Tuesday 06 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘নিরাপত্তাহীনতার কারণে হিন্দুরা বাংলাদেশ থেকে প্রস্থান করছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৩ জুন ২০২৩ ১৫:৩০

ঢাকা: নিরাপত্তাহীনতার কারণেই বাংলাদেশ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ক্রমান্বয়ে প্রস্থান করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের উপদেষ্টা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

শুক্রবার (২৩ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার লোক একসঙ্গে যুদ্ধ করেছিলাম পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে। কারণ, যে অত্যাচার-নির্যাতন-শোষণ-বর্ণ বৈষম্য, ধর্মীয় বৈষম্য, সেটা সুষ্ঠু রাষ্ট্রের সহায়ক ছিল না। কিন্তু আমরা দেখলাম যে, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে দ্বিতীয় সংখ্যাগরীষ্ঠ জনগোষ্ঠী তথা হিন্দু সম্প্রদায় ক্রমান্বয়ে প্রস্থান করছে।’

‘অর্থাৎ ১৯৪৬ সালের দাঙ্গায় মানুষ যেমন দলে দলে এক সঙ্গে মিছিল করে দেশত্যাগ করেছে তা নয়। প্রতিদিনই যাচ্ছে সেটা আমরা হয়ত অনুমান করতে পারছি না। যখন পরিসংখ্যান আসে, পরিসংখ্যান আসলে দেখা যায় যে, ক্রমান্বয়ে অর্থাৎ হিন্দু সম্প্রদায়ের সংখ্যা কমতে থাকে। এক সময়ে ৬০‘র দশকে হিন্দু সম্প্রদায় ৩৭% বাংলাদেশে ভূখণ্ডে বাস করত এখন এটা ১০ এর নিচে নেমে এসেছে। তার মানে এভাবে কমছে, ক্রমান্বয়ে যাচ্ছে’— বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা, তাদের যে নাগরিক অধিকার সংবিধানে আছে সেটা থেকে বঞ্চিত এবং প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ করলে তারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অভিযোগগুলো খুব একটা গুরুত্ব দেয় না এবং এড়িয়ে চলে। আর প্রশাসন সংখ্যালঘুদের অর্থাৎ নাগরিকদের যে অধিকার আছে, তার নিরাপত্তার বিষয়টা আছে সেগুলো প্রশাসন তদারকি করে না। দুঃখজনক হলে সত্য যে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকরা আদালত বলেন আর প্রশাসন বলেন, কোথায় কিন্তু গুরুত্ব পায় না। এককথায় বলা যায়, বাংলাদেশে পাত্তা পায় না।’

বিজ্ঞাপন

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আজকে পার্শ্ববর্তী একটি গণতান্ত্রিক দেশ ভারত। আমাদের দেশের হিন্দুরা সেকেন্ড হোম হিসেবে ভারতকে বেছে নেয়। একটা পূর্ব ঠিকানা থাকা দরকার, এখানে থাকা যাবে না— এই মনোবৃত্তিটা কেন সৃষ্টি হল? সৃষ্টি হলো এই কারণে যে, রাষ্ট্র সবার, এই বাংলাদেশটা যে সবার— এই আস্থা অর্জনে আমাদের প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে।’

এতে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, নির্বাচন ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বরাবর ছয় জন কংগ্রেসম্যান একটি চিঠি দিয়েছেৃ. যাতে বর্তমান সরকারের অস্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়া, গণতান্ত্রিক পরিবেশ ক্ষুন্ন করা, ব্যাপকহারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পাশপাশি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীন ও তাদের ওপর ক্রমবর্ধমান নির্যাতনে বিষয় উপস্থাপন হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি যদিও প্রকৃত বিচারে এর চেয়েও অনেক বেশি। তবুও কংগ্রেস ম্যানদের চিঠিতে এটি আংশিক আকারে ফুটে উঠেছে। তথাপি এটি সত্যের প্রকাশ বলে আমরা মনে করি। এজন্য ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি।’

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে’র পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ফ্রন্টের উপদেষ্টা নিতাই রায় চৌধুরী, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, তপন চন্দ্র মজুমদার, সুশীল বড়ুয়া, ভাইস চেয়ারম্যান অপর্ণা রায় দাস, নিতাই চন্দ্র ঘোষ, রমেশ দত্ত, রনজিত রায়, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মন্ডলসহ অনেকে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/এমও

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর