Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উচ্চমাত্রার মূল্যস্ফীতি অর্থনীতিতে বড় চ্যালেঞ্জ: রওশন এরশাদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ জুন ২০২৩ ২০:২৫

ঢাকা: উচ্চমাত্রার মূল্যস্ফীতি দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বিরোধীদলের নেতা রওশন এরশাদ। এই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও তিনি জানান।

রোববার (২৫ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে রওশন এরশাদ এ সব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

বিজ্ঞাপন

রওশন এরশাদ বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উচ্চমাত্রার মূল্যস্ফীতি। মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে,গত মে মাসে মূল্যস্ফীতির এই হার দাঁড়িয়েছে। এই হার গত প্রায় এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগামী অর্থবছরের জন্য মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ শতাংশ। এটি অর্জন করতে হলে এখন থেকেই বিভিন্ন বাস্তবসম্মত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মূল্যস্ফীতি যদি ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ না করা যায়, তাহলে অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের আশু হস্তক্ষেপ এখনই কামনা করছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণগ্রহণ ও কিস্তি গত কয়েক বছর ধরে দ্রুত বাড়ছে। সরকারি ও বেসরকারি উভয়খাতেই এ ঋণপ্রবাহ বাড়ছে। এমনিতেই বেশকিছু বড় প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হবে ২০২৩-২৪ অর্থ বছর থেকে। তারমধ্যে যদি এই ঋণ বাড়তে থাকে, তাহলে অচিরেই বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণ পরিস্থিতির ক্ষেত্রে আর স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকবে না। তাই সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

জাতীয় সংসদের বিরোধীদলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ বলন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ ও স্থিতি গত কয়েক বছর ধরে দ্রুত বাড়ছে। সরকারি ও বেসরকারি উভয়খাতেই এ ঋণপ্রবাহ বাড়ছে। এমনিতেই বেশকিছু বড় প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হবে ২০২৩-২৪ অর্থ বছর থেকে। তারমধ্যে যদি এই ঋণ বাড়তে থাকে, তাহলে অচিরেই বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণ পরিস্থিতির ক্ষেত্রে আর স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকবে না।’ তাই এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।

স্পিকার ড. শিরিন শারমীনের সভপাতিত্বে বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করে বেগম রওশন এরশাদ বলেন, ‘এমন এক সময়ে এই বাজেট ঘোষণা হয়েছে যখন খাদ্য থেকে জ্বালানি ও পরিবহন ভাড়া থেকে শুরু করে ইউটিলিটি বিল পর্যন্ত প্রায় সব কিছুরই উচ্চমূল্যে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। নতুন নতুন কর্মসংস্থানের বদলে কর্মহীনের সংখ্যা বাড়ছে। এনবিআরের রাজস্ব আদায় চ্যালেঞ্জ হবে। রাজস্ব আদায় বাড়ানো না গেলে এসব চ্যালেঞ্জ উৎরানো সম্ভব হবে না। রাজস্ব খাতে সংস্কারের পাশাপাশি সামষ্টিক অর্থনীতিতে বিশেষ করে ব্যালান্স অব পেমেন্ট,বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো,মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার জন্য আহবান জানান।

তিনি আরও বলেন, জ্বালানি ও কয়লার অভাবে সব ধরনের পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং লোডশেডিং হলেও সব ধরনের জ্বালানি আমদানিতে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে নতুন শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য জ্বালানিতেও শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতে করে জ্বালানিতে ব্যয় বাড়বে। ফলে প্রতিটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে।’ তাই জ্বালানির মূল্য সহনীয় পর্য়ায় রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বেগম রওশন এরশাদ বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে আমাদের উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের চেষ্টা করতে হবে কীভাবে আগামীতে রিজার্ভের পরিমাণ বৃদ্ধি করা যায়। পণ্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে রফতানি বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা, বর্তমান অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৩৩ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি খাতে ১ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। টাকার অঙ্ক বাড়লেও খাতওয়ারী বরাদ্দ কমেছে। অনুরূপভাবে শিক্ষা খাতেও বরাদ্দ কমেছে। শিক্ষা খাতে মোট বরাদ্দ ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে যা মোট বাজেট বরাদ্দের ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ ছিল ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা,যা ছিল মোট বরাদ্দের ১২ দশমিক ০১ শতাংশ। জিডিপির হিসাবেও শিক্ষাখাতের বরাদ্দ কমেছে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

ঋণ জাতীয় পার্টি রওশন এরশাদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর