Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শুধু গাছ লাগালেই হবে না, যত্ন নিতে হবে: শেখ পরশ

সারাবাংলা ডেস্ক
২২ জুন ২০২৩ ২০:৩১

শেখ ফজলে শামস্ পরশ, ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, ‘বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। দায়সারাভাবে গাছ লাগাবেন না, গাছের পরিচর্যাও প্রয়োজন। এমন জায়গায় লাগাবেন না মানুষের যাতায়াতের পথে পড়ে, আর পরের দিন মানুষ গাছটা তুলে ফেলতে বাধ্য হয়। শুধু গাছ লাগালেই চলবে না, গাছের যত্ন নেওয়া অপরিহার্য।’

বুধবার (২২ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে যুবলীগ।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠামণ্ডলীর সদস্য এবং দলটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক। আর সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, “এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারাদেশের যুবলীগের নেতাদের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার আহ্বান জানাব। গাছে যত্ন নেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘শুধু গাছ লাগালে হবে না, গাছ যাতে টিকে থাকে সেজন্য যত্ন করতে হবে। সেই গাছ একদিন ফল দেবে, কাঠ দেবে বা ওষুধ দেবে। আপনারা নানাভাবে উপকৃত হবেন।’ আমাদেরকেই আমাদের পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। এই দেশ আমাদের। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে, সবুজ বাংলাকে আরও সবুজ রঙে আঁকতে হবে।”

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, “গত ২ বছরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা ১ কোটিরও বেশি বৃক্ষরোপণ করেছি। এবারও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। গত ৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ‘বিশ্ব পরিবেশ মেলা-২০২৩ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান বৃক্ষমেলা-২০২৩’র শুভ উদ্বোধন করেছেন। সুতরাং এটা শুধু একটা কর্মসূচি না, এটা বৃক্ষরোপণ অভিযান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা, জেলা ও মহানগরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি করবে। এখন বৃক্ষরোপণের উপযুক্ত সময়, আষাঢ়-শ্রাবণ এবং ভাদ্র মাস। তবে এটি চলমান প্রক্রিয়া। কারণ শুধু বৃক্ষরোপণ করলে চলবে না, বৃক্ষ পরিচর্যা করতে হবে সারাবছর। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে পরিবেশ সুরক্ষায় যুবলীগ সর্বদা মাঠে থাকবে। আগামী প্রজন্মের টেকসই বাংলাদেশ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য বৃক্ষরোপণ, তথা উন্নত প্রাকৃতিক পরিবেশের কোনো বিকল্প নাই।”

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে একটি সফল সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করেছেন। যে আন্দোলনে ইতোমধ্যে সারাবাংলার যুবসমাজ একত্মতা প্রকাশ করছে। সরকারের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সময় সারাদেশে ৫২ হাজার একর বনভূমি এবং উপকূল বরাবর ৪০ হাজার একর বনভূমি তৈরি করা হয়েছে। দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সময় ১৩ হাজার একর জমিতে নতুন বন তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ১৫ হাজার এক জমিতে নতুন বন তৈরির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ও উন্নত পরিবেশ বান্ধব স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুবসমাজ আওয়ামী লীগের পতাকা তলে একত্রিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করি।’

এ সময় বিএনপি ও জামায়াতের সমালোচনা করে শেখ পরশ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত একটা জনবিচ্ছিন্ন ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী দল। যারা মানুষ হত্যা করতে সিদ্ধহস্ত। ১৯৭১ এ জামায়াত গণহত্যা চালিয়েছে বাঙালির ওপর। ১৯৭৫ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু পরিবারের উপর বেপরোয়া হত্যাকাণ্ডের হোতা হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৭৮-৭৯ সালেও হত্যাকাণ্ডগুলোর হোতা জিয়াউর রহমান। ২০০১ সালে জোট বেঁধে বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগ নিধনে নেমে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হত্যা করেছে। আর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের কুখ্যাত জঙ্গি-সন্ত্রাসী জোট সরকারের তাণ্ডব আপনাদের মনে থাকার কথা ।’

তিনি আরও বলেন, ‘খুন, হত্যার রাজনীতির ক্ষেত্রে এদের (বিএনপি-জামায়াত) উদ্দেশ্য এবং অভিলাস ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। তারা শুধু হত্যা, ক্যু এবং সন্ত্রাসই করতে জানে, জনগণের জন্য কিছু করার মুরদ নাই। এখন ক্ষমতা দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে গেছে। আমি তাদের বলব, এখনো সময় আছে মানুষের পাশে দাঁড়ান, গঠনমূলক রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন। না হলে এদেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না। পালানোরও পথ খুঁজে পাবেন না। আপনাদের এক শীর্ষ নেতাতো ইতোমধ্যে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। তাই জনগণ আপনাদের সঙ্গে নাই। এ কারণেই এখন পর্যন্ত সকল আন্দোলন-সংগ্রামে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক বলেন, ‘বৃক্ষরোপণ অবশ্যই করবেন। আপনারা না করলে কারা করবে। বঙ্গবন্ধু যে সোনার ছেলেদের কথা বলতেন সেটা মূলত ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের ভাই-বোনদের উদ্দেশে করেই বলতেন। তিনি জানতেন যুবকরাই এই দেশের চেহারা পাল্টে দিতে পারে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সুন্দর করে তোলার স্বপ্ন আপনাদের নিয়েই দেখতেন।’

উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, ‘আমরা এখন বিভিন্ন সভা-সেমিনারে পরিবেশ নিয়ে কথা বলি, নানা ধরনের সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাই। কিন্তু আমাদের এই পথ দেখিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশে পরিবেশ রক্ষায় নিয়মিত কর্মসূচি করেছেন, পরিবেশ সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন করেছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি গাছ বড় করতে যতটা কঠিন, কাটা খুবই সহজ। একটি গাছ বড় হতে কত বছর সময় লেগেছে, আর আপনি মুহূর্তের মধ্যে কেটে ফেলছেন। অনেকে আবার একটির পরিবর্তে ৩টি গাছ লাগান ঠিক আছে, লাগানোর পরে সে গাছ কি সুস্থভাবে বড় হচ্ছে। তার পরিচর্যা কি করছেন, সেদিকে কি খেয়াল রেখেছেন? রাখেন না, খেয়াল রাখতে হবে।’

এ সময় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হারিছ মো. শেখ সাগর, উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. সামসুল ইসলাম পাটোয়ারী, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন ও দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজাসহ সংগঠনটির অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনএস

আওয়ামী যুবলীগ শেখ ফজলে শামস্ পরশ

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর