Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সুবিধা নেই: সিপিডি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৫ জুন ২০২৩ ১৯:৪৭

ঢাকা: দেশের অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট সুবিধা নেই। কিছু বিদ্যালয়ে ল্যাপটপও নেই। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর থাকলেও তার গুণগত মান ভালো নয়। এমন তথ্য উঠে এসেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) এক জরিপে।

রোববার (২৫ জুন) রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (কেআইবি) আয়োজিত ‘প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি বিনোয়োগ: স্থানীয় অভিজ্ঞতা ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

বিজ্ঞাপন

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ ও নিয়মিত ব্যবহার নিশ্চিত করা দরকার। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে কম্পিউটার ও ডিজিটাল শিক্ষা বিষয়ে দক্ষ করতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

জরিপে দেখা গেছে, অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনও প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট সুবিধা নেই বলে জানিয়েছেন ৪৬ শতাংশ উত্তরদাতা। বেশকিছু বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের ব্যবস্থা নেই। কিছু বিদ্যালয়ে এখনও কোনো ল্যাপটপ নেই। কোনো কোনো অংশীজন ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের গুণগত মান ভালো নয় বলে জানিয়েছেন। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধুমাত্র বিশেষ দিবসে মাল্টিমিডিয়া এবং বিদ্যালয়ের দাফতরিক কাজেই মূলত ল্যাপটপের ব্যবহার হয়। দক্ষ জনবলের অভাবে ল্যাপটপ এবং প্রজেক্টরের নিয়মিত ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট পড়ে থাকে। অনেক শিক্ষকের এ বিষয়ে জ্ঞান নেই বলে শ্রেণীকক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন না। এ ধরনের সরঞ্জাম মেরামতের প্রয়োজন হলে তার জন্য কোনো বরাদ্দ না থাকার কথাও কোনো কোনো বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বলেছেন।

বিজ্ঞাপন

দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ নেই বলে জরিপে উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের গড় সংখ্যা ৬, যা শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১: ২৯। জরিপে ৩০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪টি বিদ্যালয়ে পাঁচটির কম শ্রেণিকক্ষ আছে। বাকিগুলোর মধ্যে আটটি বিদ্যালয়ে পাঁচটির বেশি শ্রেণিকক্ষ আছে এবং বাকি আটটি বিদ্যালয়ে পাঁচটি করে শ্রেণিকক্ষ আছে।

সিপিডি সম্প্রতি গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও এবং নীলফামারী জেলায় স্থানীয় তরুণ নাগরিকদের সম্পৃক্ত করে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার ওপরে স্থানীয় প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের অংশগ্রহণে তিনটি সামাজিক নিরীক্ষা চালিয়েছে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সমাজের মোট ৪০৮ জনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

বিগত পাঁচ বছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বাজেট ও জিডিপির তুলনায় বরাদ্দ কমানো হয়েছে বলে উঠে এসেছে জরিপে। এতে বলা হয়েছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এই মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। ২০২৩-২৪ বছরের বাজেটে তা কমিয়ে আনা হয়েছে ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশে। এছাড়াও মোট সরকারি ব্যয়ের একটি অংশ হিসাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সারাদেশের মানুষকে নিয়ে আমাদের উন্নয়ন করতে হবে। কুড়িগ্রামকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন নয়। উন্নয়ন হতে হবে সব যায়গায়। সারাদেশের মানুষকে নিয়ে উন্নয়ন না করলে তা টেকসই হবে না। দারিদ্রতা যেখানে বেশি সেখানে বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৪ বছরে দেশের বিভিন্ন যায়গায় আমরা প্রচুর উন্নয়ন করেছি। শুধু সমালোচনা নয়, আমরা যে উন্নয়ন করেছি সেগুলোতেও তুলে ধরতে হবে। উন্নয়নকেও সাধুবাদ জানানো উচিৎ।’

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষা ব্যয় নয় কিন্তু শিক্ষা হচ্ছে বিনিয়োগ। এটি শুধু পরিবার নয়, সমাজ-রাষ্ট্র সবার জন্য প্রযোজ্য। শিক্ষায় বড় ধরণের বিভাজন হচ্ছে। সমাজের সর্বত্র আয় বৈষম্য চলছে। আয়, ধন ও সম্পদ বৈষম্য চলছে। শিশুদের শূণ্য থেকে ১০ বছর পর্যন্ত শিক্ষা সবচেয় বড় বিনিয়োগের যায়গা। বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা বলেছে, শিক্ষায় জিডিপির ৪ শতাংশ বিনিয়োগ হওয়া উচিৎ, অথচ আমাদের এখানে বিনিয়োগ মাত্র ২ শতাংশ।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম শিরীন আখতার এমপি, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান, এডুকেশন অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট টিমের পোগ্রাম ম্যানেজার নাদিয়া রশীদসহ আরও অনেকে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/ইআ

টপ নিউজ সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ভারত থেকে ফিরলেন ৯ বাংলাদেশি তরুণী
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৩

আজ জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেবেন ড. ইউনূস
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:০৪

সবজি-মুরগির বাজার চড়া, অধরা ইলিশ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:১০

সম্পর্কিত খবর