‘নিজেদের স্বার্থের কথা ভাবতে গিয়ে বনভূমি উজার করে ফেলেছি’
২২ জুন ২০২৩ ২১:৩৪
ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, নিজেদের স্বার্থের কথা ভাবতে গিয়ে আমরা বনভূমি উজাড় করে ফেলেছি। এখন প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে। রাস্তায় বের হলে আর আগের মতো ছায়া পাই না। বিশুদ্ধ অক্সিজেন হাব কোথাও নেই। অসহ্য তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকি। এক সময় এই ঢাকা ছিল গাছ-পালায় ভরপুর। মাটি ছিল ঊর্বর। পরিকল্পিত বৃক্ষ রোপণের মধ্য দিয়ে ঢাকাকে আবার সবুজ শ্যামল নয়নাভিরাম ঢাকায় পরিণত করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) রাজধানীর মহাখালীর এ. কে. খন্দকার সড়কে ডিএনসিসি ও বন অধিদফতরের যৌথভাবে বৃক্ষরোপণ অভিযানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
প্রচণ্ড গরম অনুভূত হওয়ার জন্য নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘একসময় সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা সবুজ বাংলাদেশ নামে এই দেশের খ্যাতি ছিল। সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ থেকে দূরে সরে গিয়েছি। এগুলো এখন আমাদের কাছে ইতিহাস মনে হয়। আমরা গাছ কেটে বনভূমি উজাড় করে ফেলছি। আমরা প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে মাটি দূষিত করে ফেলছি। গাছপালা কমে যাওয়ায় শ্যামল ছায়া আর দেখতে পাওয়া যায় না। আমরা ঢাকা শহরে পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষ রোপনের মধ্য দিয়ে সেই ইতিহাসকে সামনে নিয়ে আসতে চাই। আবার ঢাকা শহরকে সবুজ ছায়ায় ছেয়ে দিতে চাই।’
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আমি দাবি জানিয়েছিলাম যারা সুষ্ঠুভাবে ছাদ বাগান করবে সেই সব বাসার মালিকদের ১০ শতাংশ হারে হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড় দেওয়া হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সেই সুবিধা এখন সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে দিচ্ছে। এটি একটি যুক্তকারী সিদ্ধান্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাঁচার একটিই পথ- বিপুল পরিমাণ গাছ লাগাতে হবে। যেখানেই ফাঁকা জায়গা সেখানেই বৃক্ষরোপণ করে পরিচর্যা করতে হবে। এভাবে আগাতে থাকলে ঢাকা হবে আবার সেই সবুজ ঢাকা এবং একটি পরিপূর্ণ অক্সিজেন হাব।’
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘রোদ বৃষ্টি এডিস মশার বংশ বিস্তারের জন্য উপযুক্ত সময়। আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আমাদের বাসা-বাড়ির আঙ্গিনায় কোথাও পানি জমে থাকছে কিনা। ফুলের টব, খালি বোতল, দই আইক্রিমের কাপ, পরিত্যাক্ত টায়ার, কোমড রঙের কৌটায় পানি জমে এডিস মশা বংশবিস্তার করে।’
ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ‘কোরবানির সময় পশুর বর্জ্য যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না। সিটি করপোরেশন ১০ লাখ পরিবেশবান্ধব পলিব্যাগ বিতরণ করবে। বর্জ্যগুলো ব্যাগে ভরে নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরাই নিয়ে যাবে।’
পশুর হাট থেকে সংগৃহীত গোবরকে সারে পরিণত করে বিভিন্ন নার্সারিকে দেওয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় অঞ্চলের বন সংরক্ষক হোসেইন মোহাম্মদ নিশাদ, ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নুরুল করিম, সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম ও বন সংরক্ষক আর এস এম মনিরুল ইসলাম, ডিএনসিসির পরিবেশ বিষয়ক কমিটির আহবায়ক ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন রশিদ জনিমহাখালী ও গুলশান এলাকার কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমান, মো. নাছির, হাসিনা বারী চৌধুরী, আমেনা বেগম।
সারাবাংলা/আরএফ/একে