Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাড়তি দামেই মসলা বিক্রি, পাইকারিতেও দামের ব্যবধান

উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৩ জুন ২০২৩ ২৩:০৪

ঢাকা: দুই মাস আগেও পাইকারি বাজারে জিরার দাম ছিল ৬০০ টাকা কেজি সেখানে ঈদ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯১০ টাকা। এলাচ ছিল ১৫০০ টাকা কেজি বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ২১৫০-২৪০০ টাকা কেজি। দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি। লং বিক্রি হচ্ছে ১৬০০-১৮০০ টাকায় এবং গোল মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে। খুচরা বাজারে এই চিত্র উল্টে গিয়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে মসলা।

শুক্রবার (২৩ জুন) রাজধানীর পাইকারি বাজার ঘুরে এ সব তথ্য জানা যায়। অন্যদিকে রাজধানীর সূত্রাপুর, শ্যামবাজার, যাত্রাবাড়ী বাজার, কাপ্তান বাজার, কারওয়ান বাজার ও শান্তিনগর খুচরা বাজার ঘুরে মসলা বিক্রির দাম সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

মৌলভীবাজারের নরসিংদী স্টোরের মালিক জাকির হোসেন বলেন, ‘পর্যাপ্ত মসলা রয়েছে দোকানে। কিন্তু আগের মতো বিক্রি নেই। নতুন করে কোনো মসলার দামও বাড়েনি। প্রায় দুই মাস আগে যা বেড়েছিল সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে মসলা।’

তিনি বলেন, ‘জিরার কেজি ১০০০ টাকা দাম ছিল বর্তমানে ৯১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে তার দোকানে। লং বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকা কেজি। এলাচের কেজি ২১৫০ টাকা আর দারুচিনির (পাতলা) দাম ৪৫০ টাকা।’

একই বাজারের ছাইদুর রহমান অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে দোকানে এলাচ বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকা কেজি, লং বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা কেজি, গোলমরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি। সেখানে দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজি। আর বড় এলাচ (কালো) বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকা কেজি দরে। জিরা বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা কেজি।

জব্বার স্টোরে মসলা বিক্রি হচ্ছে এলাচ (গুয়েতেমালা) ২২৫০ টাকা, দারুচিনি ৪৮০ টাকা, গোল মরিচ ৮৫০ টাকা, লং মরিচ ১৬৫০ টাকা এবং জিরা বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকায়।

বিজ্ঞাপন

একই বাজারে দোকান ভেদে মসলার দামের পার্থক্যে কোথাও ১০০-১৫০ টাকা এবং কোনো কোনো মসলায় ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আয়েশা ট্রেডার্সের মালিক আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মালের পার্থক্য রয়েছে তাই দামেরও পার্থক্য রয়েছে। দাম অনুযায়ী ক্রেতা এখন যেটি নেয়।’

বাজার ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা অনেক কম। তবে শুক্রবার হওয়ায় ক্রেতা কম আসতে পারে। প্রচুর পরিমাণে মসলা মজুদ রয়েছে। প্রত্যেকটি দোকানে অন্তত ৫০-৬০টির মতো মসলার আইটেম রয়েছে। কোনো কোনো দোকানে তারও বেশি আইটেম রয়েছে। তবে চাহিদা সবচেয়ে বেশি কয়েকটি মসলার। যেগুলো মাংস রান্নার কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে।

জানা যায়, একই বাজারে দামের পার্থক্য কাস্টমার ভেদে। বিক্রেতা একজন কাস্টমারকে দেখলেই বুঝতে পারে তিনি নতুন নাকি পুরনো কাস্টমার। মূলত নতুন কাস্টমারের কাছে বেশি দাম চেয়ে থাকে। আর যারা পুরাতন কাস্টমার তারা দোকান ও মাল দুটোই ভালোভাবে জানে এবং চেনে। তাই পুরাতন কাস্টমারের কাছে দাম তেমন একটি বেশি চান না। এছাড়া পুরাতন কাস্টমার বাজার ঘুরে দাম পরীক্ষা করেই মসলা কেনে।

পাইকারি বাজার দেখার পর যাওয়া হয় খুচরা বাজারে। রাজধানীর কাপ্তান বাজারে গিযে দেখা যায়, এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৩০০০-৩৫০০ টাকা কেজি। দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি, লং বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকা কেজি এবং গোল মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি।

পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরা বাজারে দাম অনেক বেশির কারণ জানতে চাইলে কাপ্তান বাজারে নাঈম ট্রেডার্সের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খুচরা বিক্রির কারণে দাম একটু বেশি। কেউ নেয় ২৫ গ্রাম, কেউ ৫০ গ্রাম সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম নিয়ে থাকে। কেজিতে এনে গ্রামে বিক্রি করলে ওজন অনেক কমে যায়। তাই একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।’

কারওয়ান বাজার কিচেন মার্কেটে শুক্রবার (২৩ জুন) পাইকারি এলাচের কেজি ২০০০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। দারুচিনি ৪২০ টাকা কেজি। জিরা ৮০০ টাকা কেজি এবং লং মরিচ ১৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলেন, ‘দাম আগের মতোই আছে। তবে সবাই অল্প দামে কিনতে চায়।’

কারওয়ান বাজারে ক্রেতা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদের আগে মসলার দাম বাড়ে। তবে এবার আগেই দাম বেড়েছে। নতুন করে দাম তেমন বেশি দেখলাম না। গত সপ্তাহে যে দামে কিনেছি তাই আছে। এলাচ কিনলাম ২৫০ গ্রাম ৭০০ টাকা দিয়ে। খুচরা বাজারে হয়ত দাম আরও একটু বেশি হবে।’

বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের কাছে প্রচুর পরিমাণে মসলা মজুত রয়েছে। কোরবানির আগে মসলার কোনো সংকট নেই, তাই দাম বাড়বে না। দাম নাগালের মধ্যেই রয়েছে। কিছু দিন আগে দাম বেড়েছিল সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে বেশির ভাগ মসলা। শুধু জিরার দাম ১০০০ টাকা ছিল সেটি কমে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সৈয়দ মো. বশির উদ্দিন বলেন, ‘ঈদ কেন্দ্র করে যদি কোনো ব্যবসায়ী অসৎভাবে বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালান তবে সমিতির নিয়ম অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/ইউজে/একে

ঈদ বাজার পাইকারি বাজার মসলা বিক্রি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর