Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মিলেছে কয়লা, আংশিক উৎপাদনে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ জুন ২০২৩ ০৯:৩৪

ঢাকা: কয়লা সংকটের কারণে সাময়িক বন্ধ থাকা দেশের সবচেয়ে বড় পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ফের উৎপাদন শুরু করেছে। টানা কুড়ি দিন বন্ধ থাকার পর রোববার (২৫ জুন) ভোর প্রথম ইউনিট থেকে উৎপাদন শুরু করা হয়। এই ইউনিট থেকে ৫২৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে এখনি উৎপাদনে যেতে পারছে না বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট।

ডলার সংকট আর বকেয়ার কারণে কয়লা ফুরিয়ে গিয়েছিলো পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের। কয়লা না থাকায় গত ২৫ মে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পরে ৫ জুন বন্ধ হয় দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন।

বিজ্ঞাপন

নতুন করে কয়লা আমদানির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকার যৌথভাবে ১০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র খোলে। এরপর ইন্দোনেশিয়া থেকে জাহাজ ভর্তি কয়লা বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। এরপর শুক্রবার (২৩ জুন) ৪১ হাজার ২০৭ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে নোঙ্গর করে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আথেনা। জাহাজ থেকে কয়লা খালাস করে রোববার ভোর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী এমভি অ্যাথেনা নামের একটি মাদার ভ্যাসেল প্রায় ৪১ হাজার ২০৭ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বন্দরের ইনার অ্যাংকরেজে এসে পৌঁছায়। জাহাজটি শুক্রবার বিকেলে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিজস্ব জেটিতে নিয়ে আসা হয়। জাহাজ থেকে দ্রুত কয়লা আনলোডের পর প্রথম ইউনিট চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম সারাবাংলাকে জানান, আপাতত প্রথম ইউনিট উৎপাদনে গেলো। দ্বিতীয় ইউনিটও আগামী সপ্তাহে উৎপাদন শুরু করবে। ফলে পায়রার কারণে যে বিদ্যুতে যে সংকট তৈরি হয়েছিলো তা কেটে যাবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও জানান, যে কয়লা এসেছে তাতে আগামী আগস্ট পর্যন্ত উৎপাদন ব্যহত হবে না।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, আগামী ৯ আগস্ট পর্যন্ত ১৭টি জাহাজ প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে আসবে। জুলাই পর্যন্ত ১৩টি শিপমেন্টে যে পরিমাণ কয়লা আসবে তা দিয়ে ৩১ জুলাই পর্যন্ত পায়রার দু’টি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার পরও ২ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুদ থাকবে। এরপর ৯ আগস্ট পর্যন্ত আসবে আরও ৪টি শিপমেন্ট। যে কারণে আগস্টের আগে পায়রার উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশংকা নেই বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার নিশানবাড়িয়ায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় বাংলাদেশের নর্থওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) মধ্যে যৌথ উদ্যোগের চুক্তি হয়। সব প্রক্রিয়া শেষ করে ২০২০ সালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। গত এক বছরে কয়লা সংকটের প্রভাব তেমন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ওপরে না পড়লেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে যে ডলার সংকট দেখা দেয় তার চরম প্রভাব পড়ে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদনে গেলে মোট ১৩২০ মেগাওয়াটের দু’টি ইউনিট চালাতে দরকার হয় প্রতিদিন প্রায় ১৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। আর এই কয়লা কেনার জন্য ঋণ দেয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চীনা অংশীদার সিএমসি। প্রতিষ্ঠানটির টাকা দিয়েই ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করা হয়েছে।

সারাবাংলা/জেআর/এমও

কয়লা পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর