাপন করবে। ফ্রান্সের কান টুলুজ ফ্যাসিলিটিতে নির্মিত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ইতিমধ্যে ফ্রান্স থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় কার্গো বিমানে করে উৎক্ষেপণস্থল ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোর ক্যাপ ক্যানাভেরালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা স্যাটেলাইট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থেলেস এলেনিয়া স্পেস স্যাটেলাইটটি নির্মাণ করেছে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে দুই হাজার ৯০২ কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এক হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট এক হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা বিডার্স ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় সংকুলান হয়েছে।

 

সারাবাংলা/ এসবি

বঙ্গবন্ধু-১ সন্দীপন বসু সন্দীপন বসু কলাম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর