Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পরামর্শক জটিলতায় আটকে আছে রেলের সাব-স্টেশন নির্মাণ

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ জুন ২০২৩ ০৯:০৩

ঢাকা: পরামর্শক নিয়োগের জটিলতায় আটকে গেছে রেলের ওভারহেড ক্যাটেনারি ও সাব-স্টেশন নির্মাণ প্রকল্পের সমীক্ষা কার্যক্রম। প্রায় তিন বছর পার হলেও বাস্তব অগ্রগতি চলতি বছরের মে পর্যন্ত ৪ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ১.৭২ শতাংশ। এখন আবার এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের নারায়ণগঞ্জ হতে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ইলেকট্রিক ট্র্যাকশন (ওভারহেড ক্যাটেনারি ও সাব-স্টেশন নির্মাণসহ) প্রবর্তনের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিশদ ডিজাইন শীর্ষক সমীক্ষা প্রকল্পে বিরাজ করছে এমন চিত্র।

বিজ্ঞাপন

গত ৭ জুন অনুষ্ঠিত হয় বিভাগীয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (ডিপিইসি) সভা। ওই সভায় সভাতিত্ব করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর। সভার কার্যবিবরণী সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

পরিকল্পনা কমিশনের একধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ কোটি ৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ২০২১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু এখন ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।’

ডিপিইসি সভায় প্রকল্প পরিচালক জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ের নারায়ণগঞ্জ হতে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ইলেট্রিক ট্র্যাকশন (ওভারহেড ক্যাটেনারি ও সাব-স্টেশন নির্মাণসহ) তৈরির সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিশদ ডিজাইন প্রকল্পটি বাংলাদেশ ইলেট্রিক ট্যাকশন সংক্রান্ত প্রথম প্রকল্প। এ বিষয়ে পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দেশি পরামর্শক দেশে অপ্রতুল। অনুমোদিত প্রজেক্ট প্রোপোজাল ফর ফিজিবিলিটি স্ট্যাডিতে (পিএফএস) ১২ জন তুর্কি পরামর্শকের প্রস্তাব করা হয়। ইলেট্রিক ট্র্যাকশন প্রকল্পের কার্যক্রম দেশে নতুন তাই এই কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য নির্ধারিত অর্থে দেশের পরামর্শকের পরিবর্তে তার্কিশ পরামর্শকের সেবা নেওয়ার প্রস্তাবটি যৌক্তিকভাবে বিবেচিত হয়। তাই বাংলাদেশ রেলওয়ের এই পরামর্শক সংক্রান্ত প্রস্তাবনাটি শর্তসাপেক্ষে রেলপথ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। এ জন্য শর্ত অনুযায়ী পিএফএসে উল্লেখিত দেশি পরামর্শকের পরিবর্তে সংশোধিত পিএফএসে ‘আদার কন্সসালটেন্স’ এর সংস্থান রেখে সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে।

অনুমোদিত ‘পিএফএসে’ কিছু ব্যয়ের ক্ষেত্রে কয়েকটি অর্থনৈতিক কোডের ব্যয় একীভূত করা ছিল। সংশোধনী প্রস্তাবে ব্যয়গুলো আলাদা করা হয়েছে। এতে প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ে অধিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। তিনি আরও বলেন, ‘অনুমোদিত পিএফএসের অর্থনৈতিক কোড-৩২৫৭১০১ এর অধীনে পরামর্শকের ব্যয়ের বিভাজনে সার্পোটিং স্টাফ, লজিস্টিক ও অন্য কনসালটেন্টদের আন্তর্জাতিক ও দেশ ভ্রমণের জন্য পরিবহন ব্যয় কমানো হয়েছে। আয়কর ও ভ্যাটের পরিমাণ আগের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে। কেননা আগের অনুমোদিত আয়কর ও ভ্যাটের পরিমাণ অপ্রতুল ছিল।

বিজ্ঞাপন

সভায় পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের প্রতিনিধি বলেন, ‘পরামর্শকদের মধ্যে নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশিদের প্রকল্পে কাজ করার সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। যাতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অর্জিত অভিজ্ঞতার জন্য তারা দেশে কাজ করতে পারে।’

সভার সভাপতি রেল সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘ভবিষ্যতে অন্য প্রকল্পের ক্ষেত্রে এটি বিবেচনা করা যেতে পারে।’

ভৌত অবকাঠামো বিভাগের প্রতিনিধি বর্তমানে পরামর্শক ফার্ম নিয়োগ কোন পর্যায়ে রয়েছে জানতে চাইলে এর জবাবে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান বলেন, ‘পরামর্শক সেবা কেনার প্রস্তাবটি (এসডি-১) শর্তসাপেক্ষে অনুমোদিত হয়েছে। শর্ত ছিল প্রকল্পের অনুমোদিত পিএফএস সংশোধন করে দেশীয় পরামর্শকের পরিবর্তে আদার কনসালটেন্স করতে হবে।’

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘প্রকল্পে ৪ জন আন্তর্জাতিক পরামর্শক ও ১২ জন দেশিয় পরামর্শকের সংস্থান ছিল। সংশোধিত পিএসএসে দেশি পরামর্শকের পরিবর্তে অন্য পরামর্শকের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে প্রকল্পের ব্যয় ও বাস্তবায়ন মেয়াদ অপরিবর্তিত রয়েছে।’

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- নারায়ণগঞ্জ হতে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম এবং টঙ্গী হতে জয়দেবপুর পর্যন্ত বিদ্যমান রেলপথে বৈদ্যুতিক ট্রেন পরিচালনার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করা। ট্রেন পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় বিশদ ড্রইং ও ডিজাইন প্রণয়ণ এবং প্রকল্পের জন্য প্রাক্কলন, টেন্ডার ডকুমেন্ট ও ডিপিপি প্রণয়ন ও ভূমি অধিগ্রগণ পরিকল্পনা প্রণয়ন।

সারাবাংলা/জেজে/এমও

পরামর্শক রেলওয়ে সাব-স্টেশন নির্মাণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর