Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘নির্বাচনে যেতে বিএনপি নেতাদের হুমকি দিচ্ছে গোয়েন্দারা’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ জুন ২০২৩ ২৩:৩১

ঢাকা: নির্বাচনে যেতে বিএনপির ‘সক্রিয়’ নেতাদের গোয়েন্দারা ‘হুমকি’ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের যারা এক্টিভ পলিটিক্স এবং ইলেকশন করছেন বা করবেন এই ধরনের নেতৃবৃন্দকে গোয়েন্দারা তুলে নিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের বলা হচ্ছে যে, তোমরা নির্বাচন করবা। যদি বিএনপি নির্বাচন না করে তাও। আমি আপনাদের (গণমাধ্যম) আজ প্রকাশ্যেই বললাম। আই হেভ লট অব লিডারস যারা এ অভিযোগ করেছে। আমরা কোনো দেশে বাস করছি? এটা একটা মধ্যযুগীয় বর্বর যুগে আমরা বাস করছি। এই সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য হেন কোনো অন্যায় নাই যে করছে না।’

আওয়ামী লীগ দেশের ভূ-রাজনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কি রকম মরিয়া হয়ে গেছে যে, দেশের ক্ষতি করতেও তারা দ্বিধা করছে না। তারা জানে যে, এই দেশের যে অবস্থা সেই দেশ আজ অন্যান্য দেশ সম্পর্কে কমেন্টস করছে। আর যে কথাগুলো বলা হচ্ছে তা আমাদের দেশের ভূ-রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এবং আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি ইতোমধ্যে।’

তিনি বলেন, ‘এই ধরনের কথা-বার্তাগুলো কোনো দায়িত্বহীন নেতা বলতে পারেন, বিশেষ করে সরকার চালাচ্ছেন যিনি তিনি বলতে পারেন- এটা আমরা কল্পনা করতে পারি না। যারা আমরা সুস্থ রাজনীতিতে বিশ্বাস করি, আমরা মনে করি যে, তাদের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তারা পরিষ্কার বুঝতে পেরেছেন এবং আগে থেকেই বুঝতে পেরেছেন যে, জনগণ তাদের আর গ্রহণ করবে না। তাই কোনোভাবেই তারা নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা শুনছেন না, একেবারে ওদিকে যাচ্ছেনই না।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘তাদের একটাই কথা হচ্ছে যে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। সেই সংবিধান কে কাটাছেঁড়া করেছে? সেই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হলে তো অবশ্যই এয়োদশ সংশোধনীতে যে কেয়ারটেকার সরকার ছিল সেটাই থাকবে এবং সেটা থাকা উচিত। সেটা ছিল কনসেন্সাসের ভিত্তিতে একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। একটা বন্দোবস্ত হয়েছিল সব দলগুলো মিলে। সেখান থেকে সরে গিয়ে নিজেরা বেমালুম একতরফাভাবে শুধু নিজেদের ক্ষমতায় রাখার জন্য একাজগুলো করেছে।’

‘এখন নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। আবার একতরফা নির্বাচন করার জন্য, আবার ক্ষমতায় হাইব্রিড রেজিমের মতো চলে যাওয়ার জন্য, প্রশাসনকে আপনার ব্যবহার করতে চান। কিন্তু মানুষ তো ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মানুষ প্রতিবাদ করছে, মানুষ দাঁড়িয়ে গেছে। এবার সেটা মানুষ করতে দেবে না’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্রের যেসব প্রতিষ্ঠান আছে, যারা আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িত তাদের কর্মকর্তাদের আমরা অনুরোধ জানাতে চাই যে, দয়া করে সাংবিধানিক কাজের সঙ্গে নিজেদের জড়াবেন না, জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না। এ দেশের মানুষ বরাবরই যেকেনো অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, যেকোনো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, যেকোনো স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের অধিকার আদায় করে নিয়েছে। এখনও তারা অধিকার আদায় করে নেবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের যেটা আশা-আকাঙ্ক্ষা সেটা পূরণ করবার জন্য যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী, যাদের দায়িত্বশীলতা শুধু জনগণের প্রতি, তারা তা পালন করবেন। এই ধরনের অন্যায়-বেআইনি নির্দেশের ফলে আপনারা এ ধরনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে ব্যাহত করবেন না। এটা সম্পূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করা। জনগণ তার অধিকারের জন্য সংগ্রাম করছে, লড়াই করছে, সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পেতে চাচ্ছে। সেই অধিকারের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে এভাবে বাধাগ্রস্ত করা, গ্রেফতার করা, নির্যাতন করা ভয়াবহভাবে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বলে আমরা মনে করি। দয়া করে এটা করা থেকে বিরত থাকুন, জনগণের সঙ্গে আসুন।’

বিজ্ঞাপন

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখনও সময় আছে, জনগণের ভাষা বুঝতে পেরে, চাহিদা বুঝতে পেরে আপনারা পদত্যাগ করুন। একটা নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন এবং সংসদ বিলুপ্ত করে একটা নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় দেশের মানুষ তাদের অধিকার কীভাবে আদায় করে নিতে হয় তা জানে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম-আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকন, আবদুস সাত্তার, লিটন মাহমুদ, হাজী মো. মনির হোসেন, আনম সাইফুল ইসলাম, মহানগর দক্ষিণ যুব দলের সাঈদ হাসান মিন্টু, খন্দকার এনামুল হক এনাম, মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইদ মোরশেদ পাপ্পা, মহানগনর দক্ষিণ কৃষক দলের হাজী মো. কামাল হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন বাদশা ও পূর্ব ছাত্র দলের মোহাম্মদ আল আমিন প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর