সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সংকট তৈরি হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
২৬ জুন ২০২৩ ১৪:০৬
ঢাকা: বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে জেল-জরিমানা দিলে হঠাৎ করে যে সংকট তৈরি হবে সেটা কাটিয়ে ওঠা কষ্ট হয়। এ কারণে আলোচনার মাধ্যমে, নিয়মের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হয় বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি
সোমবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খাতে ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় বিরোধী দলের সদস্যদের অভিযোগ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘বারবার একটা কথা উঠে আসছে যে আমি ব্যবসায়ী, ব্যাবসায়িরা আমার জন্য সুবিধা পাচ্ছে। যারা এই কথাগুলো বলেছেন তাদের উদ্দেশে একটা কথা বলি তাদের রাজনীতির কত বছরের অভিজ্ঞতা আমি জানি না, আমি কিন্তু ৫৬ বছর ধরে রাজনীতি করি, আমি কিন্তু ব্যবসা করি আজকে ৪০/৪২ বছর। বলে আপনি ব্যবসায়ী, আপনি ব্যবসায়ীদের সুযোগ দিচ্ছেন। একজন তো বললো আমাকে পদত্যাগ করতে। খুব ভাল কথা বলেছে, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলবো উনি দায়িত্ব নিলে আমাকে ছেড়ে দিয়ে দায়িত্বটা দিতে পারেন।’
একটা বৈশ্বিক পরিস্থিতি আমাদের উপর প্রভাব ফেলেছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেটাও কিন্তু আমাদের হিসাবের মধ্যে আনতে হবে। অনেকগুলো কথা বলা হয়েছে যেমন জ্বালানির কথা আসছে, জ্বালানিটা আমি দেখি না। ডিম সেটা তো আমি খবর জানি না, ডিমের দাম বাড়া বা কমা যে মন্ত্রণালয় আছে তারা ঠিক করে দেয়। দাম বেড়েছে কোনো সন্দেহ নেই। পেঁয়াজের কথা বলা হয়েছে আমরা আলোচনা করে ঠিক করেছিলাম যাতে কৃষকরা একটু দাম পায়। পেঁয়াজে আমাদের ৬ থেকে ৭ লাখ টন ঘাটতি আছে। আমরা চেষ্টা করছি, সব কিছুই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখে না, তারপরও দায় আমি নিয়ে বলছি আমরা চেষ্টা করছি, দাম কিভাবে কমানো যায়।’
পেঁয়াজের দাম ১০, ১৫ দিনের মধ্যে ৫০ টাকার মধ্যে চলে আসবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে থাকলে সব পক্ষের উপকার হয়। সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়, এ কথা ঠিক বড় বড় গ্রুপগুলোই একসঙ্গে অনেক বেশি ব্যবসা করে। আমরা চেষ্টা করি, কিন্তু একটা জিনিস মনে রাখা দরকার জেলে ভরলাম, জরিমানা করলাম সেটা হয় তো করা সম্ভব, কিন্তু তাতে যে সংকটটা হঠাৎ করে তৈরি হবে আমাদের তো সেটা সইতে কষ্ট হয়। অতএব আমরা চেষ্টা করি আলোচনার মাধ্যমে, নিয়মের মাধ্যমে থেকে সমাধান করতে।’
এর আগে সংসদে জাতীয় পার্টির সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘মানুষের পকেটে টাকা নাই। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে সিন্ডিকেট। ডিমের বাজারে কারা সিণ্ডিকেট করে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে যায়? এটা তো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে না। মন্ত্রী যেখানে সিন্ডিকেটের কথা বলছেন সেখানে বাণিজ্যমন্ত্রী কেন তাদের ধরেন না? তিনি তো নিজেই ব্যবসায়ী, তার তো জানার কথা কারা সিন্ডিকেট করে। তার কোনো ভূমিকা নেই।’
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, ‘সিন্ডিকেটের কারণে সব দাম বড়েছে। সিন্ডিকেট কি এতো শক্তিশালী, সরকারের চেয়ে সিন্ডিকেট শক্তিশালী। এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও